মন্ত্রী যা ভেবেছিলেন তার ৫ ভাগ চাহিদাও নেই ফেডারেশনগুলোর

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৯:৫৯ পিএম, ২৩ জানুয়ারি ২০২৪

যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পর মঙ্গলবার থেকে ফেডারেশনগুলোর সঙ্গে বসে তাদের অবস্থান জানতে শুরু করেছেন নাজমুল হাসান পাপন এমপি। প্রথম দিনে তিনি ডেকেছিলেন ৯ ফেডারেশন ও বাংলাদেশ মহিলা ক্রীড়া সংস্থাকে।

এর মধ্যে টেবিল টেনিস অন্য একদিন বসবে বলে মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়ে আগেই জানিয়েছিল। তাই এই আলোচনায় ছিল সাঁতার, অ্যাথলেটিক্স, শ্যুটিং, আরচারি, ভারোত্তোলন, ক্যারম, বাস্কেটবল, ভলিবল ফেডারেশন ও মহিলা ক্রীড়া সংস্থা।

দুপুর আড়াইটা থেকে শুরু হওয়া ফেডারেশনগুলোর সঙ্গে মন্ত্রীর এই আলোচনা চলেছে প্রায় দেড় ঘণ্টা। ফেডারেশনগুলোর সঙ্গে আলোচনা শেষে মন্ত্রী মুখোমুখি হয়েছিল গণমাধ্যমের।

বাংলাদেশের ফেডারেশন ও অ্যাসোসিয়েশনগুলোর মধ্যে ক্রিকেট ও ফুটবল ছাড়া বাকিদের আর্থিক অবস্থা বেশি ভালো না। তাই স্বাভাকিবভাবেই নতুন মন্ত্রীর সঙ্গে প্রথম বৈঠকে ওই ফেডারেশনগুলো তাদের বিশাল চাহিদার কথা বলবে। মন্ত্রী নিজেও তেমন ভেবে সভায় উপস্থিত হয়েছিলেন; কিন্তু মন্ত্রীর ভাবনার চেয়ে ফেডারেশনগুলোর চাহিদা অনেক কম।

defaration

‘আজকে যে ফেডারেশনগুলোর সঙ্গে বসলাম সেগুলোর মধ্যে দুটি ফেডারেশন শ্যুটিং ও আরচারি কমপ্লেক্স চেয়েছে। আমি আসলে ওদের কাছে জানতে চেয়েছিলাম তাদের বর্তমান অবস্থা। ওদের বাজেট কতো এবং কি ধরণের সুযোগ-সুবিধা দরকার। একটা ফেডারেশন থেকে বলেছে, তাদের একটা জায়গা দরকার। সেটা একটু কঠিন। কারণ, আমি না জেনে বলতে পারবো না জায়গা কোথায় দেবো। বিসিবি পূর্বাচলে শেখ হাসিনার নামে যে স্টেডিয়াম সেখানে ৫টি ফেডারেশনকে জায়গা করে দেওয়া হবে এবং তা বিসিবিই সম্পূর্ণভাবে তৈরি করে দেবে।
বাকি ফেডারেশনগুলোর যে চাহিদা তা আমার ধারণার চেয়ে অনেক কম। আমি যা ভেবেছিলাম তার ৫ ভাগও না। আমার মনে হয়েছে, ওদের যে চাহিদা তা পূরণ করা কঠিন কিছু না’- বলেছেন ক্রীড়ামন্ত্রী নাজমুল হাসান পাপন এমপি।

বাস্কেটবলের কোর্ট নেই কয়েক বছর। ফেডারেশনের নিজস্ব অফিসও নেই। এই বিষয়টি পাপন বিশেষভাবে বলেন, ‘বাস্কেটবলের একটা সমস্যা ছিল। সেটা সমাধানের পথে। আবাহনী কমপ্লেক্সে তাদের কোর্ট থাকবে। সেটা তাদেরই থাকবে। ফেডারেশনের সঙ্গে সামঞ্জস্য করেই ক্লাব ব্যবহার করবে।’

ক্রিকেট বোর্ড জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের কাছ থেকে আর্থিক সাহায্য নেয় না। এছাড়া বাকি সব ফেডারেশনই জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের অনুদানের মুখাপেক্ষী। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের বাজেট হয় সরকারি জাতীয় বাজেটের মাধ্যমে। ক্রীড়াঙ্গনে এক দশকের বেশি সময় কাটানো নাজমুল হাসান পাপনের সেটিও জানা,‘আমি আসলে আর্থিক বিষয়টি কম বলছি ক্রিকেটের সঙ্গে তুলনা করে। তাই বলে একেবারে কমও নয়। বর্তমান বাজেটে হয়তো এগুলো বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। আগামী বাজেটে অবশ্যই এগুলো সংস্থান করার চেষ্টা করব। ’

যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের বাজেট ১৩০০ কোটি টাকার মতো। সরকারি নিয়মে একটি মন্ত্রণালয়ের বাজেট একটি নির্দিষ্ট শতাংশের উপর বৃদ্ধি করা যায় না। এই বিষয়টি স্মরণ করে নতুন মন্ত্রী বলেন,‘সরকারী বাজেটের মাধ্যমে সবকিছু সংস্থান না হলে বাইরের পৃষ্ঠপোষকতার মাধ্যমে সেগুলো পূরণ করব। তাদের যে চাহিদাগুলো সেগুলো পূরণ হওয়ার মতো।’

সহায়তা প্রদান করেই নতুন মন্ত্রী ক্ষান্ত হবেন না। এর সঠিক নজরদারিও করবেন। তাই ফেডারেশনগুলোর সঙ্গে প্রথম সভার পরই জোর দিয়ে বলেছেন, ‘অবশ্যই কড়ায়-গন্ডায় হিসাব নিব। যাদের সহযোগিতা করা হবে তাদের মনিটরিংয়ের আওতায় রাখা হবে।’

সাঁতার ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এমবি সাইফ নতুন মন্ত্রীর সঙ্গে প্রথম বৈঠক শেষে আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘আমরা সাঁতারের সমস্যাগুলো সুনির্দিষ্টভাবে তুলে ধরেছি। মন্ত্রী মহোদয় বেশ গুরুত্ব সহকারেই নিয়েছেন। পরবর্তীতে তিনি আমাদের সঙ্গে আবার বসবেন। আশা করি সাঁতারে পরিবর্তন আসবে।’

ভারোত্তোলন ফেডারেশনের সহসভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ ক্রীড়াঙ্গনের প্রবীণ সংগঠক। তিনি মনে করেন,‘বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন অনেক বড় আকারের। ক্রীড়াঙ্গনে অর্থ কোনো সমস্যা নয়, প্রয়োজন সঠিক ব্যবস্থাপনা ও পরিকল্পনা। নতুন মন্ত্রীর কথায় আমরা আশাবাদী।’

আগামীকাল দেশের অন্যতম শীর্ষ ফেডারেশন ফুটবল ও হকির সঙ্গে মত বিনিময় রয়েছে নতুন ক্রীড়ামন্ত্রীর। মঙ্গলবারের সভা জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে অনুষ্ঠিত হলেও বুধবার সভা হবে ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে।

আরআই/আইএইচএস/

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।