বরিশালে আ.লীগ-বিএনপির পাশে নেই শরিকরা


প্রকাশিত: ০৫:৪১ পিএম, ২৩ ডিসেম্বর ২০১৫

বরিশাল জেলার ছয় পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মেয়র প্রার্থীদের প্রচারণায় পাশে নেই জোটের শরিকরা। ছয়টি পৌরসভায় জামায়াতকে ছাড়াই বিএনপির মেয়র পদপ্রার্থীরা নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন।

নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জেলার ছয় পৌরসভার কোনোটিতেই প্রকাশ্যে বিএনপির প্রার্থীদের সঙ্গে নেই ২০-দলীয় জোটের শরিক জামায়াতে ইসলামী। বিএনপি-সমর্থিত কাউন্সিলরদের পক্ষেও মাঠে নামেনি জামায়াত। নির্বাচনী প্রচারে স্থানীয় জামায়াত কিংবা শিবিরের নেতা-কর্মীরা এখন পর্যন্ত তাদের সঙ্গে নেই।

তবে জামায়াতের দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানায়, বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থীদের পক্ষে কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন জামায়াতের নেতা-কর্মীরা। তাদেরকে সেভাবেই নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

একই অবস্থা ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের প্রার্থীদেরও। তাদের পক্ষেও প্রচারণায় দেখা যাচ্ছে না ১৪ দলের অন্য শরিকদের। তবে আওয়ামী লীগ নেতাদের দাবি, তাদের মনোনীত প্রার্থীদের পক্ষে নীরবে মাঠে কাজ করে যাচ্ছেন জাতীয় পার্টি এবং ১৪ দলের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টি ও জাসদ নেতাকর্মীরা।

এরপরও প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণা তুমুল লড়াই জমে উঠেছে বরিশালের ৬ পৌরসভায়। ভোটের লড়াইয়ে প্রধান দুই দল সমানে সমান প্রচারণা চালানোয় জনগণের মধ্যেও বেড়েছে উৎসাহ উদ্দীপনা। তারা অধির আগ্রহে তাকিয়ে আছেন ৩০ ডিসেম্বরের ভোটের দিকে।

এদিকে, নির্বাচনের শেষ পর্যায়ে বিভিন্ন পৌরসভায় ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে টুকটাক আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠলেও এসব নিয়ে তেমন মাথাব্যাথা নেই বিএনপির প্রার্থীদের।

মেহেন্দিগঞ্জে বিএনপির মেয়র প্রার্থী গিয়াসউদ্দিন দিপেন বলেন, ভোটের মাঠে ক্ষমতাসীন প্রার্থীর বিরুদ্ধে আচরনবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ থাকলেও সেগুলো গুরুত্ব না দিয়ে নিজের প্রচারণায় মনোনিবেশ করেছেন তিনি। তার আশঙ্কা ভোটের আগের দিন পর্যন্ত যে সুষ্ঠু পরিস্থিতি থাকবে, ভোটের দিন তার উল্টো পরিবেশও হতে পারে। মেহেন্দিগঞ্জে ২০ দলীয় জোটের মধ্যে বিএনপি ছাড়া একমাত্র জামায়াতের নেতাকর্মীরা আড়ালে থেকে ধানের শীষের পক্ষে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন বলে জানান মেয়র প্রার্থী দিপেন।

মুলাদী পৌরসভায় বিএনপির মেয়র প্রার্থী আসাদ মাহমুদ বলেন, তার বেশ কিছু পোস্টার ছিড়ে ফেলা হয়েছিল। তিনি আবার পোস্টার লাগিয়েছেন। এখন দুই দলের সমানে সমান প্রচার চলছে।

গৌরনদী পৌরসভায় বিএনপির মেয়র প্রার্থী শরীফ শফিকুর রহমান স্বপন জানান, প্রতিনিয়ত তার নির্বাচনী পোস্টার-ব্যানার ছিড়ে ফেলা হচ্ছে। হুমকি-ধামকি দেয়া হচ্ছে। এরমধ্যেও বিএনপি শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তুলছে। কোনোভাবেই ক্ষমতাসীনদের খালি মাঠে গোল দিতে দেয়া হবে না বলে জানান তিনি।

উজিরপুর পৌরসভায় আওয়ামী লীগ মনোনীন মেয়র প্রার্থী মো. গিয়াসউদ্দিন বেপারী বলেন, তিনি আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী হলেও মহাজোট এবং ১৪ দলের শরিক জাতীয় পার্টি, ওয়ার্কার্স পার্টি এবং জাসদ নেতাকর্মীরা তার পক্ষে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে

একই কথা বলেছেন, গৌরনদী পৌরসভায় আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী হারিছুর রহমান হারিছ। তিনি বলেন, স্থানীয়ভাবে মহাজোট এবং ১৪ দলের শরিকদের সমর্থন রয়েছে। তবে মাঠে কাজ করছে মূলত আওয়ামী লীগ।

বরিশাল মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমীর আমিনুল ইসলাম খসরু জানান, বিএনপির প্রার্থীদের পক্ষে প্রচাণায় মাঠে না দেখা গেলেও জামায়াতের নেতাকর্মীরা কৌশলে কাজ করে যাচ্ছেন। জামায়াত নেতা-কর্মীরা বিএনপির প্রার্থীকেই ভোট দেবেন। জামায়াতের নিজস্ব যে ভোট ব্যাংক আছে তাদের রায়ও বিএনপির প্রার্থীর পক্ষেই যাবে বলে তিনি আশা ব্যক্ত করেন।

বিএনপি’র পৌর নির্বাচন মনিটরিং সেলের বরিশাল বিভাগীয় আহ্বায়ক সাবেক প্রতিমন্ত্রী বেগম সেলিমা রহমান বলেন, বিএনপি মনোনীত প্রার্থীদের পক্ষে ২০ দলের সমর্থন রয়েছে। বিএনপি বড় দল বিধায় বিএনপির প্রচারণাই সবার চোখে পড়ছে। তবে জোটের অন্যান্য শরিক দলও বিএনপির প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন। জামায়াতের কিছুটা প্রশাসনিক সমস্যা থাকায় তারা পুলিশের হয়রানি এড়িয়ে কৌশলে বিএনপির মেয়র প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন।

বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক অ্যাডভোকেট তালুকদার মো. ইউনুস এমপি বলেন, মেয়র প্রার্থী মনোনয়ন দিয়েছে আওয়ামী লীগ। বিভিন্ন পৌরসভায় তাদের মেয়র প্রার্থীদের পক্ষে মহাজোট এবং ১৪ দলের শরিকরা প্রকাশ্যে প্রচারণা চালাচ্ছে, আবার কোথাও তারা নীরব সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের।

সাইফ আমীন/বিএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।