খালেদা কি করে জানবেন শহীদের সংখ্যা : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া ক্যান্টনমেন্টে ছিলেন। কাজেই মুক্তিযুদ্ধে কতজন মারা গেছেন তা তার দেখারও কথা নয়, জানারও কথা নয়। এসব কথা বলেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। শনিবার দুপুরে হবিগঞ্জে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত জেলা কমিটির বিশেষ সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
শুধু রিজভী কেন তাদের চেয়ারম্যান খালেদা জিয়া বলেন, মুক্তিযুদ্ধে কত লোক মারা গেছে তার কোনো হিসাব নিকাশ নেই। খামাকাই একটি সংখ্যা বলছেন।
আমি বলি, যুদ্ধ যেহেতু তিনি করেননি তাই তা তার জানার কথা নয়।
এসময় মন্ত্রী আরও বলেন, বিএনপিকে মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছে। এখন তারা আবোলতাবোল অনেক কথাই বলছে। তারা কি বলে তা নিয়ে দেশের মানুষ কোনো চিন্তা করেন না।
তিনি বলেন, কোন দলকে নিষ্ক্রিয় বা ধ্বংস করা আওয়ামী লীগের কাজ নয়। আওয়ামী লীগ চিন্তা করে সবাইকে নিয়ে রাজনীতি করার। আওয়ামী লীগ সব সময়ই গণতন্ত্রের উপর বিশ্বাসী, আস্থাশীল। বিএনপির বিরুদ্ধে মমলার প্রসঙ্গ টেনে মন্ত্রী বলেন, শুধু বিএনপি নয়, ২০ দলীয় জোট কিভাবে অগ্নি সন্ত্রাস করেছে, তারা কিভাবে জ্বালাও পোড়াও করেছে তা সবাই দেখেছে। এত মানুষ হত্যা, এত সম্পদ ধ্বংস করেছে। এত মানুষকে পুড়িয়েছে, আহত করেছে। সেগুলোর মামলাতো হবেই। এতে যদি তারা মনে করে তাদের নামে মামলা দেয়া হয়েছে, তারা যখন অপকর্ম করেছিলেন তখনতো তারা জনগণকে জিজ্ঞেস করেনি যে আমি অপকর্ম করতে যাচ্ছি। আমাদেরকে তোমরা সমর্থন দিও। মানুষ অপকর্মের জন্য কখনো সমর্থন দেয় না। জনগণ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির সঙ্গেই আছেন, আমরা সে ভরসায় চলছি।
এর আগে জেলা প্রশাসক সাবিনা আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত জেলা কমিটির বিশেষ সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় সাইবার ক্রাইম প্রসঙ্গ টেনে বলেন, আমাকে দিনে ১০ বার হুমকি দেয়া হয়। এখানে আসার আগেও হুমকি দেয়া হয়েছে। খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে যে রাষ্ট্রদ্রোহী মামলা হয়েছে। আমার মনে হয়, সে জন্যই আমাকে শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত অন্তত ১০ বার হুমকি দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, সাইবার ক্রাইম দমনের জন্য আমাদের নজর রয়েছে। পুলিশ সদস্যদের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য আমরা কাজ করছি। এটি বন্ধ করার প্রচেষ্টা আমাদের রয়েছে। এই ক্রাইম বন্ধ করতে আমাদের দক্ষতা, জ্ঞান, প্রশিক্ষণের দরকার রয়েছে। মাদকের ভয়াবহতার কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, আমাদের এখানে মাদকের বিষয়ে সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান রয়েছে। কিন্তু এর ব্যাপকতা মারাত্মকভাবে বেড়ে যাওয়ায় তা নিয়ন্ত্রণে আমরা হিমশিম খাচ্ছি। গুলি করে মারলে তা থামানো যাবে না। মাদক নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রয়োজন সচেতনতা বৃদ্ধি। এছাড়া মাদকের মামলা হলে কেউ সাক্ষী দিতে চান না। এখন আমরা মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে সাজা দিয়ে দেই। এটি ফলপ্রসুও হয়েছে।
জেলখানাগুলোতে এখন প্রায় ১০ শতাংশই মাদক মামলার আসামি শাস্তি ভোগ করছেন। মাদক নিয়ন্ত্রণের জন্য আমরা গণমাধ্যমে বিজ্ঞাপন দেয়াসহ বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। সবাইকে এ বিষয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার জন্য তিনি আহ্বান জানান।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন অ্যাডভোকেট মো. আবু জাহির এমপি, অ্যাডভোকেট মাহবুব আলী এমপি, এমএ মুনিম চৌধুরী বাবু, সিলেটের ডিআইজি মো. মিজানুর রহমান পিপিএম, হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার জয়দেব কুমার ভদ্র, আওয়ামী লীগ জাতীয় পরিষদ সদস্য শহীদ উদ্দিন চৌধুরী, প্রেসক্লাব সভাপতি শোয়েব চৌধুরী প্রমূখ। পরে মন্ত্রী লাখাই উপজেলার স্বজন গ্রামে পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের উদ্বোধন শেষে স্থানীয় আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় বক্তৃতা করেন।
সৈয়দ এখলাছুর রহমান/এমজেড/আরআইপি