জাতিসংঘের শুভেচ্ছা দূত মাশরাফি


প্রকাশিত: ০৬:২৫ এএম, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

ক্রিকেট মাঠে বাংলাদেশ দলের অন্যতম ভরসা তিনি। বাংলাদেশের পেস বলের কান্ডারি। তার শীতল চোখে চোখ রেখে কথা বলতে ভয় পায় বাঘা বাঘা সব ব্যাটসম্যানরা। তিনি বর্তমান বাংলাদেশ দলের দলনেতা মাশরাফি বিন মর্তুজা। এবার সাকিবের পর দ্বিতীয় বাংলাদেশি ক্রিকেটার হিসেবে জাতিসংঘের শুভেচ্ছা দূত হলেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের এই অধিনায়ক।

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের(বিসিবি) এক সূত্র খবরটি নিশ্চিত করেছে। প্রথমবার ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অব দ্য রেডক্রসের (আইসিআরসি) আয়োজনে শারীরিক প্রতিবন্ধীদের আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টের শুভেচ্ছা দূত হন মাশরাফি।

কেউ বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের নাম জানে কিন্তু মাশরাফির নাম জানে না এটা কল্পনা করা যায় না। ২০০১ সালে বাংলাদেশ `এ` দলের হয়ে মাত্র একটি ম্যাচ খেলেই তৎকালীন জাতীয় দলের কোচের নজর কাড়েন এবং জাতীয় দলের জার্সি গায়ে জড়ান। সেই থেকে আর কখনো ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। তিনি তার এই ৩১ বছরের জীবনের দীর্ঘ ১৫ বছরের ক্রিকেট জীবনে বাংলাদেশ দলকে অনেক কিছু দিয়েছেন। একের পর এক ইনজুরি হয়তো তার ক্যারিয়ারকে দীর্ঘায়িত ও সাফল্যমণ্ডিত করার পথে বাধা দিয়েছে কিন্তু তার প্রতিভার পথে মাথা তুলে দাঁড়াতেই পারেনি।

প্রতিবার ইনজুরিকে কাঁচকলা দেখিয়ে তিনি ফিরে এসেছেন উজ্জীবিত হয়ে, নতুন রুপে, আরো ভয়ংকর এবং বিধ্বংসী হয়ে। একই পায়ে যখন অষ্টমবারের মতো অস্ত্রোপচার করার জন্য তাকে অস্ট্রেলিয়া যেতে হয় তখন তার চিকিৎসাদাতা ডাক্তার নিজেই হতভম্ব হয়ে গিয়েছিলেন। তিনি সকল প্রতিবন্ধকতাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বারবার ফিরে এসেছেন দেশের টানে, গায়ে জড়িয়েছেন লাল সবুজের জার্সি, দলকে দেখিয়েছেন জয়ের পথ। বিশ্ববিখ্যাত ইংলিশ অলরাউন্ডার `এন্ড্রু ফ্লিন্টফ` মাত্র একটি সার্জারির ভয়েই ক্রিকেটকে গুডবাই জানিয়েছেন।

নিউজিল্যান্ডের গতিদানব `শেন বন্ড` দুইবার সার্জারির পরই ভয়ে ক্রিকেট ছেড়ে দেন সেখানে একমাত্র ক্রিকেটার যিনি পরপর ৭টা মারাত্নক সার্জারি করেও এখনো ক্রিকেট চালিয়ে যাচ্ছেন টাইগার এই দলনেতা। তিনিই একমাত্র দেশপ্রেমিক যার  আদরের ৫ মাস বয়সী ছেলে অ্যাপোলো হাসপাতালে ভর্তি হয়ে টাইফয়েডের সঙ্গে মূত্রাশয়ের সংক্রমণ রোগে মৃত্যুর মুখোমুখি, অথচ দেশের স্বার্থে হাজার মাইল দূরে থেকে একমাত্র ছেলের সুস্থতার জন্য দু`হাত তুলে দোয়া করে দেশের জন্য মাঠে নেমেছেন।

তিনিই সেই ক্রিকেটার যার প্রতিদিন ঘুম ভাঙ্গার পর ১৫ মিনিট সময় লাগে হাঁটু ভাঁজ করে বিছানা থেকে নামতে। আমাদের একমাত্র প্লেয়ার যে কিনা ইনজুরি বিধ্বস্ত অবস্থায় বোলিংয়ের কষ্টকে ভুলতে নিজেকে সান্ত্বনা দেন এই বলে `মুক্তিযোদ্ধারা পায়ে গুলি নিয়েও যুদ্ধ করে যেতে পারলে আমি কেন সামান্য অপারেশন নিয়ে বোলিং করতে পারবো না।` তিনি আর কেউ নন আমাদের মাশরাফি বিন মুর্তজা। আমাদের বাঘ।

এমআর/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।