রাবাদা বীরত্বে অবশেষে জিতল দ. আফ্রিকা


প্রকাশিত: ১২:৩৩ পিএম, ২৬ জানুয়ারি ২০১৬

একটি জয়ের জন্য মাথা কুটে মরছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। গত বছর জুলাইতে বাংলাদেশ থেকে শুরু। এরপর টানা ৯টি টেস্টে জয়হীন টেস্ট র‌্যাংকিংয়ে এক নম্বরে থাকা দক্ষিণ আফ্রিকা। বাংলাদেশে ২টি, ভারতে চারটি এবং নিজেদের মাটিতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিনটি টেস্টে জয় অধরাই থাকলো প্রোটিয়াদের। এর মধ্যে আবার ভারতের কাছে ৩টি এবং ইংল্যান্ডের কাছে ২টি টেস্ট হেরে, র‌্যাংকিংয়ের শীর্ষস্থান থেকেই চ্যুতি ঘটেছে হাশিম আমলা-ডি ভিলিয়ার্সদের।

একের পর এক টেস্টে জয়হীন থাকার কারণে দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেট ভবিষ্যৎ নিয়েই যারা চিন্তিত হয়ে পড়েছিলেন, তাদেরকে বাস্তবে ফিরিয়ে আনলেন ২০ বছর বয়সী এক কৃষ্ণাঙ্গ তরুণ। কাগিসো রাবাদা। সেঞ্চুরিয়নে সিরিজের শেষ টেস্টে ডান হাতি এই তরুণের পেস বীষে নীল হয়েছে ইংল্যান্ড। একাই ১৩ উইকেট তুলে নিলেন রাবাদা। ফলশ্রুতিতে ২৮০ রানের বিশাল এক জয় তুলে নিল দক্ষিণ আফ্রিকা। ৯ ম্যাচ পর, ১০ম ম্যাচে এসে জয় পেলো আমলা-ডি ভিলিয়ার্সরা।

চতুর্থ ইনিংসে জয়ের জন্য ৩৮২ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে রাবাদা তোপের মুখে পড়ে মাত্র ১০১ রানেই অলআউট দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রথম ইনিংসের মত দ্বিতীয় ইনিংসেও ঝড় তুললেন রাবাদা। প্রথম ইনিংসে নিয়েছিলেন ১১২ রানে ৭ উইকেট। দ্বিতীয় ইনিংসে ৩২ রানে ৬ উইকেট। দুই ইনিংস মিলে মাত্র ১৪৪ রান দিয়ে একা এক বোলার ১৩ উইকেট নেয়ার পর বাকি আর কিছু থাকে না। সুতরাং, ইংল্যান্ডের পরাজয় ছিল অনিবার্য। সেটাই বাবস্তবতা হয়ে ধরা দিল ২৮০ রানের বিশাল পরাজয়ে।

দ্বিতীয় ইনিংসে রাবাদা ছাড়াও ইংলিশ বধে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন মরনে মর্কেল। ৩৬ রান দিয়ে তিনি নিয়েছিলেন ৩ উইকেট। বাকি উইকেটটি নিয়েছিলেন ড্যান পিট। ৩ উইকেটে ৫২ রান নিয়ে টেস্টের শেষ দিন খেলতে নামে ইংল্যান্ড। কিন্তু রাবাদা তোপের মুখে এক ঘণ্টাও টেকেনি তাদের ইনিংস। সকালের যে সময়টুকু ব্যাট করতে পেরেছে ইংলিশরা, তাতে ৭ উইকেট মিলে যোগ করতে পেরেছে মাত্র ৪৯ রান। ফলে ১০২ রানেই শেষ হয়ে গেলো অ্যালিস্টার কুকদের ইনিংস। সর্বোচ্চ ২৪ রান এসেছে জেরোম টেলরের ব্যাট থেকে। ২০ রান করেন জো রুট।

South-Africa
প্রথম ইনিংসে তিন সেঞ্চুরিতে দক্ষিণ আফ্রিকার সংগ্রহ ছিল ৪৭৫ রান। জবাবে ব্যাট করতে নেমে অ্যালিস্টার কুক আর জো রুটের সমান ৭৬ রানের দুটি ইনিংসের ওপর ভর করে ভালোই এগিয়ে যাচ্ছিল ইংল্যান্ড; কিন্তু কাগিসো রাবাদার ঝড়ে প্রথম ইনিংসেও উড়ে গেলো ইংলিশরা। একাই নিলেন ৭ উইকেট। ৩৪২ রানে অলআউট ইংল্যান্ড।

১৩৩ রানে এগিয়ে থেকে ব্যাট করতে নেমে হাশিম আমলার ৯৬ এবং টেম্বা ভাবুমার ৭৮ রানের ওপর ভর করে ৫ উইকেট হারিয়ে ২৪৮ রানে ইনিংস ঘোষণা করে দক্ষিণ আফ্রিকা। ফলে, ইংল্যান্ডের সামনে জয়ের জন্য লক্ষ্য দাঁড়ায় ৩৮২ রান।

মাত্র ২০ বছর ২৪২দিন। এত কম বয়সে এত বড় কৃতিত্ব আর কোন প্রোটিয়া বোলার এখনও পর্যন্ত দেখাতে পারেনি। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে টেস্টে এক ম্যাচে সেরা বোলিং ফিগার হচ্ছে মাখায়া এনটিনির ১৩২ রানে ১৩ উইকেট। সেরার বিচারে তাই রাবাদারটা দ্বিতীয় স্থানে। তবে, বয়সের বিচারে এটাই সেরা। কারণ, এনটিনির কৃতিত্ব ছিল তার ২৩ বছর বয়সে। ১৩ উইকেট নিয়েছেন হিউজ টেইফিল্ডও। তবে তিনি নিয়েছেন ২বার। ১৯৫২ এবং ১৯৫৭ সালে।

শেষ টেস্টে ২৮০ রানের বিশাল ব্যবধানে হারলেও জোহানেসবার্গ এবং ডারবানে জিতে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতে নিল ইংল্যান্ডই।

আইএইচএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।