রাজধানীসহ সারাদেশে নিরাপত্তা জোরদার
জামায়াতে ইসলামীর ডাকা সকাল-সন্ধ্যা হরতালে রাজধানীসহ সারাদেশে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। হরতালে নাশকতা এড়াতে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে পুলিশ। র্যাবের সব ব্যাটালিয়নও সতর্কতামূলক অবস্থান করেছে।
হরতালের সমর্থনে দলটির নেতাকর্মীরা রাজধানীসহ বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ করতে পারে সেজন্য বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই নেয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় অভিযুক্ত জামায়াতের আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর বিরুদ্ধে আপিলের রায়ে ফাঁসির আদেশ বহাল থাকার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সকাল সন্ধ্যা হরতাল আহ্বান করেছে জামায়াতে ইসলামী।
বুধবার সকালে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহার নেতৃত্বে আপিল বিভাগের চার বিচারপতির বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। এরপরেই দেশব্যাপি সকাল-সন্ধ্যার এ হরতাল কর্মসূচি ঘোষণা করে দলটি। দলের ভারপ্রাপ্ত আমির মকবুল আহমাদ ও ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারল ডা. শফিকুর রহমান এক বিবৃতিতে হরতালের ঘোষণা দেন।
বিবৃতিতে তারা বলেন, “মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী শুধু বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীর আমীরই নন, তিনি একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আলমে দ্বীন, ইসলামী চিন্তাবিদ, পরিচ্ছন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শীর্ষ নেতা।
তাদের দাবি, সরকার জামায়াত ইসলামীকে নেতৃত্বশূন্য করতেই সংগঠনের আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীসহ শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধ মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযাগ মিথ্যা মামলা দায়ের করে। তাদের অভিযোগ, মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর বিরুদ্ধে সরকারের পক্ষ থেকে যতো অভিযোগ উত্থাপন করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন, বানোয়াট ও কাল্পনিক।
এদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, ২৪ ঘণ্টার হরতালে যেকোনো বিক্ষোভ কিংবা যেকোনো ধরনের নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড ঠেকাতে রাজধানীতে সতর্কাবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মারুফ হাসান সরদার জাগো নিউজকে বলেন, জনগণের নিরাপত্তা ও জানমালের হুমকি এমন যেকোনো ধরনের কর্মসূচি রাজধানীতে হতে দেয়া হবে না। হরতালের যারা নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড করবে তাদের কোনোভাবে ছাড় দেয়া হবে না। হরতালের সমর্থনে জামায়াত বিক্ষোভ কিংবা ভাঙচুর বা জ্বালাও পোড়ও করলে তা শক্ত হাতে দমন করা হবে। সেজন্য বুধবার বিকেল থেকেই সর্বোচ্চ সতর্কতামূলক অবস্থানে রয়েছে পুলিশ।
তিনি আরও বলেন, ঢাকার চারটি প্রবেশমুখে অতিরিক্ত নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সন্দেহভাজন যানবাহন ও ব্যক্তিদের দেহ তল্লাশি করা হবে। বঙ্গভবন, গণভবন, কূটনৈতিকপাড়া, বিচারকদের বাসভবনসহ গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে নেয়া হয়েছে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
জামায়াতের হরতাল কর্মসূচিকে ঘিরে রাজধানীসহ সারাদেশে যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা রোধে সতর্ক অবস্থানে থাকবে এলিট ফোর্স র্যাব।
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) মিডিয়া অ্যান্ড লিগ্যাল উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান বলেন, রাজধানীতে যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবেলায় এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে র্যাবের প্রত্যেকটি ব্যাটালিয়নকে সতর্কাবস্থানে থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। নিয়মিত টহলের পাশাপাশি নৈশ টহল বাড়ানো হয়েছে।
জেইউ/বিএ