মুস্তাফিজের কীর্তিতে গর্বিত মাশরাফিও


প্রকাশিত: ০২:৫৯ পিএম, ০২ ডিসেম্বর ২০১৫
ফাইল ছবি

দুর্দান্ত এক স্লোয়ার, উড়ে গেলো ব্যাটসম্যানের স্ট্যাম্প, কিংবা দুরন্ত এক কাটার, ক্যাচ উঠে গেলো উইকেটের পেছনে- উল্লাসে ভাসতে শুরু করে পুরো গ্যালারি। মুস্তাফিজুর রহমানকে নিয়ে তখন কে সবচেয়ে বেশি গর্বিত হন? নিশ্চয়ই তার বাবা-মা কিংবা ভাই! এমনটা ভাবলে সম্ভবত ভুলই হবে। মুস্তাফিজের প্রতিটি সাফল্যে নিশ্চিতভাবেই অন্য যে কারও চেয়ে সবচেয়ে বেশি উচ্চসিত, সবচেয়ে বেশি গর্বিত হন আরেকজন। মাশরাফি বিন মর্তুজা। মুস্তাফিজ নামক ‘রত্নে’র আবিষ্কারকই যে তিনি!

বিপিএলের ঝকঝকে রঙ্গিন পোষাকের ধুম-ধাড়াক্কা টি-টোয়েন্টি লড়াই অবশ্য মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়েছে মাশরাফি-মুস্তাফিজকে। আজই যেমন দু’জন ছিলেন দু’জনের শত্রু। মাশরাফি কুমিল্লায়, মুস্তাফিজ ঢাকার অন্যতম ভরসার নাম। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী ক্রিকেট স্টেডিয়ামে একে-অপরের মুখোমুখি হওয়ার আগেই আরেক ‘মুস্তাফিজ’ সাফল্যে উচ্চসিত হয়ে উঠেছিলেন মাশরাফি। আনন্দে বুক ভরে গিয়েছে তার। তার আবিষ্কার যে, দেশের গণ্ডি পেরিয়ে এবার জয় করে ফেলেছে বিশ্ব মঞ্চও!  

প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে আইসিসির বর্ষসেরা ওয়ানডে দলে ঠাঁই মিলে গেছে মুস্তাফিজুর রহমানের। সকালেই যখন আইসিসি এই খবর জানিয়ে দেয়, তখন থেকেই পুরো দেশই মুস্তাফিজ সাফল্যে গর্বিত। পুরো ক্রিকেট বিশ্বই যে এখন নতুন করে সমীহ করতে বাধ্য হচ্ছে! মুস্তাফিজের এই সাফল্যকে পুরো বাংলাদেশের জন্যই অনেক বড় অর্জন বলে মনে করেন মাশরাফি।

মুস্তাফিজের দল ঢাকার বিপক্ষে ১০ রানের অসাধারণ এক জয়ের পর তাকে নিয়ে গর্বিত মাশরাফি বলেন, ‘এটা আমাদের সবার জন্যে বড় একটি অর্জন। আশা করছি সে এ সাফল্য ধরে রাখবে। এক সময়ে টেস্ট দলেও জায়গা করে নেবে। খুব অল্প বয়সে তরুণ একজন ক্রিকেটার এত বড় একটি জায়গায় নিজেকে নিয়ে গিয়েছে, সেটা আমাদের পুরো বাংলাদেশের জন্যই গর্বের বিষয়।’

উপমহাদেশের উইকেটগুলো অধিকাংশ সময়ই স্পিনারদের সহয়তা করে। তাই এক সময় বাংলাদেশের মাঠে তিনজন পেসার নিয়ে খেলার চিন্তা করাটাই ছিল বিলাসিতা। তরুণ মুস্তাফিজকে দেখে মাশরাফি এতটাই মজেছিলেন যে, দল নির্বাচন করতে গিয়ে বেকায়দায় পড়ে ভারতের বিপক্ষে চার পেসার নিয়ে খেলেছিলেন তিনি। এরপর সবই ইতিহাস। তাই মুস্তাফিজের সাফল্যে স্বাভাবিকভাবেই একটু বেশেই উচ্ছ্বসিত মাশরাফি।

এতকিছু এত অল্প সময়ে হয়ে যাবে তা কখনো ভাবেননি মাশরাফি। অভিষেকের পর থেকেই দলের চেহারা বদলে দিয়েছেন মুস্তাফিজ। মাশরাফিও বিশ্বাস করেন এটা। আইসিসি থেকে পাওয়া এই সম্মানকে চাপ নয়, বরং একে অনুপ্রেরণা হিসেবে নিয়ে মুস্তাফিজ নিজেকে আরও বড় উচ্চতায় নিয়ে যাবেন বলে আশা করেন অধিনায়ক।

এই প্রসঙ্গে মাশরাফি বলেন, ‘ওর নতুন একটা জিনিস যোগ হলো। ও এখন আইসিসির ওয়ানডে দলে জায়গা পেয়েছে। প্রত্যেকটা বাঙালি এখন গর্বিত ওকে নিয়ে। আশা করব এই অর্জন যেন চাপ তৈরী না করে। খেলায় খারাপ সময় আসতেই পারে। সে এখনো বয়সে অনেক তরুণ। যদি বাংলাদেশকে আরও দশ-পনেরো বছর সার্ভিস দিতে পারে তাহলে সে এমন জায়গায় যাবে, যেটা আগে কেউ যেতে পারেনি।’

আরটি/আইএইচএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।