রাতে বেলায় চুপি চুপি দেখা কেন : খালেদাকে শেখ হাসিনা
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, রাতে বেলায় চুপি চুপি দেখা কেন, আপনি রাতের বেলা দেখা করা বন্ধ করুন। দিনের বেলা দেখা করেন তাহলে মানুষের মনে সন্দেহ তৈরি হবে না।
শুক্রবার বিকেলে সার্ক শীর্ষ সম্মেলন ও মালয়েশিয়া সফর নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
প্রসঙ্গত, গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার গুলশানের কার্যালয়ে সাবেক ও বর্তমান কয়েকজন সচিবালয় এবং সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী বৈঠক করেছেন। এ সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসরের সথে গুলশানে গভীর রাতে সরকারের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী আইন ভেঙে বৈঠক করে থাকলে তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আইন তার আপন গতিতে চলবে। যদি সরকারি কর্মকর্তারা আইন ভেঙে বৈঠক করে থাকে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রধানমন্ত্রী জানান, সার্ক শীর্ষ সম্মেলনে সব দেশ সন্ত্রাস দমনে একমত হয়েছে। এছাড়া নেপাল থেকে জলবিদ্যুৎ আনার ব্যাপারেও দেশটির প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার সর্বোচ্চ আঞ্চলিক সংস্থা সার্কের শীর্ষ সম্মেলনে বাংলাদেশ গঠনমূলক ভূমিকা রেখেছে। সম্মেলনে বাংলাদেশের উত্থাপিত বেশ কিছু প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই সম্মেলনে সার্কভুক্ত দেশগুলোর সরকার ও রাষ্ট্রধানদের প্রতি সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে অবস্থানের আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ। সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে আস্তঃযোগাযোগ বাড়াতে বাংলাদেশের প্রস্তাব গৃহিত হয়েছে। এশিয়া অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে সাইবার ক্রাইম প্রতিরোধে চুক্তির বিষয়ে কথা হয়েছে।
তিনি বলেন, এবারের সার্ক সম্মেলনে বিদ্যুতের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হয়েছে। সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে জ্বালানী বিষয়ক চুক্তি সম্পাদন হয়েছে। এছাড়া নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আমদানির বিষয়ে কথা হয়েছে। খুব শিগগিরই নেপালের সাথে চুক্তি হবে।
দেশে দুর্নীতি বেড়েছে, ট্রান্সফারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)র এমন তথ্যের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যারা দুর্নীতি করে হাজার হাজার কোটি টাকা বানিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে কোনো কথা বলছে না টিআইবি। তাদের উদ্দেশ্য কী? সেটাও জানার বিষয়। সরকারের কোথায় কোথায় দুর্নীতি হয়েছে তা তারা স্পষ্ট করে বলুক।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, টাকা প্রচার হয়েছে বিদেশে। আমরা সে টাকা উদ্ধার করেছি। অরফানেজের টাকা মেরে দিয়েছেন বিএনপি নেত্রী। মামলা হয়েছে, তিনি ভয়ে কোর্টে যেতে চান না। মামলার ভয়ে পালিয়ে পালিয়ে বেড়ান। কই সে ব্যাপারে তো টিঅইবি কথা বলছে না? তার পুত্র টাকা মেরে লন্ডনে আলিশান জীবনযাপন করছেন। তাদের বিষয়ে তো কোনো কথা হয় না। টিআইবি তাদের দুর্নীতিটা একটু বের করুক না।
তিনি বলেন, হ্যাঁ ১৬ কোটি মানুষের দেশ, এখানে কিছু ঘটনা ঘটতেই পারে। দুর্নীতি যা হচ্ছে সব খুচরা। কোন দেশে দুর্নীতি নাই? আমরা সরকারে আছি, আমরা দুর্নীতি করছি কি না সেটা বলুন। আমরা যদি দুর্নীতি করতাম তাহলে এ বিশ্ব মন্দার সময় দেশের প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ২ ভাগ। মাথাপিচু আয় বেড়েছে।
বিএনপির আমলের একজন মিডিয়া ব্যক্তিত্বের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেই ব্যক্তি টাকার পাহাড় গড়েছে। তার বিষয়ে তো তারা (টিআইবি) কোনো কথা বলেনি। তখন টাকা বিনিময়ে ইজ্জত কেনা যেতো।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা আজকে কথা বলছে তাদের বিরুদ্ধেও আমরা খোঁজ খবর নেবো। তাদের আয়ের উৎস কী তারও খোঁজ-খবর নেয়া হবে। তাদের টাকা কোথা থেকে আসে কোথায় ব্যয় হয় তার জবাবদিহিতা করতে হবে।