ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা শুরু শুক্রবার
ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য (ডিআইটিএফ) মেলার ২১তম আসর বসছে আগামীকাল শুক্রবার। মাসব্যাপী এ মেলা শুক্রবার বিকেল ৩টায় উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার দুপুর ২টায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) যৌথ আয়োজনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।
মন্ত্রী জানান, প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত দর্শনার্থীরা মেলায় যাতায়াত করতে পারবেন। এক্ষেত্রে প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য প্রবেশ মূল্য ৩০ টাকা ও অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্য প্রবেশ মূল্য ২০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এবারের মেলায় প্রতিদিন গড়ে ১ লাখ দর্শনার্থীর উপস্থিতির আশা প্রকাশ করে লিখিত বক্তব্যে মন্ত্রী জানান, এ বছর আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় ১৩টি ক্যাটাগরিতে মোট ৫৫৩টি স্টল ও প্যাভিলিয়ন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়ন ৬০টি, জেনারেল প্যাভিলিয়ন ১০টি, রিজার্ভ প্যাভিলিয়ন ৩টি, ফরেন প্যাভিলিয়ন ৩৮টি অন্যতম।
এছাড়া প্রিমিয়ার মিনি প্যাভিলিয়ন ৩৬টি, জেনারেল মিনি প্যাভিলিয়ন ১৩টি, রিজার্ভ মিনি প্যাভিলিয়ন ৬টি, ফুড স্টল ২৫টি এবং ৫টি রেস্টুরেন্ট রয়েছে বলেও জানান মন্ত্রী।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এবার মেলায় বিশ্বের ২১টি দেশের মধ্যে নতুন দেশ হিসেবে অংশ নিচ্ছে মরিশাস, ঘানা, নেপালসহ ৭টি দেশ। এছাড়াও বিগত বছরে অংশগ্রহণ করা দেশগুলোর মধ্যে ভারত, পাকিস্তান, চীন, মালয়েশিয়া, ইরান, থাইল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্ক, সিঙ্গাপুর, অস্টেলিয়া, বৃটেন, দক্ষিণ কোরিয়া, জার্মানি, নেপাল, হংকং, জাপান এবং আরব আমিরাতও রয়েছে।
গত বছরের মত এবারো মেলার গেট হবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলের মতো। মেলায় এবারো থাকছে বঙ্গবন্ধু প্যাভিলিয়ন, মা ও শিশু কেন্দ্র, শিশুপার্ক, ইকোপার্ক, ই-শপ, ই-পার্ক, ফুড কোর্ট, পর্যাপ্ত টয়লেট, এটিএম বুথ, মসজিদ, পোস্ট অফিস, প্রতিবন্ধীদের জন্য অটিজম সেন্টার, মাদার কেয়ার সেন্টার এবং স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র।
এছাড়া ভোক্তাদের স্বার্থ সংরক্ষণ ও অভিযোগ নিষ্পত্তির জন্য জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের কর্মকর্তা ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের ব্যবস্থাও থাকছে।
সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্যমন্ত্রী আরো বলেন, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার মাধ্যমে দেশি-বিদেশি পণ্যের সঙ্গে ভোক্তাদের পরিচিত হওয়ার সুযোগ বাড়ে। সুষ্ঠু প্রতিযোগিতার মাধ্যমে উৎপাদকদের মানসম্মত পণ্য উৎপাদনে উৎসাহ জোগায়।
২০১৮ সালে স্থায়ীভাবে মেলা আয়োজনে পূর্বাচলে ২০ একর জমি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে উল্লেখ করে তোফায়েল আহমেদ বলেন, চীন সরকার রাজধানীর পূর্বাচলের ওই জায়গায় সারা বছর বিভিন্ন মেলা আয়োজনের জন্য স্থায়ী অবকাঠামো নির্মাণে সহযোগিতা করবে।
২০১০ সালের বাণিজ্য মেলায় ২২ কোটি ৮৬ লাখ, ২০১১ সালে ২৫ কোটি, ২০১২ সালে ৪৩ কোটি ১৮ লাখ, ২০১৩ সালে ১৫৭ কোটি, ২০১৪ সালে ৮০ কোটি এবং ২০১৫ সালে ৮৫ কোটি টাকার রফতানি আদেশ পাওয়া গেছে জানিয়ে এবার আরো বেশি রফতানি আদেশ পাওয়া যাবে বলে আশা করেন বাণিজ্য মন্ত্রী।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, নিরাপত্তার স্বার্থে এবার একই সঙ্গে পুলিশ, র্যাব ও আনসারের পাশাপাশি বিজিবির সদস্যরা মেলায় টহল দেবে। এছাড়া অগ্নি দুর্ঘটনা এড়াতে ফায়ার ব্রিগেডের ব্যবস্থা ও মেলার চারপাশে ১০০টি সিসি টিভি থাকছে।
এবারের মেলায় প্রধান প্রধান পণ্য তালিকার মধ্যে মেশিনারীজ, কার্পেট, কসমেটিক্স, ইলেকট্রিক্যাল, পাটজাত পণ্য, লেদার, স্পোর্টস গুডস এবং জুয়েলারি অন্যতম।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন- বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন, রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান শুভাশীষ বসূ, এফবিসিসিআই এর প্রেসিডেন্ট আব্দুল মাতলুব আহমেদ প্রমুখ।
এসআই/আরএস/পিআর