সাকিবকে নিয়ে গুরু ফাহিম

‘বাইরের কোন কিছুই বোলিংয়ের সময় মাথায় আনে না সে’

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৯:০০ পিএম, ২৫ আগস্ট ২০২৪

তিনি দোষী-না নির্দোষ? তা প্রমাণ হবে আদালতে। তবে এ মুহূর্তে তিনি মামলার আসামী । তাও হত্যা মামলায়। মাথায় বিরাট চাপ। এদিকে চার্জশিট বের হওয়ার আগেই তার নামে লিগ্যাল নোটিশ দেয়া হয়েছে। বিসিবিকে বলা হয়েছে, তাকে অপসারণ করে দেশে ফিরিয়ে আনতে। সব মিলিয়ে অনেক বড় এক মানসিক চাপ।

এত মনস্তাত্বিক চাপ নিয়ে টেস্ট খেলা এবং শেষ দিন বল হাতে দারুণ নৈপুণ্য দেখিয়ে দলের জয়ে অগ্রণী ভূমিকা রাখা। আজ রোববার রাওয়ালপিন্ডি আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে বল হাতে সে কারিশমায়ই দেখিয়েছেন সাকিব আল হাসান।

কোনো সন্দেহ নেই, মুশফিকুর রহিমের ১৯১ রানের লড়াকু ও সংগ্রামী ইনিংসের পরও আজ সকাল থেকে দুই স্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজ ও সাকিব আল হাসানের এমন স্পিনঘূর্নি ছাড়া জেতা কঠিন ছিল বাংলাদেশের। উইকেট প্রাপ্তিতে মিরাজ (১১.২-২-২১-৪), সাকিবের (১৭-৩-৪৪-৩) চেয়ে ওপরে থাকলেও সাকিব লম্বা স্পেলে বল করে পাকিস্তানীদের ওপর পুরো চাপ প্রতিষ্ঠা করে রাখেন।

একটানা ১৭ ওভার বোলিং করেন সাকিব। রান করা থেকে পাকিস্তানিদের দুরে রাখার পাশাপাশি উইকেট শিকারের কাজটিও করেছেন দক্ষতার সাথে। তার এই দুর্দান্ত এবং একটানা সোয়া ঘন্টা বোলিং করা দেখে সবাই অবাক।

সাকিবের গুরু, মেন্টর, প্রশিক্ষক এবং বর্তমানে বিসিবি পরিচালক নাজমুল আবেদিন ফাহিম অকপটে স্বীকার করেছেন, ‘সাকিব আসলে ভিন্ন ধাতুতে গড়া এবং মাঠের সাকিব পুরোপুরি ভিন্ন মানসিকতার।’

মাথায় মার্ডার কেসের বিরাট চাপ নিয়েও সাকিব কিভাবে এত ভাল বোলিং করতে পারলেন, তাও একটানা ১৭ ওভার? এ প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে ফাহিম বলেন, ‘চাপতো ডেফিনেটলি আছে এবং ছিল তার ওপর। তবে সাকিব যখন বল হাতে বোলিং করার প্রস্তুতি নেয়, রানআপের শেষ প্রান্তে গিয়ে দৌড় শুরু করে তখন, মনে হয় সে সব কিছু ভুলে যায়। তখন বল আর ব্যাটার ছাড়া সব কিছু সামনে থাকে না। আর কিছু ভাবেও না। যখন বল হাতে নেয় মনে হয় না, তখন সে অন্য কিছু ভাবে। এটা তার অনেক বড় শক্তির জায়গা। এটাই সাকিবের বৈশিষ্ট্য। এটাই তার বিশেষ গুণ, বড় শক্তি। মাঠের ভেতরে সে বাইরের কোন কিছু নিয়ে মাথা ঘামায় না।’

ফাহিম যোগ করেন, ‘অনেক সমস্যা, জটিলতা থাকে মানুষের জীবনে। কিন্তু একজন আদর্শ ক্রীড়াবীদ, একজন প্রকৃত অ্যাথলেট সেই, যিনি মাঠের বাইরের সমস্যা, জটিলতা, নেতিবাচকতা এবং দুর্বলতা ও ঘাটতিগুলো বাইরেই রেখে আসে। সাকিব সেই জাতির একজন। নাহলে নিজের সেরা পারফরমেন্স দেয়া সম্ভব না। সেটা সাকিবের আছে বলেই সে নানা ধরনের প্রতিকূলতা, জটিলতা অতিক্রম করে মাঠে ভাল খেলতে পারে।’

এ ম্যাচ দেখার পর ফাহিমের মনে হয়, সাকিবের এখনো অনেক কিছু দেয়ার সামর্থ্য আছে। তিনি বলেন, ‘নাহ! অবশ্যই সামর্থ্য রাখে। ও (সাকিব) যেটা বললো যে, সে সব টেস্ট খেলতে চায়, সে টেস্টে ভাল বল ভাল খেলতে চায় বলেই এমন বলেছে। আজকে যেভাবে বোলিং করলো, বড় বড় স্পেলে বল করলো, উইকেট নেয়ার জন্য বল করলো। বাকি বোলারদের সাথে কথা বললো। বোঝাই গেল, সে দলের সাথে কতটা ইনভলব।’

এআরবি/আইএইচএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।