শনিবার ১৮তম সার্ক সম্মেলন শুরু
নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে দক্ষিণ এশিয়ার আট জাতির সহযোগিতামূলক সংস্থা সার্কের ১৮তম সম্মেলন শুরু হচ্ছে শনিবার।
দক্ষিণ এশিয়া আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা (সার্ক) প্রতিবছর শীর্ষ সম্মেলন আয়োজনের কথা থাকলেও দুই বছর পর ‘শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য গভীর সমন্বয়’ প্রতিপাদ্য নিয়ে এই সম্মেলন হচ্ছে।
সর্বশেষ ১৭তম সার্ক শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় ২০১১ সালের নভেম্বরে মালদ্বীপের পর্যটন নগরী অদ্দুতে। অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অচলাবস্থার কারণে নেপাল দুই বছর ধরে শীর্ষ সম্মেলন আয়োজনে অপারগতা জানায়। এর আগে ১৯৮৭ সালের নভেম্বরে তৃতীয় সার্ক সম্মেলনের আয়োজন করে নেপাল।
গত ২০ ফেব্রুয়ারি মালদ্বীপের বান্দোস আইল্যান্ডে অনুষ্ঠিত সার্ক পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে নেপালের পক্ষ থেকে নভেম্বরে ১৮তম শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠানের কথা জানানো হয়।
এদিকে সার্ক শীর্ষ সম্মেলনকে সফল করতে নেপাল ব্যাপক প্রস্তুতি শেষ করেছে। প্রস্তুতির তত্ত্বাবধান করার জন্য প্রধানমন্ত্রী সুশীল কুমার কৈরালার সরকার একটি জাতীয় প্রধান আয়োজক কমিটি ও একটি উপকমিটি গঠন করেছে। এই অঞ্চলের রাষ্ট্রপ্রধান ও কর্মকর্তাদের এই মিলনমেলার জন্য রাজধানী কাঠমান্ডুকে প্রস্তুত করতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোও পদক্ষেপ নিয়েছে।
সার্ক সম্মেলনের আনুষ্ঠানিকতার শুরুতে শনিবার কাঠমান্ডুতে সার্ক দেশগুলোর যুগ্ম সচিব পর্যায়ে প্রোগ্রামিং কমিটির বৈঠক এবং ২৩ ও ২৪ নভেম্বর পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ে স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
সার্ক নেতাদের বৈঠকের জন্য যাবতীয় প্রস্তুতি চূড়ান্ত করতে ২৫ নভেম্বর সদস্য দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সমন্বয়ে সার্ক কাউন্সিল অব মিনিস্টার্স বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, মালদ্বীপ, নেপাল, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা এই আঞ্চলিক জোটের সদস্য। এবারের সম্মেলনে সার্ক নেতৃবৃন্দ সিদ্ধান্ত গ্রহণের চেয়ে বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব দেবেন বেশি৷
শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে ৮ দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানরা মঙ্গলবার কাঠমাণ্ডু পৌঁছাবেন৷ সেখানে তাদের উষ্ণ সংবর্ধনা দিতে সব প্রস্তুতি শেষ করেছে নেপাল সরকার৷
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, এবারের সম্মেলনে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে অর্থনৈতিক ও জ্বালানি সহযোগিতা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, নিরাপত্তা, শিক্ষা, কৃষি ও গ্রামীণ উন্নয়ন, জলবায়ু ও আবহাওয়া পরিবর্তন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিসহ নানা বিষয়ে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সহযোগিতার বিষয়টি তুলে ধরা হবে। তবে আগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আন্তঃদেশীয় যোগাযোগ ব্যবস্থাকেই গুরুত্ব দেবে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ মনে করে, সদস্য দেশগুলোর মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা শক্তিশালী হলে অন্যান্য সহযোগিতাও দ্রুততম সময়ের মধ্যে সম্পন্ন হবে। এসব বিষয়ে বাংলাদেশের অবস্থান পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে তুলে ধরা হবে। এবারের বৈঠকে সার্ক নেতারা আসন্ন শীর্ষ সম্মেলনে দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা, বিশেষত আফগানিস্তানে ২০১৫ সালে ন্যাটোবাহিনী প্রত্যাহারের পর সেখানকার নিরাপত্তা পরিস্থিতি কী দাঁড়াবে সে বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করা হবে। ভারতে নরেন্দ্র মোদির সরকার প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করার পর সার্ক সম্মেলনের গুরুত্ব অনেক বেড়ে গেছে। তিনি তার শপথ অনুষ্ঠানে সার্ক নেতাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন।