নির্বাচনের আগে নিরাপত্তাহীনতায় সালাউদ্দিন


প্রকাশিত: ০৩:৫০ পিএম, ২৭ এপ্রিল ২০১৬

বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) নির্বাচনের বাকি আর খুব বেশি নেই। ৩০ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বাফুফের জমজমাট নির্বাচনটি। সময় যত ঘনিয়ে আসছে, তত বাড়ছে বাফুফে নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তার মাত্রা। নানা নাটকীয়তাও তৈরী হচ্ছে একের পর এক। তাতে পরিবেশ-পরিস্থিতিও উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। এমনকি গুঞ্জন চলছে, নির্বাচনকে ঘিরে চলছে কাঁড়ি কাঁড়ি অর্থের লেনদেন।

তবে অর্থ লেনদেনের গুঞ্জন শোনা গেলেও, এবার নির্বাচনে নতুন করে যোগ হযেছে ‘রাজনীতি আর ভয়ভীতির’খেলা। যে কারণে বাফুফের বর্তমান সভাপতি এবং আসন্ন নির্বাচনে সভাপতি প্রার্থী কাজী মো. সালাউদ্দিন নিজেই বলেছেন, তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। যে কারণে বাতিল করা হয়েছে আজ রাতে হোটেল পূর্বানীতে তার নেতৃত্বাধীন সম্মিলিত পরিষদের প্যানেল পরিচিতি অনুষ্ঠান। কাজী সালাউদ্দিনই যখন নিরাপত্তা বিষয়ে অভিযোগ তুলেছেন, তখন নির্বাচন নিয়ে পরিস্থিতি হয়ে উঠেছে থমথমে। জানা গেছে, এই বিষয়টি ফুটবলের দুই নিয়ন্ত্রক সংস্থা এএফসি এবং ফিফাকেও চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে।

নির্বাচনের বাকি আর ৩ দিন। চার সভাপতি প্রার্থীর দুইজন ইতিমধ্যে সরে দাঁড়িয়েছেন নির্বাচনী ময়দান থেকে। কয়েক দিন আগে নুরুল ইসলাম নুরু সরে দাঁড়িয়েছেন কামরুল আশরাফ খানকে সমর্থন দিয়ে। আজ (বুধবার) গোলাম রাব্বানী হেলাল সরে দাঁড়িয়েছেন কাজী মো. সালাউদ্দিনকে সমর্থন দিয়ে। ব্যালটে চারজন সভাপতি প্রার্থীর নাম থাকলেও ভোটের লড়াইয়ে আছেন শুধু গত ৮ বছর ধরে বাফুফের সভাপতি দায়িত্ব পালন করা কাজী মো. সালাউদ্দিন এবং ক্রীড়াঙ্গনে নতুন মুখ কামরুল আশরাফ খান। ৩০ এপ্রিলি ১৩৪ জন কাউন্সিলর ভোট দিয়ে ঠিক করবেন পরবর্তী চার বছরের জন্য কে বসছেন দেশের ফুটবলের বড় চেয়ারে।

তবে কাজী সালাউদ্দিন যখন নিরাপত্তাহীনতার কথা বলার পর পরিস্থিতি পাল্টাতে শুরু করেছে। আজ (বুধবার) বিকেলে বাফুফে ভবনে নিজ কার্যালয়ে কাজী মোহাম্মদ সালাউদ্দিন মিডিয়াকে বলেছেন, ‘আমাকে কোথাও একা না যাওয়ার কথা বলা হচ্ছে। নিরাপত্তাহীনতার কারণে আজ সন্ধ্যা সাতটায় পূর্বাণি হোটেলে অনুষ্ঠিতব্য প্যানেলের আলোচনা সভা স্থগিত করেছি।’

আজ সকাল থেকেই বাফুফে ভবনে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছিল। বিশেষ করে দেশের নিরাপত্তা বিষয়ক একটি সংস্থার কাছে থেকে কাজী সালাহউদ্দীনের প্যানেলের সদস্যরা ফোনকল পাচ্ছেন- এমন কথা শোনা যাচ্ছিল। প্যানেলের সদস্যদের মুখেও দেখা গেছে আতঙ্কের ছাপ। শেষ পর্যন্ত প্যানেল পরিচিতি অনুষ্ঠান বাতিল করতে বাধ্য হলেন কাজী সালাউদ্দিন।

প্যানেল পরিচিতি অনুষ্ঠান বাতিল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমি চাই না দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে সংগঠকরা এ সভার উদ্দেশ্যে ঢাকায় এসে কোনও ঝামেলায় পড়ুক। আমার মেয়াদকালে এই গত সাত- আট বছরে এমনটা হয়নি। কয়েকদিন আগেও আমিও এরকম কল পেয়েছি। আমাকে বলা হয়েছে, যেন একা ঘোরাফেরা না করি। যখন চট্টগ্রামে গেলাম তখন বলা হলো, সাবধানে থাকতে। এ ধরণের ঘটনা নজিরবিহীন। হোটেল কর্তৃপক্ষও আমার নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। তাই তারা সেখানে অনুষ্ঠানটি আয়োজন করতে চায়নি। বিভিন্ন মহল থেকে আমাকে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর হুমকি দেয়া হচ্ছে। তবে যে করেই হোক আমি নির্বাচনে অংশ নেব।’

কাজী সালাউদ্দিন আরও জানান-ফিফা ও এএফসি আমাদের এ বিষয়টি মনিটরিং করছে। আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) ফিফা ও এএফসির প্রতিনিধি ঢাকায় আসবেন। তার আগমনের আগে এ ধরণের পরিস্থিতি কাম্য নয়। এএফসি থেকে বাফুফেতে ফোন করে খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে। তারা জিজ্ঞাসা করছেন আমাদের এখানে কী অবস্থা। আমাদের পক্ষ থেকে এখানে কোনও সমস্যা নেই বলেই জানানো হয়েছে। আমি মনে করি না এখন পর্যন্ত ৩০ এপ্রিলের নির্বাচন নিয়ে কোনও সমস্যা আছে। তবে এ পরিস্থিতি যদি অব্যাহত থাকে এবং ডেলিগটরা যদি হুমকির মুখে থাকেন তবে কী অবস্থা দাঁড়ায় তা বলা যাচ্ছে না।’

আইএইচএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।