স্বাধীনতার ৪৪ বছরেও বিদ্যুৎ পৌঁছেনি খোয়াড় গ্রামে


প্রকাশিত: ১২:৪২ পিএম, ১০ জানুয়ারি ২০১৬

বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত হবে ঘর ! চলবে টিভি, ফ্রিজ, জ্বলবে বাতি আর ঘুরবে ফ্যান। বাতির আলোয় পড়ালেখা করবে গ্রামের শিক্ষার্থীরা। কিন্তু বিদ্যুতের এসব সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত ফরিদপুরের সালথা উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের খোয়াড় গ্রামের বাসিন্দারা।

স্বাধীনতার ৪৪ বছরেও এই গ্রামটিতে পৌঁছেনি বিদ্যুতের আলো। দুই সহস্রাধিক জনগণের বসবাসের ওই গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য বিগত দিনে গ্রামবাসীর একাধিক বার আবেদনেও সাড়া দেয়নি পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি। এতে সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যায়ের সঙ্গী হতে পারছে না তারা। আশপাশের গ্রামে বিদ্যুতের আলো দেখা গেলেও আজ পর্যন্ত ওই গ্রামবাসী বিদ্যুৎ অন্ধকারে রয়ে গেছে।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানান, সালথা উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের খোয়াড়গ্রাম নিয়ে গঠিত হয় ৫নং ওয়ার্ড। গ্রামটিতে তিনটি মসজিদ, চারটি মক্তব, একটি হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও তিন শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে। এছাড়া বিদ্যুৎ না থাকায় শুষ্ক মৌসুমে এলাকার জমিতে ছোট-বড় পনেরটি ডিজেল চালিত গভীর নলকূপ দিয়ে সেচের কাজ চালনো হয়।

বিদ্যুৎ বঞ্চিত দুই সহস্রাধিক জনসংখ্যার ওই গ্রামের স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসায় পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের একমাত্র ভরসা হারিকেন-কুপি আর মোমবাতি। পাশের গ্রামে বা বিকল্প ব্যবস্থায় মোবাইল ফোনে চার্জ দিয়ে নিতে হয়। ওই গ্রামের ওপর দিয়ে গোয়ালপাড়া-খোয়াড় ও ভাবুকদিয়া সড়ক পথে দিন-রাত লোকজন ও বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলাচল করে থাকে। এছাড়া এ গ্রামের আশপাশের সকল গ্রামেই পল্লী বিদ্যুতের সংযোগ রয়েছে। পাশের গ্রামেই বিদ্যুতের আলো দেখে হতাশ হয়ে পরেন এই গ্রামের বাসিন্দারা।

স্থানীয়রা জানান, প্রতিটি নির্বাচনের সময় জনপ্রতিনিধিরা বার বার আশ্বাসের বাণী শুনালেও পরে তার প্রতিফলন চোখে পড়েনা। দিন দিন গ্রামের লোকদের সর্বক্ষেত্রে জীবনমান উন্নয়ন হলেও বিদ্যুতের অভাবে পড়তে হয় চরম বিড়াম্বনায়। বিদ্যুতের অভাবে কোমলমতি শিক্ষার্থীসহ ওই গ্রামবাসীর কাছে প্রতিটি রাত ঘুট-ঘুটে অন্ধকারাচ্ছন্ন, অবহেলিত এক জনপদ।  

ওই গ্রামের জামাল ফকির জানান, বিদ্যুতের অভাবে গ্রামের প্রায় তিন শতাধিক শিক্ষার্থীর পড়ালেখার চরম বিঘ্ন ঘটছে। একাধিকবার বিদ্যুৎ সংযোগ পাওয়ার জন্য আবেদন করলেও আজ পর্যন্ত কোনো সুরাহা হয়নি।

ওই ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার আ. হাই আজাদ জাগো নিউজকে জানান, ভাই বিদ্যুৎ যেন আমাদের গ্রামের লোকদের কাছে সোনার হরিণ।

একই গ্রামের ইকরাম মাতুব্বর জানান, জনপ্রতিনিধিরা নির্বাচনের সময় একাধিকবার বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার কথা বললেও নির্বাচনের পর তাদের আর খবর থাকে না। এ যেন ভোট নিয়ে নির্বাচিত হওয়ার কৌশল মাত্র।

এ ব্যাপারে ফরিদপুরের পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার রাম শংকর রায় জাগো নিউজকে জানান, যোগদানের পর খোয়াড় গ্রামের বিদ্যুৎ সংযোগের কোনো আবেদনপত্র আমার চোখে পড়েনি। বিদ্যুতের ব্যাপারে ভবিষ্যতে কেউ যোগাযোগ করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।  

এস.এম. তরুন/এআরএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।