তামিমের ব্যাটিংয়ের পর মাশরাফির অসাধারণ নেতৃত্ব


প্রকাশিত: ০৩:১৫ পিএম, ০৯ মার্চ ২০১৬

বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই জয়। প্রথমেই বাংলাদেশ দলকে আমার পক্ষ থেকে অভিনন্দন। তামিম ইকবালের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের পর মাশরাফির অসাধারণ অধিনায়কত্বই আমি বলবো বাংলাদেশকে এই জয় এনে দিয়েছে। সে নিজেও বোলিংটা করেছে চমৎকার। সঙ্গে তাসকিন, সাকিব, আল-আমিরাও দারুন বোলিং করেছে।

বাংলাদেশ দলের জন্য ধর্মশালার আবহাওয়াটা ছিল সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। এখানকার যে আবহাওয়ার সাথে তারা পরিচিত, সেখানকার আবহাওয়া তার সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। একটা ওয়েদার থেকে আরেকটা ওয়েদারে গিয়ে, কোন প্র্যাকটিস ম্যাচ ছাড়াই খেলেছে তারা। সুতরাং, জয়টা খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল বাংলাদেশের জন্য। আমি আশা করবো পরবর্তী ম্যাচটা আমাদের আরও ভালো হবে।

সমূদ্রপৃষ্ঠ থেকে অনেক উুঁচুতে অবস্থিত ধর্মশালা। যে কারণে শুনলাম, ওখানে শ্বাস নিতে বেশ সমস্যা হচ্ছে খেলোয়াড়দের। গিয়েই পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেয়ার জন্য সময় পায়নি বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়রা। আমার মনে হয় আর দু’একদিন গেলে সেখানকার পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারবে তারা। উইকেটটাও আজ একটু স্লো ছিল। যেটা আমাদের স্পিনারদের জন্য প্লাস পয়েন্ট হয়েছে। তারা এই উইকেটে বোলিংটা ভালো করতে পেরেছে।

তবে ব্যাটিং নিয়ে আরেকটু কথা বলবো আমি। আমাদের ব্যাটসম্যানদের আরেকটু সতর্ক হওয়া উচিৎ ছিল। সাব্বির, মাহমুদুল্লাহ কিংবা সৌম্য সরকার- এরা এক একজন ৯ বল, ১৩, ১৫ বল করে খেলে বল-টু-বল রান করেছে। সেখান থেকে একজন দু’জন যদি ৪০-৪৫ রান করতে পারতো, তাহলে রানটা আমাদের অনেক ভালো হতে পারতো।

তবে তামিম অসাধারণ ব্যাটিং করেছে। যাকে বলে একেবারে দশে দশ। গতকালই বলেছিলাম, টপ থ্রি-ফোরের কেউ একজনও যদি লম্বা ইনিংস খেলতে পারে, তাহলে বাংলাদেশের সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যাবে। সেটা তামিম আজ করতে পেরেছে। স্ট্রাইক রেটটাও অনেক ভালো। ১৪৩.১০ করে। টি-টোয়েন্টিতে টপ অর্ডারের ব্যাটসম্যানদের স্ট্রাইক রেট এরকমই হওয়া ভালো। ১৩০ প্লাস হলে এবং একজন ব্যাটসম্যান যদি লম্বা ইনিংস খেলে তাহলে রান অটোমেটিক ১৫০ প্লাস হয়। তাই হয়েছে আজ।

Braver

বাংলাদেশের ব্যাটিং অর্ডারে আজ একটু পরিবর্তণ দেখলাম। মাহমুদুল্লাহকে নামানো হয়েছে ৫ নাম্বারে। আমার ব্যাক্তিগত মতামত হলো, টিম ম্যানেজমেন্ট খুবই সঠিক একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কারণ সে ফর্মে আছে। যদিও মাহমুদুল্লাহ আজ ক্লিক করতে পারেনি। ১০ রান করেছেন মাত্র। তবে এটাই হওয়া উচিৎ এই মুহূর্তে। আর সাকিব-মুশফিকের কথা বলবো, তারা এই মুহূর্তে অফফর্মে রয়েছে, ঠিক। তবে মূল টুর্নামেন্ট যখন শুরু হবে, তখন বাংলাদেশকে অনেক দুর যেতে হলে সাকিব, মুশফিক, তামিমদের ফর্মে থাকাটা জরুরী। তারা যদি রান না করতে পারে, তাহলে আমাদের সামনে এগুনোটা কঠিন হয়ে যাবে।

তামিমের ব্যাটিংয়ের পরই আস্থা ছিল বোলারদের ওপর। তারা গত দেড়-দুই বছর ধরে বাংলাদেশের জয়ের নির্মাতা। বাংলাদেশের জয়ে তারা অসাধারণ অবদান রেখেছে। মাশরাফির হাতেও এখন অনেকগুলো অপশন আছে। আজ যেমন ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে ৭জন বোলার ব্যাবহার করেছে সে। খুব ভালোভাবে তাদের পরিচালনা করতে পেরেছে। এক সময় মনে হচ্ছিল খুব কঠিন ম্যাচ হবে। তবে বোলাররাই শেষ পর্যন্ত ম্যাচ বের করে নিয়ে এসেছে। আমার প্রত্যাশা, পরের ম্যাচে আরও ভালোভাবে জিততে পারবে বাংলাদেশ।

লেখক: বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক

আএইচএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।