মিরাজকে নিয়ে উল্লাসে মাতল খুলনাবাসী
অনুর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ শেষ করে বীরের বেশে খুলনায় ফিরেছেন যুবদলের অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ। দল ফাইনালে যেতে না পারলেও ব্যাক্তিগত পারফরম্যান্স তাকে তুলে দিয়েছে অনেক উচ্চতায়। জিতেছেন বিশ্বকাপের টুর্নামেন্ট সেরার পুরস্কার। সে কারণেই খুলনায় ফিরে নিজ এলাকারা মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত হয়েছেন যুব বিশ্বকাপের সেরা এই ক্রিকেটার। মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৫টায় নগরীর খালিশপুর নতুন রাস্তার মোড়ে গাড়ি থেকে নামার সাথে সাথেই মিরাজকে নিয়ে মেতে ওঠেন খুলনাবাসী।
মিরাজ এখন আর খালিশপুর কিংবা খুলনার নয়, সমগ্র বাংলাদেশের গর্ব। কিন্তু জন্মস্থানের টান তো ভিন্ন। খালিশপুরেই তার বেড়ে ওঠা। সেখানে বাড়তি ভালোবাসা তো পাবেনই। মিরাজ আসবে-এ খবর অনেক আগেই ছড়িয়ে পড়ে তার এলাকায়। খবর পেয়ে মিরাজকে বরণ করতে তারা সব ধরনের প্রস্তুতিও গ্রহণ করে।
ঢাকা থেকে সকালে সোহাগ পরিবহনের একটি বাসে রওনা হয়ে শেষ বিকালে খুলনায় পৌঁছান মিরাজ। তার আগেই কয়েকটি গাড়ি, পিকআপ ভ্যান, বিপুলসংখ্যক মোটরসাইকেল আর হাজারো মানুষ এসে জড়ো হন নগরীর নতুন রাস্তার মোড়ে। গাড়িতে মাইক লাগিয়ে তখন বাংলাদেশের উদ্দীপনার গান বাজছিল। বাজছিল নানা ধরনের ব্যান্ড-বাদ্যও। কিছুক্ষণ পরপরই ফোটে পটকা। আর সঙ্গে ‘মিরাজ’ ‘মিরাজ’ ¯েøাগান।
বিকেল সাড়ে ৫টায় মিরাজকে বহনকারী বাসটি নতুন রাস্তার মোড়ে এসে থামে। মুহূর্তেই তাকে নিয়ে শুরু হয় মাতামাতি। কয়েকজন মিরাজকে কাঁধে তুলে পথ চলতে শুরু করেন। আর চারদিকে শুধু ‘আমাদের গর্ব, মিরাজ মিরাজ’ ¯েøাগান চলতে থাকে। চারদিক থেকে তখন মিরাজের গায়ে ঝরে পড়ে ফুল আর ফুল। সবাই তাকে কাছ থেকে একনজর দেখতে ছুটে আসেন। কেউ কেউ একবার ছুঁয়ে দেখারও চেষ্টা করেন। এতটা ভালোবাসায় কিছুটা হকচকিয়ে যান ১৯ ছুঁই ছুঁই মিরাজও। ঘটনার আকস্মিকতায় কী করবেন বুঝতেই পারছিলেন না। তার পরপরই সবার উদ্দেশে হাত নেড়ে ভালোবাসার জবাব দেন।
এ সময় আসেন মিরাজের প্রথম কোচ আল মাহমুদ। কোচকে জড়িয়ে ধরেন অনুর্ধ্ব-১৯ দলের অধিনায়ক। সঙ্গে ছিলেন মিরাজের বাবা জালাল আহমেদ। এতদিন পর মিরাজকে কাছে পেয়ে আবেগাপ্লুত তার বাবাও। জড়িয়ে ধরেন ছেলেকে। ছিলেন স্থানীয় আরেক ক্রীড়া সংগঠক মো. ইউসুফ আলী। তিনিও মিরাজকে কাছে পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।
এরপর একটি খোলা মাইক্রোবাসে ওঠানো হয় মিরাজকে। মাইক্রোবাসে উঠে হাত নেড়ে আশপাশের সবাইকে ভালোবাসার জবাব দেন তিনি। চারটি মাইক্রোবাস, পাঁচটি পিকআপ ভ্যান, আর মোটরসাইকেলের শোভাযাত্রা মিরাজকে নিয়ে নগরীর নতুন রাস্তার মোড় থেকে জোড়া গেট হয়ে খালিশপুরে তার বাড়ির কাছে কাশিপুরে পৌঁছায়। সেখানেও অপেক্ষা করছিলেন শতশত মানুষ। তারাও মিরাজকে ভালোবাসায় সিক্ত করেন।
এর পরেই বাসায় আসেন মেহেদী হাসান মিরাজ। বাসায় ফিরলে সেখানে এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। দীর্ঘদিন পর আদরের ধন সন্তানকে কাছে পেয়ে মিরাজের মা মিনারা বেগম জড়িয়ে ধরেন তাকে। কপালে চুম্বন এঁকে দেন। হাতে তুলে মিষ্টি খাইয়ে দেন।’
আইএইচএস/এমএস