আশাই যখন মরীচিকা
“আমার প্রাণের বিনিয়মেও তোমাকে ভালোবাসি ওহাব, কিন্তু তুমিও বুঝলে না আমার পরিবারও বুঝলো না, তাই আমি তোমাদের মাঝ থেকে অনেক দূরেই চলে গেলাম। যেখানে কেউ আমাকে খুঁজে পাবে না। ওহাব তোমাকে অনেক ভালোবাসি, ভালোবাসি, ভালোবাসি,,,,,,,,,,,,,? এই কয়েকটি কথা একটি চিরকুটে লেখেই না ফেরার দেশে চলে গেল আশা নামে মেয়েটি। আশার আশাই রয়ে গেল তবুও পেল না ওহাব ও তার পরিবারের ভালোবাসা।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঠাকুরগাঁও পৌর এলাকার হাজীপাড়া এলাকা নিজ বাসা থেকে ওই আশা নামে মেয়েটির ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। আশা ওই এলাকার বাদশা মিয়ার মেয়ে।
এলাকাবাসী ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী আশা। তার সঙ্গে একই শহরের ওহাব নামে একটি ছেলের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রেমের বিষয়টি পারিবারিকভাবে জানাজানি হয়ে গেলে আশার উপর প্রায় চলতো শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। এর ফলে এক সময় আশা ওহাবের সঙ্গে অজানার পথে পাড়ি জমানোর চেষ্টা করে।
বাড়ি থেকে সে ওহাবের সঙ্গে বেড়িয়ে পড়লেও পারিবারিক কারণে আবার বাসায় ফিরতে হয়েছে। এর পর থেকে আশার স্বাধীনতা হরণ করে পরিবারের লোকজন। তাকে কলেজেও যেতে দেয়া হতো না। ওহাবের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে নেমে আসে শারীরিক নির্যাতন। অবশেষে আর নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বাড়ির লোকজন না থাকায় গলায় ওড়না পেচিয়ে না ফেরার দেশে চলে যায়। বাড়ির লোকজন ঘরের জানালা দিয়ে আশার ঝুলন্ত লাশ দেখতে পায়। পরে পুলিশকে খবর দিলে দরজা ভেঙে লাশ উদ্ধার করা হয়।
প্রতিবেশি সাদেকুল ইসলাম জানান, প্রায় আশার উপর শারীরিক নির্যাতন করা হতো। বাড়ির বাইরে কেউ গেলে তাকে ঘরে তালাবন্ধ করে দেয়া হতো।
আশার মা কুলসুম জানান, আশা আমাদের খুব আদরের মেয়ে ছিল। আমরা কখনো চাইনি সে কোনো ছেলের সঙ্গে সম্পর্কে জড়াক। সে পড়ালেখায় খুব ভালো ছিল। তার এই মৃত্যু আমি মেনে নিতে পারছি না।
ঠাকুরগাঁও সদর থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক নুরু জানান, প্রেমঘটিত কারণে আশার মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। ময়নাতদন্ত শেষে বুঝা যাবে আশার মৃত্যুর কারণ। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।
রবিউল এহ্সান রিপন/বিএ