সোনারগাঁয়ে দুই এমপির নিরব লড়াই

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৩:০৮ এএম, ২৯ ডিসেম্বর ২০১৫
বাম থেকে আ.লীগের মেয়র প্রার্থী ফজলে রাব্বি, এমপি বাবু, এমপি খোকন এবং বিদ্রোহী প্রার্থী সাদেকুর রহমান

পৌরসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে আওয়ামী লীগের (বিদ্রোহী প্রার্থী) স্বতন্ত্র দাবিদার সাদেকুর রহমানের পক্ষে জাতীয় পার্টির এক এমপিসহ আওয়ামী লীগের একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট কাজ করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আর নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের প্রভাবশালী এমপি শামীম ওসমান প্রকাশ্যে না থাকলেও পর্দার অন্তরালে সাদেকুর রহমানকে বিজয়ী করতে ছক তৈরি করেছে।

গতবার সাদেক জামায়াত-বিএনপির সমর্থন নিয়ে মেয়র নির্বাচিত হয়েছিল। আর সাদেক সরকারি দলের সুবিধা গ্রহণ করতে ভোল্ড পাল্টে সরকারি দলের সমর্থন নেয়ার মিশন নিয়েও ব্যর্থ হয়। কিন্তু আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়েও নির্বাচন থেকে পিছু হটেনি জামায়াতের সেই সাদেক। আর দলীয় প্রার্থীর পক্ষে না থেকে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ফজলে রাব্বিকে পরাজিত করে সাদেককে নির্বাচিত করার জন্য দুই এমপি নীল নকশা তৈরি করছে বলে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।

এতে করে ক্ষমতাসীন দলের দু’পক্ষের মধ্যে চলছে নির্বাচনী লড়াই। তবে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ফজলে রাব্বির পক্ষে কাজ করছেন আড়াইহাজারের এমপি নজরুল ইসলাম বাবু ও সোনারগাঁয়ের সাবেক এমপি কায়সার হাসনাত। ফজলে রাব্বিকে নির্বাচিত করতে কুট-কৌশল চালিয়ে যাচ্ছে। সোনারগাঁয়ে নির্বাচনে তিন এমপি ও সাবেক এক এমপির লড়াই চলছে অন্তরালে। প্রভাবশালী আওয়ামী লীগের নেতাদের মল্লযুদ্ধে কার গলায় পড়বে বিজয়ের মালা।

এদিকে এই পৌরসসভা নির্বাচনে সরকারি দলের অন্তঃকোন্দলে মেয়র প্রার্থী সাদেকুর রহমান সাদেক ও ফজলে রাব্বিকে নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করায় সুবিধা গ্রহণ করছে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মোশারফ হোসেন। তবে সারা দেশে বিএনপির প্রার্থীরা প্রকাশ্যে গণসংযোগ করতে না পারলেও সোনারগাঁয়ে সরকারি দলের নেতাদের মাঝে প্রার্থিতা নিয়ে অন্তঃকোন্দলে থাকায় বিএনপির প্রার্থী শান্তিপূর্ণভাবে গণসংযোগ চালাতে পেরেছে এবং সুবিধা গ্রহণ করতে সক্ষম হয়েছে। একদিন পর নির্বাচন শেষ মুহূর্তে এমপিদের বিরোধিতা কোনদিক গিয়ে দাঁড়ায় তা নিয়ে ভোটারদের মাঝে চলছে নানা ধরনের গুঞ্জন।

জানা যায়, স্থানীয় নির্বাচন দলীয় প্রতীকে হওয়ায় সোনারগাঁ পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে শুরুতেই এমপিদের মাঝে অন্তঃকোন্দল শুরু হয়। উপজেলা আওয়ামী লীগ ও স্থানীয় এমপি সাদেকুর রহমান সাদেকের নাম কেন্দ্রে প্রস্তাব পাঠায়। আর আওয়ামী লীগের আরেকটি পক্ষ এবং এমপি নজরুল ইসলাম বাবু ফজলে রাব্বির নাম প্রস্তাব দেয়। এর আগে সাদেকুর রহমান সাদেককে আওয়ামী লীগ থেকে সমর্থন দেয়ার মিশনে শামীম ওসমান ও লিয়াকত হোসেন খোকাকে ম্যানেজ করে একটি বিশাল সমাবেশের আয়োজন করেন। ওই সমাবেশে বিএনপি-জামায়াতের বর্তমান মেয়র সাদেক আওয়ামী লীগে যোগদান করেন।

সমাবেশের আগে শামীম ওসমানের আগমন উপলক্ষে সাদেক বিশাল ভুড়িভোঁজের আয়োজন করেছিল। পরে উপজেলা আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সাধারণ নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক সমলোচনার সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে সাদেক আওয়ামী লীগের মনোনয়ন থেকে বঞ্চিত হওয়ার পরও তিনি নির্বাচন থেকে পিছু হটেনি। তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছে। তবে আওয়ামী লীগের একটি অংশ বলছে সাদেক হচ্ছে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী। আর সাদেকও এটা মনে করছেন।

আওয়ামী লীগের প্রার্থী ফজলে রাব্বি জাগো নিউজকে বলেন, দলীয় মনোনয়ন নিয়ে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করছি। আর বিগত সময়ের বিএনপি-জামায়াতের প্রার্থী সাদেকের পক্ষে আওয়ামী লীগের একটি শক্তিশালী পক্ষ কাজ করছে। দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে তারা সাদেককে নির্বাচিত করতে নীলনকশা তৈরির ব্যর্থ চেষ্টা করছে। শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে সবাইকে নৌকা প্রতীকে ভোট দেয়ার আহ্বান করেন তিনি।      
 
শাহাদাত হোসেন/এসএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।