চ্যালেঞ্জ নিয়েই ভারতের মুখোমুখি বাংলাদেশ


প্রকাশিত: ০৪:৩০ পিএম, ২২ মার্চ ২০১৬

টানা দুই ম্যাচ হেরে কোণঠাসা বাংলাদেশ। গাণিতিকভাবে থাকলেও কার্যত শেষ হয়ে গেছে বাংলাদেশের সেমিফাইনালে খেলার স্বপ্ন। শেষ চারে যেতে হলে অনেক বড় চ্যালেঞ্জ জয় করতে হবে টাইগারদের। সে চ্যালেঞ্জ উতরাতে প্রতিপক্ষ শক্তিশালী ভারত। আবার তাদের ঘরের মাঠেই খেলা। তার উপর দলের সেরা দুই বোলারকে হারিয়ে মানসিকভাবে ভেঙে পড়া টাইগারদের ইনফর্ম ব্যাটসম্যান তামিমও অসুস্থ। এ যেন মরার উপর খাঁড়ার ঘাঁ। এমন নানা প্রতিকূলতা নিয়েই আগামীকাল ব্যাঙ্গালুরুর এম চিন্নাস্বামি স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় রাত আটটায় ভারতের মোকাবেলা করবে বাংলাদেশ।

পাকিস্তানের বিপক্ষে বোলিং ভালো করতে পারেনি বাংলাদেশ। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বোলিং মান সম্পন্ন হলেও ফিল্ডিংয়ে দুর্বলতা ছিল চোখে পড়ার মত। একের পর এক ফিল্ডিং মিসের পর ছেড়েছেন একাধিক সহজ ক্যাচ। অনেকেই বলছেন ম্যাচের আগে তাসকিন আহমেদ ও আরাফাত সানিকে হারানোর ধাক্কাটা সামলে উঠতে পারেনি বলে মাঠে ফিল্ডিং ছিল ছন্নছাড়া। আর তার ফলাফল হিসাবে সেমিফাইনালের পথ অনেক কঠিন করে ফেলেছে বাংলাদেশ। কিন্তু তারপরও সবদিক দিয়ে দিশেহারা বাংলাদেশ, সেমির আশা বাচিঁয়ে রাখতেই টিম ইন্ডিয়ার মুখোমুখি হচ্ছে।

অথচ এশিয়া কাপের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে আত্মবিশ্বাসের ভান্ডারটা ভরপুরই ছিলো বাংলাদেশের। বিশ্বকাপের বাছাই পর্বে দাপট দেখিয়েই মূলপর্ব নিশ্চিত করে সে ধারা ধরে রেখেছিল তারা; কিন্তু হঠাৎ করেই দুটি ধাক্কায় কেমন যেন সব এলোমেলো হয়ে গেল। ২০১৫-এর ১৯ মার্চের পর ২০১৬-এর ১৯ মার্চও স্তব্ধ করে দেয় বাংলাদেশকে। সেবার মেলবোর্নে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে আম্পায়াররা তিনটি ভুল সিদ্ধান্ত দিয়ে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে দেয় টাইগারদের। এবার জয়ের মূলমন্ত্র টিম স্পিরিটটাই যেন কেড়ে নিয়েছে মোড়লদের অধিনস্ত আইসিসি। তবে নিজেদের ফিরে পেতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ মাশরাফিরা। একইসঙ্গে জয়ের জন্য মরিয়া বাংলাদেশের প্রথম টার্গেটই হারানো আত্মবিশ্বাস ফিরে পাওয়া।

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সামান্য ভুলে জয় হাতছাড়া করে বাংলাদেশ। এ হারে শেষ দুই ম্যাচ জয়ের পাশাপাশি রান রেট এবং অন্য দলগুলোর ফলাফলের দিকেও তাকিয়ে থাকতে হবে তাদের। সেমির পথের সমীকরণটা তাই বেশ কঠিন। এটা খুব ভালো করে জানেন টাইগাররা। এ প্রসঙ্গে দলের সেরা তারকা ও বিশ্ব সেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান বলেন, ‘গানিতিক হিসাবে আমাদের এখনও সেমিফাইনালে খেলা সম্ভব। আমি আশাবাদীও, শেষ চারে খেলব। আমাদের সেই সামর্থ্য আছে। তবে আমরা সবাই জানি এখন বাস্তবতা কি। এখান থেকে সেমিফাইনালে যাওয়া খুবই কঠিন। এর থেকে বড় কথা হচ্ছে, আমরা কালকের ম্যাচ নিয়েই শুধু চিন্তা করছি এই মুহূর্তে। এরপরই আমাদের পরবর্তী ম্যাচ নিয়ে চিন্তা করবো।’

সবদিক থেকে চাপে থাকা বাংলাদেশের ঠিক উল্টো অবস্থা ভারতের। প্রথম ম্যাচে বড় হারের পর ইডেনে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের বিপক্ষে জয় তুলে দারুণ ফুরফুরে মেজাজে রয়েছে তারা। সংবাদ সম্মেলনে তেমন ইঙ্গিতও দিলেন দলের অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি। বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচটাই তারা রান রেট বাড়িয়ে নিতে চাইছেন তিনি। এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘প্রথম খেলায় রান রেট কম ছিল। যদিও পরের ম্যাচে জিতেছি কিন্তু জয়ের সঙ্গে এখন আগামী ম্যাচে রান রেটের দিকেও নজর দেওয়া উচিত।’

মুখোমুখি লড়াইয়ে ভারতের চেয়ে দারুণ পিছিয়ে বাংলাদেশ। ওয়ানডে ম্যাচে ৫টি জয় থাকলেও টি-টোয়েন্টি ম্যাচে এখনও তাদের হারাতে পারেনি টাইগাররা। চারবারের মোকাবেলায় চারবারই হেরেছে তারা। তবে সাকিবরা জ্বলে উঠলে এ ইতিহাস বদলে দেয়া তেমন কঠিন কিছু নয় টাইগারদের জন্য। দলের ব্যাটসম্যানরা আত্মবিশ্বাস ফিরে পেয়েছেন। মুস্তাফিজ ফিরে আসায় ধার বেড়েছে বোলিংয়ে। ফিল্ডিংটা স্বাভাবিক রাখতে পারলে জোড় লড়াই হবে ব্যাঙ্গালুরুর মাঠে। আর টেস্ট স্ট্যাটাস পাবার পর এবারই প্রথম ভারতের মাটিতে খেলার সুযোগটা জয় দিয়েই স্মরণীয় করে রাখতে পারে মাশরাফিরা।

আরটি/আইএইচএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।