আমিরের সামনে দরজা খুলে দিল বিপিএল


প্রকাশিত: ০১:২৭ পিএম, ০৪ ডিসেম্বর ২০১৫

দুঃসময় কাটিয়ে সুসময় আসবেই। সেই সুসময়টারই দেখা পেতে যাচ্ছেন যেন নিষেধাজ্ঞা থেকে ফেরা পাকিস্তানের পেসার মোহাম্মদ আমির। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করার কারণে ডাক পেতে যাচ্ছেন পাকিস্তান জাতীয় দলে। এমনটাই ইঙ্গিত দিলেন দেশটির ক্রিকেট বোর্ডের চেয়ারম্যান শাহরিয়ার খান এবং কোচ ওয়াকার উইনুস।

স্পট ফিক্সিংয়ে জড়িত থাকার কারণে ৫ বছর নিষিদ্ধ ছিলেন। গত জানুয়ারি থেকে পাকিস্তানের ঘরোয়া ক্রিকেটে ফিরলেও তার সামনে হাজির বাধার পাহাড়। মাঠের খেলায় দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করলেও, মাঠের বাইরের নানা জটিলতায় ক্রিকেটের মূল ট্র্যাকে ফেরাটাই যেন দুঃস্বপ্ন হয়ে দেখা দিয়েছিল আমিরের সামনে।

গত সেপ্টেম্বরে নিষেধাজ্ঞা থেকে মুক্তি মিললেও পাকিস্তান জাতীয় দলে তার ‘মুক্তি’ হবে কবে সেটা নিয়েই আমির ছিলেন ঘোর দ্বিধা-দ্বন্দ্বে। এরই মাঝে বিপিএলে একই দলে খেলা নিয়ে মোহাম্মদ হাফিজ নিলেন প্রকাশ্য অবস্থান। তিনি আমিরের সাথে একই ড্রেসিংরূম ব্যবহার করতে রাজি নন।

এত এত সমালোচনা আর বাধার পাহাড় যেখানে সেখানে আমির কি আর করবেন, সব বাদ দিয়ে মনযোগ দিলেন মাঠের খেলায়। বিপিএলে এসে চিটাগাং ভাইকিংসের হয়ে শুরু করে মাঠ মাতানো। প্রথম ম্যাচ থেকেই সেই দুরন্ত আমিরের দেখা মিলল। চিটাগাং ভাইকিংসের অবস্থা যাই হোক, দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করে যেতে থাকলেন তিনি।

এই পারফরম্যান্সেরই পুরস্কার মিলতে যাচ্ছে তার। বিপিএল মোহাম্মদ আমিরের সামনে খুলে দিল জাতীয় দলের দরজা। অসাধারণ পারফরম্যান্স করার কারণে, পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের চেয়ারম্যান শাহরিয়ার খান ইঙ্গিত দিয়ে দিলেন তাকে জাতীয় দলে ফেরানোর বিষয়ে। পাকিস্তান দলের কোচ ওয়াকার ইউনুসও ইতিবাচক আমিরের ব্যাপারে। তিনিও চান, জাতীয় দলে ফিরে আসুক আমির।

শাহরিয়ার খান এবং ওয়াকার ইউনুস- দুজনই মোহাম্মদ আমিরের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। লাহোরে ওয়াকার ও প্রধান নির্বাচক হারুন রশিদের সঙ্গে বৈঠকের পর শাহরিয়ার খান বলেন, ‘আমরা আমিরকে বিবেচনা করতে পারি।’

কিন্তু আমিরকে যদি দলে ফেরানো হয়, তাহলে অন্যদের মধ্যে যে প্রতিক্রিয়া তৈরী হবে তা কিভাবে সামাল দেবে টিম ম্যানেজমেন্ট? বিষয়টা মাথায় রেখেছেন পিসিবি চেয়ারম্যানও। তিনি বলেন, ‘দলের অন্যসব সিনিয়র ক্রিকেটার এবং আমিরকে একসাথে ডাকব। সেখানে সবার সামনে আমিরকে বলব, তাকে অবশ্যই ভদ্রতা ও নম্রতা বজায় রাখতে হবে।’

আমিরের পারফরম্যান্সে সন্তুষ্ট শাহরিয়ার খান যোগ করেন, ‘গত চার-পাঁচ মাস ধরে সে (আমির) দারুণ পারফর্ম করছে। সে আমাদেরকে জাতীয় দলে পুনরায় বিবেচনার বার্তাই দিচ্ছে। যদি কোচ ও নির্বাচকরা তার ব্যাপারে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেন তাহলে বোর্ড অব গভর্নরসকে অবহিত করেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেব।’

আমিরকে জাতীয় দলে ফেরানোর ব্যাপারে একমত কোচ ওয়াকারও। তিনি বলেন, ‘আমিরকে বিপিএলে খেলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। সে এখন খুবই ভালো ফর্মে আছে। যা ইতিমধ্যে প্রমাণও হয়েছে। আইসিসি ও পিসিবিকে দেখিয়েছে, সে সঠিক পথেই রয়েছে। তাই তাকে আরেকটি সুযোগ দেওয়া উচিত।’

পাকিস্তানের সিনিয়র ক্রিকেটাররা যতই আমিরের বিরোধিতা করুক, জাতীয় দলের ফর্ম বিবেচনায় তাকে অন্তর্ভূক্ত করেই নিতে হবে। কারণ ওয়ানডেতে একের পর এক নাস্তানাবুধ হতে হচ্ছে আজহার আলির দলকে। শেষ চারটি ওয়ানডে সিরিজের দুটিতেই হেরেছে তারা। টি-টোয়েন্টিতেও বাজে অবস্থা। সামনেই আবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। ফলে শিগগির পাকিস্তান দলে আমির ডাক পেয়ে গেলে তাতে অবাক হওয়ার কিছুই থাকবে না। আর সিনিয়রদের বিরোধিতা! সেটা পিসিবিই মিটিয়ে দেবে সবাইকে ডেকে নিয়ে।

প্রসঙ্গত, চিটাগাং ভাইকিংস এবারের বিপিএলে বাজে পারফরম্যান্স করলেও, ব্যাক্তিগত পারফরম্যান্সে অনেককে ছাড়িয়ে মোহাম্মদ আমির। এ পর্যন্ত ৮ ম্যাচ খেলে নিয়েছেন ১১ উইকেট। এক ম্যাচে ৩০ রান দিয়ে নিয়েছেন ৪ উইকেট। রানও দিয়েছেন মোটামুটি কম। ৫.৭১ ইকনোমি রেটে ৮ ম্যাচে ১৫৯টি।

উল্লেখ্য, ২০১০ সালে লর্ডস টেস্টে ফিক্সিং কেলেঙ্কারির দায়ে মোহাম্মদ আসিফ ও সালমান বাটের সঙ্গে পাঁচ বছর নিষিদ্ধ হয়েছিলেন আমির। গত সেপ্টেম্বরে নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর আবার খেলায় ফিরেছেন।

আইএইচএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।