ফরিদপুরে বিদ্রোহী প্রার্থী নিয়ে বিপাকে আ.লীগ
আজ রাত ১২টায় শেষ হচ্ছে পৌর নির্বাচনের সব ধরনের প্রচার-প্রচারণা। তাই শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে ফরিদপুরের বোয়ালমারী পৌরসভা নির্বাচনের প্রচারণা। মেয়র পদে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জামায়াত এবং আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী লড়ছেন। তাই এই পৌর নির্বাচনের লড়াইটা হবে হাড্ডাহাড্ডি।
প্রচণ্ড শীত উপেক্ষা করে দুপুর থেকে মধ্য রাত পর্যন্ত প্রার্থীরা ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। ঘরে বসে নেই দলীয় নেতাকর্মী ও প্রার্থীর আত্মীয় স্বজনরাও। সরকার দলীয় প্রার্থীর পক্ষে ফরিদপুর-১ আসনের সাংসদ আব্দুর রহমান এর বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন এর অভিযোগ উঠেছে। আর এরই মধ্যে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনে তাকে নোটিশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। আর এ কারণেই নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার শঙ্কায় বোয়ালমারী পৌরবাসী।
তবে এই পৌরসভায় ত্রিমুখী লড়াই হবে বলে মনে করছেন ভোটারেরা। আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক নিয়ে লড়ছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান মৃধা পিকুল, বিএনপির ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে ভোট চাইছেন বর্তমান মেয়র ও পৌর বিএনপির সদস্য আবদুস শুকুর শেখ। এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জাময়োতের নিয়ামুল হাসান প্রার্থী হলেও ভোটের মাঠে তার দেখা নেই। জগ প্রতীক নিয়ে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মোজাফফর হোসেন বাবলু। আওয়ামী লীগ নেতার ‘স্বতন্ত্র’ প্রার্থী হওয়ায় বেশ বিপাকে পড়েছে আওয়ামী লীগ সমর্থিত নৌকা প্রতীক পাওয়া শাহজাহান মৃধা পিকুল।
বোয়ালমারী পৌরসভায় মেয়র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৪ জন। সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী রয়েছেন ৩১ জন আর সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর প্রার্থী রয়েছেন ১২ জন।
সৎ ও নিষ্ঠাবান এবং যোগ্য ব্যক্তিকে ভোট দেয়ার ইচ্ছা ভোটারদের। তবে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে কিনা তা নিয়ে ভোটারদের মধ্যে সংশয় আছে। ভোটারা মনে করছেন, ত্রিমুখী লড়াইয়ের কারণে সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে।
সাবেক সাংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহ মো. আবু জাফর বলেন, আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী থাকায় বিএনপির প্রার্থী সুবিধাজনক অবস্থায় আছে। এছাড়া এই সরকারের অত্যাচার, হামলা-মামলা ও গুম-খুনের জবাব দেবে ভোটারা।
আওয়ামী লীগের গলার কাটা হিসেবে বিদ্রোহী প্রাথী মো. মোজাফফর হোসেন বাবলু বলেন, নির্বাচনে অংশ নিতে বেশির ভাগ ওয়ার্ড কমিটি আমাকে মনোনয়ন দিয়েছে। তাই ভোটাররা ভোট দিয়ে আমাকেই জয়ী করবে বলে আমার বিশ্বাস।
নৌকার প্রার্থী মো. শাহজাহান মৃধা পিকুল বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে নৌকা প্রতীক দিয়েছেন। ভোটাররা পৌর উন্নয়নের কথা বিবেচনা করে নৌকা প্রতীকে ভোট দিবে এবং আমাকেই বিজয়ী করবে।
বর্তমান মেয়র ও বিএনপির প্রার্থী আবদুস শুকুর শেখ বলেন, গত সংসদ নির্বাচনে নৌকা ও ধানের শীষের লড়াই না হওয়ায় ভোটাররা আগামী ৩০ডিসেম্বরের নির্বাচনের অপেক্ষায় আছে। আমি বিগত দিনে পৌরসভার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করেছি আর পৌরবাসী সুযোগ দিলে আগামীতে অসমাপ্ত কাজগুলো সমাপ্ত করে একটি আধুনিক পৌরসভা উপহার দিব।
১০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা নিয়ে বোয়ালমারী পৌরসভায় এ বছর ১৮ হাজার ৯শ ৭৪ জন ভোটার তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন। আর প্রশাসনের পক্ষ থেকে নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে বলে জানা যায়।
এসএম তরুন/এসএস/আরআইপি