রাজশাহীতে পাল্টাপাল্টি অভিযোগে ভোটগ্রহণ শেষ
বিচ্ছিন্ন ঘটনা ও পাল্টাপাল্টি অভিযোগের মধ্য দিয়ে শেষ হলো রাজশাহীর ১৩ পৌরসভার ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। এছাড়া সংঘর্ষ, মেয়র প্রার্থী লাঞ্ছিতের ঘটনাও ঘটেছে কোনো কোনো কেন্দ্রে। তবে কঠোর নিরাপত্তার বলায় থাকায় রাজশাহীতে বড় ধরনের কোনো ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
রাজশাহীর ১৩টি পৌরসভায় এবার মোট ভোটারের সংখ্যা ছিল ২ লাখ ৪৭ হাজার ২৩৮ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ১ লাখ ২৩ হাজার ৫৯৩ জন ও পুরুষ ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ২৩ হাজার ৬১৪ জন। ১৩টি পৌরসভায় মোট ১৩৮টি ভোট কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ হয়েছে। এবার ভোটযুদ্ধে অংশ নেন মেয়র পদে ৫২, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৪৬৮ ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ১৩৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
রাজশাহী জেলায় ১৩৮টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ৩৯টি কেন্দ্র গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করে নেয়া হয় বাড়তি নিরাপত্তা। একই সঙ্গে রাজশাহী জেলার গুরুত্বপূর্ণস্থানে বসানো হয় ১৬টি চেকপোস্ট। নির্বাচনে যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে স্টাইকিং ফোর্স হিসেবে মাঠে ছিল র্যাব পুলিশের পাশাপাশি ১৫ প্লাটুন বিজিবি।
এছাড়া, রাজশাহী বিভাগের ৮ জেলার ৪৯টি পৌরসভার ৭৯৪টি ভোটকেন্দ্রে ৯ হাজার ৫২১ জন পুলিশ, সাড়ে ৯ হাজার আনসার সদস্য দায়িত্ব পালন করে। বিভাগের ৮ জেলায় ২৭৯টি ভোট কেন্দ্র গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এবার নির্বাচনে বিভাগের ৮ জেলায় ৯৬টি চেকপোস্ট বসানো হয়েছে।
এদিকে, ভোটগ্রহণ শুরুর পর রাজশাহীর বাগমারা তাহেরপুর পৌর সভায় বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী আবু নাসীম মোহম্মদ সামসুর রহামন পিন্টুকে বিষুপাড়া ভোট কেন্দ্রে লাঞ্ছিত করে আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থীর কর্মীরা। একই সঙ্গে ৬ নং ওয়ার্ডে বিএনপির কর্মীর উপর হামলা চালায় আওয়ামী লীগ কর্মীরা। এসময় ছাত্রদলের দুই নেতাকে মারপিট করা হয়। এছাড়া ৭ নং ওয়ার্ডে ভোটারদের প্রভাবিত করার অভিযোগে আটক করা হয় তাহেরপুর পৌর সভার যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানাকে। পরে পুলিশের কাছে তাকে সোপর্দ করার পর ছেড়ে দেয়া হয়। একই সঙ্গে ভবানীগঞ্জ পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ডের সাদোপাড়া কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সমর্থকদের মাঝে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে বিজিবি সদস্যরা কয়েক রাউন্ড ফাঁকাগুলি ছুড়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে।
অপরদিকে, নওহাটা পৌর সভার পুঠিয়া পাড়া কেন্দ্রে উত্তেজনা সৃষ্টি হলে বিজিবি ও পুলিশ লাঠি চার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এছাড়া রাজশাহীর কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
সকাল ৮টা থেকে ভোট শুরু হওয়ার পর দুপুরের মধ্যেই প্রায় ৬০ ভাগ ভোট কাস্ট হয় বলে বেশির ভাগ ভোট কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসাররা জানান। সকালে কনকনে শীতের কারণে বেশির ভাগ ভোটকেন্দ্র ছিল ফাঁকা। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে ভোটার উপস্থিতি। বিশেষ করে এবার নারী ভোটারদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মত। প্রতিটি কেন্দ্রে নারীদের লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট প্রয়োগ করতে দেখা যায়। একই সঙ্গে দুপুরের পর থেকে পুরুষ ভোটারদের উপস্থিতি বাড়তে থাকে। বিকেল সাড়ে চারটায় ভোট গ্রহণ শেষ হয়। তবে বেশির ভাগ ভোট কেন্দ্রে কোনো ভোটার না থাকার জন্য কেন্দ্র বন্ধ করে দেয়া হয়।
শাহরিয়ার অনতু/একে/পিআর