হেরেও চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ


প্রকাশিত: ০৯:৫০ পিএম, ০৩ মে ২০১৬

আলিয়াঞ্জ এরিনার নব্বই মিনিট কোনোমতে টিকে থাকতে পারলেই আরো একবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনাল। দলে নেই কোনো তারকা ফুটবলার। নেই কোনো খ্যাতনামা কোচ; কিন্তু যিনি আছেন তিনি যে অন্যদের থেকেও সেরা! বায়ার্ন মিউনিখের মাঠে তাদের কাছে ২-১ গোলে হেরেও চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে উঠে গেল দিয়েগো সিমিওনের অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ।

আক্রমণের পসরা সাজিয়ে বসা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের দ্বিতীয় লেগের ম্যাচটি যেন ফুটবল পাগলদের জন্য এক রোমাঞ্চকর ম্যাচ ছিল। প্রতি মুহূর্তেই যেন ম্যাচের রঙ পাল্টানোর সমূহ সম্ভাবনা দেখা গিয়েছিল। প্রথম লেগে ১-০ গোলে জিতে আগে থেকে ফাইনালে এক পা দিয়ে রেখেছিল অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ; কিন্তু দলটা বায়ার্ন মিউনিখ বলেই একটু বেশি চিন্তিত ছিলেন দিয়েগো সিমিওনে। সব চিন্তাকে ধূলিস্মাৎ করে আলিয়াঞ্জ এরিনায় উড়ালেন অ্যাটলেটিকোর বিজয় মশাল।

ম্যাচের শুরু থেকে বল দখলে এগিয়ে থেকে খেলতে থাকে বায়ার্ন মিউনিখ। ম্যাচের ১২ মিনিটেই লেভেন্ডোস্কির হেড বারের উপর দিয়ে চলে গেলে গোল বঞ্চিত হয় বায়ার্ন। ৩১ মিনিটে ডি বক্সের বাইরে ডেভিড আলাবাকে অ্যাটলেটিকোর আগুস্তো ফার্নান্দেজ ফাউল করে ফ্রি কিক পায় বাভারিয়ানরা। ফ্রি কিক থেকে গোল করে ম্যাচে ফিরিয়ে আনেন জাভি আলোন্সো।

দুই লেগ মিলিয়ে খেলায় তখন ১-১ সমতা। নির্ধারিত সময়ের খেলা এমন অবস্থায় থাকলে খেলা গড়াবে অতিরিক্ত সময়ে। এতকিছু চিন্তার মাঝেই ৩৪ মিনিটে পেনাল্টি পায় বায়ার্ন। জাভি মার্টিনেজকে অবৈধভাবে ফাউল করেন অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের ডিফেন্ডার হোসে হেমিনেজ। রেফারি পেনাল্টি বাঁশি বাজালেও সেই পেনাল্টি থেকে গোল আদায় করে নিতে পারেননি থমাস মুলার। ইয়ান অবলাকের অসাধারণ দক্ষতায় পেনাল্টি মিস করেন মুলার। প্রথমার্ধের বাকি সময়টুকু বল নিজেদের দখলে নিয়েও বলার মতো কোনো আক্রমণ করতে পারেনি বায়ার্ন।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই যেন খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসতে থাকে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। ৪৬ মিনিটে আগুস্তোর পরিবর্তে কারাস্কাকোকে নামান সিমিওনে। যার ফলও আসে কিছুক্ষণের মধ্যে। মাঝ মাঠের একটু সামনে থেকে ফার্নান্দো তোরেসের ডিফেন্স চেরা পাসে গোলকিপারকে একা পেয়ে যান ফ্রেঞ্চ স্ট্রাইকার গ্রিজম্যান। কিন্তু `চীনের প্রাচীর` খ্যাত নুয়ারকে বোকা বানাতে সময় নেননি গ্রিজম্যান।

৫৪ মিনিটে গোল করে ম্যাচে ১-১ গোলে সমতা নিয়ে আসেন এই ফ্রেঞ্চম্যান। বায়ার্নকে তখন ফাইনালে যেতে হলে করতে হবে আরো দু গোল। হাতে সময় রয়েছে মাত্র ৩৬ মিনিট! ৬৭ মিনিটে জাভি আলোন্সোর আরো একটি দূরপাল্লার শট রুখে দেন অবলাক। তার ঠিক চার মিনিট পরেই লেভেন্ডোস্কির শট ঠেকিয়ে অ্যাটলেটিকোর ফাইনালের আশা বাঁচিয়ে রাখেন অবলাক।

৭৩ মিনিটে ডগলাস কস্তার পরিবর্তে কিন্সলে কোম্যান নামলেই ম্যাচের মোড় পাল্টে যেতে শুরু করে। ৭৪ মিনিটে আর্তুরো ভিদালের হেডে নিজের মাথায় ছুঁইয়ে দলের দ্বিতীয় গোলটি করেন লেভেন্ডোস্কি। কিন্তু তাতেও যে শেষ রক্ষা হয়নি বায়ার্নের। কেননা ফাইনালে যাওয়ার জন্য তাদের চাই আরো এক গোল। ৮৪ মিনিটে একটি বিক্ষিপ্ত আক্রমণ থেকে পেনাল্টি আদায় করে নেন ফার্নান্দো তোরেস।

জাভি মার্টিনেজ ডিবক্সের বাইরে ফাউল করলেও রেফারি সেটা পেনাল্টি সিদ্ধান্ত দেন। কিন্তু তোরেসও পারলেন না পেনাল্টি থেকে গোল করতে। ম্যানুয়েল নুয়্যার রুখে দেন তোরেসের পেনাল্টি।  শেষের দিকে আরো কয়েকটি আক্রমণ করলেও অবলাকের অসাধারণ দক্ষতায় সব আক্রমণই ব্যর্থ হয় বায়ার্নের। ফলে দিয়েগো সিমিওনের অধীনে দ্বিতীয়বারের মত  ফাইনালে ওঠে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। আজ চ্যাম্পিয়ন্স লিগের দ্বিতীয় সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগে রিয়াল মাদ্রিদের মুখোমুখি হবে ম্যানচেস্টার সিটি।

আরআর/আইএইচএস/বিএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।