অভিযোগ সাবেক শ্যুটারদের
‘দুর্নীতিবাজ মহাসচিব অপু পালালেও বহাল তবিয়তে তার সাঙ্গপাঙ্গরা’
বাংলাদেশ শ্যুটিং স্পোর্ট ফেডারেশনের বর্তমান কমিটি বিলুপ্ত করে নতুন নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন সাবেক শ্যুটাররা। ‘ক্রীড়াপ্রেমী শ্যুটিং সংগঠক’- এর ব্যানারে বুধবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনী মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে এ দাবি জানিয়েছেন তারা।
সাবেক তারকা সাইফুল আলম রিংকি ও সাবরিনা সুলতানা, জিএম হায়দার, সাবেক কোষাধ্যক্ষ কায়সারুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি আবদুস সালাম খান, সাবেক সদস্য গাজী সাইফুল তারেকসহ শুটিং সংশ্লিষ্ট আরও অনেকেই উপস্থিত ছিলেন সংবাদ সম্মেলনে।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, ‘বাংলাদেশ শুটিং স্পোর্ট ফেডারেশনের মহাসচিব ইন্তেখাবুল হামিদ অপুর হাতে ফেডারেশনের সব ক্ষমতা। গুটি কয়েকজন সহযোগীকে নিয়ে তিনি পুরো খেলাটাকেই জিম্মি করে রেখেছেন। বিদেশ থেকে নিয়মবহির্ভুতভাবে এয়ার রাইফেল নিয়ে এসে বিক্রি করা, ফেডারেশনে বড় হল রুমের ভাড়া বাবদ টাকার নয়-ছয়সহ, অনেক প্রতিভাবান খেলোয়াড় ও সাবেক খেলোয়াড়কে বঞ্চিত ও লাঞ্ছিতও করেছেন। এসব অকর্মের সুনির্দিষ্ট প্রমাণও আছে।’
ফেডারেশনের সাবেক কোষাধ্যক্ষ কায়সারুল ইসলাম বলেন, ‘নির্বাচিত কমিটি ভেঙে আমাদের বের করে দেওয়া হয়েছে। আমরা বা আমাদের পূর্ববর্তী সময়ে যারা ছিলেন, সেই সময়ে শুটিংয়ে আমাদের অর্জন অনেক ভালো ছিল। শুটিংয়ের সঙ্গে যারা সরাসরি সম্পৃক্ত তারা বলতে পারবেন, তাদের সময়ের স্কোর আর এখনকার স্কোরের কি অবস্থা।’
কমনওয়েলথ শুটিং ও সাফ গেমসে স্বর্ণপদকজয়ী শুটার সাবরিনা সুলতানা বলেন, ‘আমরা রাজনীতিমুক্ত ক্রীড়াঙ্গন চাই। সে সঙ্গে খেলোয়াড়েরা যেন শঙ্কাহীন পরিবেশে অনুশীলন ও পারফর্ম করতে পারে, সেটি চাই। একই সঙ্গে চাই দুর্নীতিমুক্ত ক্রীড়াঙ্গন।’
এসএ গেমসে সোনাজয়ী আরেক শুটার সাইফুল আলম রিংকি বলেন, ‘বাংলাদেশ শুটিংয়ে সবশেষ সাফ গেমসে স্বর্ণ জিতেছে ২০১৬ সালে, আমার কোচিংয়ে। আমরা যারা দেশের জন্য সম্মান বয়ে এনেছি, তাদেরকে সুযোগই দেওয়া হচ্ছে না। আমরা কি বিদেশে চলে যেতে পারতাম না? শুধু দেশের মায়ায় পড়ে আছি। কিন্তু আমাদের তো বঞ্চিত করে রাখা হয়েছে।’
সাবেক শ্যুটারদের অভিযোগ, ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর শুটিং ফেডারেশনের দুর্নীতিবাজ মহাসচিব পালিয়ে গেছেন। কিন্তু বর্তমানে মহাসচিবের সাঙ্গ-পঙ্গরা ফেডারেশনে রয়ে গেছেন এবং তার কথামতোই সব পরিচালনা করছেন। আওয়ামী লীগ সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর ভাই শুটিং ফেডারেশনের মহাসচিব। ভাইয়ের প্রভাব খাটিয়েই এতোটা প্রতাপশালী হয়ে উঠেছিলেন অপু।
সাবেক শ্যুটার জিএম হায়দার বলেন, ‘বর্তমান শ্যুটার যারা আছেন, তাদের মাথাতে ঢুকানো হয়েছে অন্য কমিটি আসলে তাদেরকে রাখা হবে না। তাই তারা খুব আতঙ্কের মধ্যে থাকেন। এই আতঙ্কের কারণেই তারা ভালো পারফরম্যান্সও করতে পারে না। সবার আগে চাচ্ছি, চলমান ক্যাম্প বন্ধ হোক। কমিটি ভেঙে একটি অ্যাডহক কমিটি হোক। যারা এসে নির্বাচন দেবে। দাবি মানা না হলে মানববন্ধন ও অন্তর্বর্তী সরকারের ক্রীড়া উপদেষ্টার কাছে যাবো।’
আরআই/আইএইচএস/