জয় করার অদম্য ইচ্ছা তাদের
লালমনিরহাট সদর উপজেলার ফুলগাছ উচ্চ বিদ্যালয়ের মানবিক শাখা থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে শারীরিক প্রতিবন্ধী আরিফা খাতুন। সে পা দিয়ে লিখে এসএস সি পরীক্ষায় অংশ নেয়। আরিফা খাতুনের দুইটি হাত জন্ম থেকে অচল। তাই পা দিয়ে লিখে এসএসসি বাংলা প্রথম পরীক্ষা শেষ করলো।
সোমবার সকালে গিয়ে দেখা যায়, আরিফা খাতুন পা দিয়ে মনোযোগ সহকারে পরীক্ষার খাতায় লিখে চলছে। লালমনিরহাট সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থী হিসেবে পরীক্ষা দিচ্ছেন। তার জন্য দেয়া হয়েছে অতিরিক্ত ১০ মিনিট সময়।
লালমনিরহাট সদর উপজেলার খোড়ারপুল শাহীটারী গ্রামের দিনমজুর আব্দুল আলীর প্রতিবন্ধী মেয়ে। মা মমতাজ বেগম একজন গৃহিনী। পড়াশুনা করাচ্ছেন অতিকষ্টে। পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে সর্বশেষ আরিফা খাতুন পড়াশুনায় বেশ মনোযোগী। তার অপর দুই ভাই ও দুই বোন স্বাভাবিক হলেও আরিফা জন্মের পরই প্রতিবন্ধী হয়ে যায়।
আরিফা খাতুন স্থানীয় রায়পাড়া ব্র্যাক প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পঞ্চম শ্রেণি পাস করে ভর্তি হয় ফুলগাছ উচ্চ বিদ্যালয়ে। মেধা তালিকায় পঞ্চমে থাকা আরিফা এসএসসি পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করবে আর এমনটিই বিশ্বাস আরিফার শিক্ষক, সহপাঠী, প্রতিবেশি ও বাবা-মায়ের।
এদিকে, লালমনিরহাটরে হাতীবান্ধা উপজেলা বড়খাতা কেন্দ্রে থেকে এবার চারজন প্রতিবন্ধী এসএস সি পরীক্ষা অংশ নেয়। তারা কেউ শারীরিক আবার কেউ বাক প্রতিবন্ধী। বাক প্রতিবন্ধী সিমি আক্তার বাউরা আরেফা খাতুন বালিকা বিদ্যালয়ে থেকে মানবিক শাখা থেকে এসএস সি পরীক্ষা অংশ নেয়।
এরশাদ হোসেনের বাম হাত নেই। সে একটি হাত দিয়ে গড্ডিমারী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষা অংশ নেয়। লাজু হোসেন বাক প্রতিবন্ধী। সে পাইকারটারী উচ্চ বিদ্যালয় এবং আরেক বাক প্রতিবন্ধী মোস্তাফিজুর রহমান রমনীগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএস সি পরীক্ষায় অংশ নেয়। তারা সকলেই মেধাবি। সমাজের বোঝা হতে চায় না। বাক ও শারীরিক প্রতিবন্ধী এই পরীক্ষার্থীরা অদম্য ইচ্ছা থেকে পড়াশুনা করছেন আর উচ্চ শিক্ষিত হয়ে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার স্বপ্ন দেখেন। কিন্তু দারিদ্রতা তাদের জন্য বড় প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে।
বড়খাতা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহিদুল বাড়ী জাগো নিউজকে জানান, প্রতিবন্ধী ছাত্র/ছাত্রীদের জন্য শিক্ষা বোর্ডের চিঠি অনুযায়ী অতিরিক্ত ১০ মিনিট সময় বাড়িয়ে দেয়া হয়।
রবিউল হাসান/এমজেড/পিআর