রফতানি মূল্য কমলেও এখনো আসেনি নতুন এলসির পেঁয়াজ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১০:৩৭ এএম, ১৪ ডিসেম্বর ২০১৫

ভারতে পেঁয়াজের মূল্য কমিয়ে দিলেও এখনো আসেনি নতুন এলসির ভারতীয় পেঁয়াজ। তবে আগামী সপ্তাহ থেকে ভারতীয় পেঁয়াজ আসা শুরু হবে বাংলাদেশের বাজারে। এর ফলে দেশীয় বাজারে পেঁয়াজের মূল্য কমে আসবে বলে ধারণা করছেন ব্যবসায়ীরা।

ভারতীয় কাঁচামাল পণ্যের রফতানি মূল্য কয়েক মাস ধরে বেড়ে চলায় দেশের সর্ববৃহত্তম স্থলবন্দর বেনাপোল দিয়ে ভারত থেকে আমদানি বাণিজ্যে ধস নেমেছে। যা অন্যান্য সময়ের চেয়ে ৯৫ শতাংশ কম বলে জানা গেছে। এতে একদিনে প্রচুর পরিমাণে রাজস্ব আয় থেকে সরকার বঞ্চিত হচ্ছে। অন্যদিকে দেশীয় বাজারে এসব পণ্যের মূল্য বেড়ে চলেছে।

বন্দর সূত্রে জানা যায়, চাহিদা মেটাতে গত মাসের প্রথম দিকেও প্রতিদিন ভারত থেকে প্রায় শতাধিক ট্রাক বিভিন্ন প্রকারের কাঁচামাল আমদানি হতো। এসব আমদানি হওয়া পণ্যের মধ্যে রয়েছে, মাস, পেঁয়াজ, গম, ঝাল, রসুন, আদা, চিনি, পান পাতাসহ বিভিন্ন প্রকারের পণ্য। গত কয়েক মাসে ভারতে কাঁচামালের রফতানি মূল্য আকাশ ছোয়া বৃদ্ধিতে ব্যবসায়ীরা মুনাফাতো দূরের কথা খরচ উঠাতে পারছেন না।

এদিকে ছয় মাস পর বাংলাদেশে পেঁয়াজ রফতানিতে ৩শ মার্কিন ডলার কমিয়েছে ভারত। ৭০৫ মার্কিন ডলার থেকে কমিয়ে ৪০৫ মার্কিন ডলারে পেঁয়াজ রফতানির নিদের্শনা দিয়েছে ভারতের ন্যাশনাল এগ্রিকালচার কো-অপারেটিভ মার্কেটিং ফেডারেশন অব ইন্ডিয়া (ন্যাফেড)।

আন্তর্জাতিক বাণিজ্যনীতিকে উপেক্ষা করে কয়েক দফায় পেঁয়াজের রফতানি মূল্য বাড়ায় ভারত। সে দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম কমাতে ও জোগান বাড়ানোর অজুহাতে গত ২৬ জুন ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার এক ধাক্কায় প্রতি টনে পেঁয়াজের রফতানি মূল্য ৪২৫ মার্কিন ডলার থেকে বাড়িয়ে ৭০০ ডলার করে। অতিরিক্ত ২৭৫ মার্কিন ডলার বাড়ানোর ঘোষণা দেওয়ায় বাংলাদেশে পেঁয়াজের বাজারে অস্থিতিশীলতা দেখা দেয়। বেড়ে যায় পেঁয়াজের দাম। প্রতি কেজি পেঁয়াজের ক্রয় মূল্য ৫৫ টাকা ৩০ পয়সা হওয়ায় পেঁয়াজ আমদানিতে অনাগ্রহ দেখায় এদেশের আমদানিকারকরা।

খুলনার আমদানিকারক হামিদ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী আব্দুল হামিদ ও সিএন্ডএফ প্রতিনিধি মিন্নু রহমান জানান, শুক্রবার ভারতের ন্যাফেড প্রতি মেট্রিক টন পেঁয়াজের রফতানি মূল্য ৩শ মার্কিন ডলার কমিয়েছে। ছয় মাস আগে ৪২৫ মার্কিন ডলার থেকে বাড়িয়ে ৭০৫ মার্কিন ডলার নির্ধারণ করে ভারত। বাংলাদেশে পেঁয়াজের চাহিদা বেশি থাকায় ভারতের এ সিদ্ধান্তে বাংলাদেশে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া পড়ে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

ভারতের পেট্টাপোল বন্দরের আমদানি কারক জেএল গাডওযার এর পরিচালক টিংকু মন্ডল বলেন, প্রতি মেঃ টন পেঁয়াজের রফতানি মূল্য ৩শ ডলার কমানো হয়েছে। ফলে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ রফতানি বাড়বে বহুগুণ।
 
বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন বলেন, আগে ৪০৫ ডলার মূল্যে ভারত থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ বন্দরেই প্রতি কেজির দাম প্রকার ভেদে ৩০/৩৫ টাকা পড়েছিল। একই পেঁয়াজ ৭০০ ডলার মূল্যে আমদানি করলে কেজিপ্রতি দাম পড়ে ৫৭ থেকে ৬০ টাকা। ভারত তিনশ ডলার পেঁয়াজের মূল্য কমানোর ফলে পেঁয়াজের দাম অনেক কমে যাবে বলে জানান তিনি। বর্তমানে বাজারে পেঁয়াজের দাম ছিল অস্থিতিশীল। এখন দেশি পেঁয়াজের বাজার স্থতিশীল হয়ে আসবে বলে জানান তিনি।

ভারতের পেট্রাপোল বন্দর ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরোর্য়াড়িং স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কার্ত্তিক চক্রবর্তী জানান, ভারতে পেঁয়াজের সঙ্কট চলছিল। দক্ষিণ ভারতের নতুন পেঁয়াজের আগমনও পেঁয়াজের মূল্য কমাতে পারেনি। নতুন মূল্যে পেঁয়াজ রফতানির নির্দেশনা দিয়ে রোববার দুপুরে ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত একটি পত্র ফ্যাক্সযোগে ভারতের পেট্রাপোল কাস্টমসে এসেছে বলে তিনি জানান।

বেনাপোল চেকপোস্ট কাস্টমস কার্গো শাখার সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা জোব্বার হোসেন বলেন, মূল্য কমানোর বিষয়ে ভারতীয় কাস্টমস কর্তৃপক্ষ তাদের এখনো কিছু জানায়নি। তবে কোনো ব্যবসায়ী পেঁয়াজ আমদানি করলে কাস্টমসের নির্ধারিত করা মূল্যে তা খালাস দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

এমএএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।