নানা কর্মসূচির মাধ্যমে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত


প্রকাশিত: ১১:৪০ এএম, ১৪ ডিসেম্বর ২০১৪

নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে সারাদেশে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে রোববার সকালে কালো পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করণ, শহীদদের স্মরণে নির্মিত স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ, আলোচনা সভা, শহীদদের স্মরণে মোমবাতি প্রজ্জলন, শোক র‌্যালি, শ্রদ্ধা নিবেদন, মিলাদ ও দোয়া মাহফিলসহ বিভিন্ন কর্মসূচির পালন করা হয়।

১৯৭১ সালের এই দিনে চুড়ান্ত বিজয়ের মাত্র দু`দিন আগে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা পরিকল্পিতভাবে দেশের কৃতী সন্তানদের হত্যা করে। তারপর থেকে দিনটি শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।

শহীদ বুদ্ধিজীবীদের শ্রদ্ধা জানাতে সকালে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে সর্বস্তরের মানুষের ঢল নেমেছিল। ভোরের সূর্য ওঠার আগেই হাজারো মানুষ ভিড় করেন মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধের সামনে। সবার হাতে ফুলের তোড়া, কালো ব্যানারে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে লেখা ‘বুদ্ধিজীবীর স্মরণে ভয় করিনা মরনে’ বুদ্ধিজীবীদের রক্ত বৃথা যেত দেব না’ ‘জামায়াত-শিবির-রাজাকার এই মুহুর্তে বাংলা ছাড়’।

সকাল ৮টা ৫ মিনিটে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। পরে শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের নেতাদের সাথে নিয়ে দলের পক্ষে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

এ সময় আওয়ামী লীগ উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ ও সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, সভাপতিমন্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, যুগ্ম সাধরণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আসীম কুমার উকিল প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ধানমন্ডিস্থ ৩২ নম্বর ভবনের সামনে রক্ষিত জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

পরে জাতীয় পার্টি চেয়ারাম্যান হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদ, জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী এবং ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া শহীদ বেদীতে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ ত্যাগ করার পর স্মৃতিস্তম্ভ সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য খুলে দেওয়া হয়। বিরোধীদলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদের পক্ষে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন জাপার সংসদ সদস্য নোমান মিয়া, সেলিম উদ্দিন। পরে একে একে শহীদ বেদীতে শ্রদ্ধা জানায় কেন্দ্রীয় ১৪ দল, শহীদ পরিবারের সন্তান ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা।

অন্যদিকে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে শহীদ বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এ সময় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, ড. মঈন খানসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

রাশেদ খান মেননের নেতৃত্বে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির, হাসানুল হক ইনুর নেতৃত্বে জাসদ ও দিলীপ বড়ুয়ার নেতৃত্বে সাম্যবাদী দল বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানান। পরে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগ, ছাত্রলীগ ও বিভিন্ন শাখার পক্ষ থেকে বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।

এরপর বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানানো হয়। একে একে শ্রদ্ধা নিবেদন করে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বঙ্গবন্ধু পরিষদ, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মী।

এদিকে বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রায়ের বাজারের বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধে সকালে মানুষের ঢল নামে। একাত্তরের ঘাতক রাজাকার, আলবদর যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে স্লোগান দিয়ে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে স্মৃতিস্তম্ভের বেদিমূলে যাওয়ার অপেক্ষায় ছিলেন তারা দীর্ঘক্ষণ। শ্রদ্ধা নিবেদনের সময়ে সবার দাবী ছিল যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দ্রুত শেষ করা, জাতি আর এ কলঙ্ক বহন করতে চায় না।

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।