আজ কানাইঘাট হানাদার মুক্ত দিবস
আজ ৪ ডিসেম্বর (শুক্রবার)। সিলেটের সীমান্ত উপজেলা কানাইঘাট হানাদার মুক্ত দিবস। আজকের এই দিনে সম্মুখযুদ্ধে টিকতে না পেরে পাকবাহিনী মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে আত্মসমর্পণ করে। এরপর থেকে এই দিনটি কানাইঘাট মুক্ত দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।
১৯৭১ সালের ৪ ডিসেম্বর সূর্য ওঠার আগেই কানাইঘাটে মুক্তিবাহিনী ও পাক-হানাদার বাহিনীর মধ্যে মুখামুখি লড়াই শুরু হয়। চারিদিকে গুলির বিকট শব্দে ঘুম ভাঙে মুক্তিপাগল সাধারণ মানুষের। মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধে ব্যর্থ হয়ে আত্মসমর্পণ করে পাক হানাদার বাহিনী।
২৫ মার্চ মধ্য রাতে পাক হানাদার বাহিনী বাঙালিদের ওপর হামলা চালালেও মূলত সিলেটের কানাইঘাট উপজেলায় পাক হানাদার বাহিনী নিরস্ত্র বাঙালিদের ওপর হামলা শুরু করে জুনের মাঝামাঝি সময়ে। দীর্ঘ সময়ে যুদ্ধ করে শত লাশের বিনিময় অবশেষে ৪ ডিসেম্বর হানাদার মুক্ত হয় কানাইঘাট উপজেলা।
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নাজমুল হক বলেন, সর্বশেষ তুমুল যুদ্ধ হয় উপজেলার নগলার ব্রিজ হতে ডাকবাংলো চাপনগর ও ভাড়ারি মাটিজুড়ে। এ সময় পাক বাহিনীর পক্ষে নেতৃত্ব দেন ক্যাপ্টেন বসারত আর মুক্তি বাহিনীর নেতৃত্ব দেন ৪নং সেক্টর কমান্ডার সিআর দত্ত বীর বিক্রম।
তিনি আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় উপজেলার ১নং লক্ষ্মীপ্রসাদ ইউপিকে ২য় ভারত বলা হতো আর মুক্তিযোদ্ধাদের দূর্গ ছিল লোভাছড়া চা-বাগান। আর বাগানের কারখানাটি ধ্বংস করা হয়েছিল ৪নং সেক্টরের ক্যাপ্টেন মাহবুবুর রব সাদির নেতৃত্বে। কারণ দেশ ভাগের আগে বাগানটি শোষণ করত পাকিস্তানিরা। এ উপজেলা থেকে মোট ৩০৯ জন তালিকাভুক্ত মুক্তিযোদ্ধা এ যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা নজমুল হক আরও বলেন, পাকিস্তানি বেলুচি রেজিমেন্টের সদস্যেদের হাতে এ উপজেলায় প্রথম শহীদ হয়েছেন ভাড়ারী মাটি গ্রামের সাহাদৎ হোসেন। ওই সম্মুখযুদ্ধে শহীদ হন বীর মুক্তিযোদ্ধা বাখাল ছড়ার আহসান আলী, চারখাই দসাখালীতে দর্পনগরের রফিকুল হক, বড়চাতলের আব্দুল খালিক, নিজবাড়ি উজান বারাপৈতে নক্তিপাড়ার মশাহিদ আলী, খুলুর মাটির নুর উদ্দিন, নিজ গ্রামে নক্তিপাড়ার আব্দুর রহমান।
ছামির মাহমুদ/এসএস/আরআইপি