ভিজিডির চাল আত্মসাতের ঘটনা ধামাচাপার চেষ্টা


প্রকাশিত: ১২:১৪ পিএম, ০৪ জানুয়ারি ২০১৬

গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার ফজলুপুর ইউপি চেয়ারম্যানের ভিজিডির চাল আত্মসাতের ঘটনা হাতেনাতে ধরা পড়ার ১০ দিন পরও তার বিরুদ্ধে কোনো আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। এ ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হলেও তাদের প্রতিবেদন প্রকাশ করা হচ্ছে না। বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।

জানা গেছে, ফজলুপুর ইউনিয়নে ৩১৬ জন ভিজিডি কার্ডধারীর মধ্যে গত ২৭ ডিসেম্বর ৩০ কেজি করে চাল বিতরণের কথা ছিল। ফুলছড়ি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান ভিজিডি কার্ডধারীদের মাঝে চাল বিতরণ উদ্বোধনকালে সন্দেহবশত বিতরণের জন্য গুদামে রক্ষিত চালের বস্তা গণনার নির্দেশ দেন। এ সময় মাল বিতরণের দায়িত্বরত কর্মকর্তা ও উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আকরাম হোসেন গুদামের বস্তা গণনা করেন।

৩১৬ জন ভিজিডি কার্ডধারীর বিপরীতে ৩০ কেজি করে মোট ৯ হাজার ৪৮০ কেজি থাকার কথা থাকলেও সেখানে ৭ হাজার ৩০০ কেজি চাল পাওয়া যায়। এ খবর পেয়ে ফুলছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) শফিউল আলম ভূইঁয়া ওইদিন বিকেলে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে গুদাম ঘরটি সিলগালা করার নির্দেশ দেন। ফলে চাল বিতরণ স্থগিত হয়ে যায়।

পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ঘটনা তদন্তের জন্য উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নাহিদ সুলতানাকে আহ্বায়ক এবং উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আকরাম হোসেন ও উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা আব্দুল কাফী সরকারকে সদস্য করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। তদন্ত কমিটি ঘটনার সত্যতা পেয়ে এক মাসের মধ্যে দ্বিগুণ চাল ফেরত দেয়ার জন্য সুপারিশ করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে তদন্ত রিপোর্ট পেশ করেন।

ফজলুপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা ও সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবু সাঈদ সরকার বলেন, ইউপি চেয়ারম্যানের ভিজিডি কার্ডের চাল আত্মসাতের বিষয়টি হাতে নাতে প্রমাণিত। কিন্তু তদন্ত কমিটি অজ্ঞাত কারণে চেয়ারম্যানকে বাঁচানোর কৌশল হিসেবে আত্মসাৎকৃত চাল ফেরত দেয়ার সুপারিশ করেছেন।

তদন্ত কমিটির সদস্য উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আকরাম হোসেন চাল আত্মসাতের ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, চাল কম থাকার বিষয়টি লিখিতভাবে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানানো হয়েছে। এ ব্যাপারে তাদের কোনো বিশেষ উদ্দেশ্য নেই।

ফুলছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) শফিউল আলম ভূইঁয়া বলেন, তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। রিপোর্টের ভিত্তিতে পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে ভিজিডির ওই চাল বিতরণ স্থগিত রাখা হয়েছে। সেগুলো সিলগালা করা গুদাম ঘরে রক্ষিত রয়েছে। এদিকে চাল বিতরণ না হওয়ায় সংশ্লিষ্ট কার্ডধারীরা তাদের বরাদ্দকৃত চাল পাওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।

অমিত দাশ/এসএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।