আমিরের ম্যাচে পাকিস্তানের জয়
নিজেদের মাটিতে যেন উড়ছিল নিউজিল্যান্ড। বিশেষ করে শ্রীলংকাকে যেভাবে নাকানি-চুবানি খাইয়েছে কিউইরা, তাতে করে ‘নিজেদের সাম্রাজ্যে তারাই যেন রাজা’; কিন্তু অকল্যান্ডের ইডেন পার্কে মোহাম্মদ আমিরের ম্যাচে সফরকারী পাকিস্তানের কাছে প্রথম ম্যাচেই ১৬ রানে হেরে গেলে স্বাগতিকরা।
পাকিস্তানের করা ১৭১ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে কেনে উইলিয়ামসনের ৭০ এবং কলিন মুনরোর ৫৬ রান সত্ত্বেও ১৫৫ রানে অলআউট হয়ে যায় নিউজিল্যান্ড। দ্বিতীয় অভিষেকের ম্যাচে মোহাম্মদ আমির খুব একটা ঔজ্জল্য ছড়াতে পারেননি। ৪ ওভার বল করে ৩১ রান দিয়ে নিয়েছেন ১টি উইকেট।
অকল্যান্ডের এই মাঠেই গত সপ্তাহে পরপর দুটি রেকর্ড গড়েছিলেন মার্টিন গাপটিল আর কলিন মুনরো। শ্রীলংকার করা ১৪২ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে মার্টিন গাপটিল প্রথমে ১৯ বলে নিজ দেশের হয়ে সবচেয়ে দ্রুততম হাফ সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়েন। তার ২০ মিনিট পর, কলিন মুনরো ভেঙ্গে ফেলেন গাপটিলের রেকর্ড। মাত্র ১৪ বলে তিনি পৌঁছান হাফ সেঞ্চুরির মাইলফলকে। টি-টোয়েন্টির ইতিহাসে দ্বিতীয় দ্রুততম হাফ সেঞ্চুরি ছিল সেটা।
সেই মুনরো আজও হাফ সেঞ্চুরি করেছেন। তবে ২৫ বলে। ২৭ বলে ৫৬ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলেন তিনি। কেনে উইলিয়ামসন খেলেন ৬০ বলে ৭০ রানের ঝড়ো ইনিংস। তবে মার্টিন গাপটিল ছিলেন ফ্লপ। মাত্র ২ রান করে রানআউট হয়েছিলেন।
১৭২ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ৯ রানের মাথায় গাপটিলকে হারালেও উইলিয়ামসন আর মুনরো মিলে গড়েন ৮০ রানের জুটি। ২৭ বলে ৫৬ রান করা মুনরোকে বোল্ড করে প্যাভিলিয়নের পথ দেখান ওয়াহাব রিয়াজ। এই একটি জুটি ভাঙার পরই পথ হারিয়ে ফেলে নিউজিল্যান্ড।
নিয়মিত বিরতিতে পড়তে থাকে নিউজিল্যান্ডের উইকেট। এক প্রান্তে দাঁড়িয়েছিলেন অধিনায়ক কেনে উইলিয়ামসন। অপরপ্রান্তে ছিল উইকেট পতনের মিছিল। ওয়াহাব রিয়াজ, উমর গুল আর শহিদ আফ্রিদির বোলিংয়ের সামনে আসা-যাওয়ার মিছিলে সামিল হন কোরি এন্ডারসন, গ্র্যান্ট এলিয়ট, লুক রনকি, মিচেল সান্তনার, টড অ্যাসলে কিংবা ম্যাট হেনরিরা। ম্যাট জেনরি ছাড়া আর কোন ব্যাটসম্যানই দুই অংকের ঘর স্পর্শ করতে পারেননি।
অবশেষে সতীর্থদের আত্মহত্যার মিছিলে সামিল হয়ে গেলেন কেনে উইলিয়ামসনও। ৬০ বলে তিনি আউট হয়ে যান ৭০ রান করে। শেষ পর্যন্ত ২০ ওভার পুরো খেলতে পারলেও নিউজিল্যান্ড অলআউট হয়ে গেলো ১৫৫ রানে। ওয়াহাব রিয়াজ ৩টি, আফ্রিদি, গুল নেন ২টি করে উইকেট। মোহাম্মদ আমির এবং ইমাদ ওয়াসিন নেন ১টি করে উইকেট।
এর আগে টস জিতে আফ্রিদিকে ব্যাট করার আমন্ত্রণ জানান কিউই অধিনায়ক কেনে উইলিয়ামসন। ব্যাট করতে নেমে দারুন সূচনা এনে দেন মোহাম্মদ হাফিজ এবং আহমেদ শেহজাদ। ৩৩ রানে শেহজাদ ফিরে যান ব্যাক্তিগত ১৬ রানে। তবে, দ্বিতীয় উইকেটে শোয়েব মাকসুদ ২ বলে কোন রান না করে আউট হলেও ক্রিজে ছিলেন অনেকক্ষণ। কারণ, দ্বিতীয় উইকেট পড়েছে ৫২ রানের মাথায়।
এরপর শোয়েব মালিকের ১৮ বলে ২০, উমর আকমলের ১৪ বলে ২৪, শহিদ আফ্রিদির ৮ বলে ২৩ এবং ইমাদ ওয়াসিমের ৯ বলে ১৮ রানের ওপর ভর করে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৭১ রান সংগ্রহ করে পাকিস্তান। তবে এই ইনিংসে সবচেয়ে বেশি অবদান ছিল মোহাম্মদ হাফিজের। তিনি করেন সর্বোচ্চ ৪৭ বলে ৬১ রান। ৮টি বাউন্ডারির সঙ্গে ২টি ছক্কার মার ছিল তার ইনিংসে।
কিউই বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল ছিলেন অ্যাডাম মিলনে। ৩৭ রান দিয়ে তিনি নিয়েছেন ৪ উইকেট। ২ উইকেট নেন মিচেল সান্তনার। ১টি করে নেন ম্যাট হেনরি এবং ট্রেন্ট বোল্ট। তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের
আইএইচএস/এমএস