ঢাকাকে হারিয়ে শীর্ষে ফিরল কুমিল্লা
আগেরদিন ১৫৮ রান করেও জয়ের দেখা মেলেনি ঢাকা ডাইনামাইটসের। বরিশাল বুলসের ক্যারিবীয় ‘দ্বৈত্য’ এভিন লুইসের বিধ্বংসী সেঞ্চুরির কাছে হার মানতে হয় সাঙ্গাকারা-নাসিরদের। চট্টগ্রাম পর্বে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে এসেও কঠিন লড়াই করতে হলো ঢাকাকে এবং শেষ পর্যন্ত মাশরাফি বিন মর্তুজার কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের কাছে ১০ রানে পরাজয় বরণ করতে হলো ঢাকার দলটিকে।
কুমিল্লার করা ১৪১ রানের জবাব দিতে নেমে শুরুটা ভালোই ছিল ঢাকার; কিন্তু মাশরাফির বুদ্ধিদীপ্ত নেতৃত্ব, তার নিজের এবং আবু হায়দার রনির অসাধারণ বোলিংয়ের মুখে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৩১ রানেই আটকে গেলো ঢাকা। উইকেট থাকা সত্ত্বেও হাতখুলে মারতে পারেনি ঢাকার ব্যাটসম্যানরা। ফলে, ১০ রানের পরাজয় মেনেই মাঠ ত্যাগ করতে হলো তাদেরকে।
এই জয়ের ফলে পয়েন্ট টেবিলে আবারও শীর্ষে উঠে এলো মাশরাফির কুমিল্লা। ৬ ম্যাচ শেষে ৪ জয়ে তাদের অর্জন ৮ পয়েন্ট। সমান পয়েন্ট বরিশাল বুলসেরও। তবে রান রেটের ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছে কুমিল্লাই। আবার বরিশাল খেলেছে মাত্র এক ম্যাচ কম। রংপুর রাইডার্সেরও পয়েন্ট ৮। তবে রান রেটের ব্যবধানে তারা রয়েছে তিন নাম্বারেই।
টস জিতে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজাকে ব্যাট করার আমন্ত্রণ জানান ঢাকার অধিনায়ক কুমার সাঙ্গাকারা। ব্যাট করতে নেমে ঢাকার সামনে ১৪১ রানের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে কুমিল্লা। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে খুব একটা বড় স্কোর নয়। তবুও সেটা টপকাতে পারলো না ঢাকা, স্রেফ ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার কারণে।
জয়ের জন্য ১৪২ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা অবশ্য ভালোই করেছিল ঢাকা ডাইনামাইটস। যদিও চতুর্থ ওভারে সৈকত আলিকে হারাতে হয়। ৮ রান করে রান আউট হয়ে যান সৈকত। এরপর সাদমান ইসলাম আর কুমার সাঙ্গাকারার জুটি ভালোই ঝড় তুলতে যাচ্ছিলেন; কিন্তু সপ্তম ওভারে এসে শুভাগত হোমের ঘূর্ণি তোপে পড়ে আউট হয়ে যান সাদমান ইসলাম। দলীয় রান তখন ৪০। ১১ বলে ১০ রান করেন তিনি।
৪০ রানে ২ উইকেট পড়ার পর নাসির হোসেন আর সাঙ্গাকারা মিলে ৩১ রানের জুটি গড়ে ঢাকাকে জয়ের দিকেই নিয়ে যাচ্ছিলেন। তবে দুর্ভাগ্য সাঙ্গাকারার জন্য। ২৭ বলে ৩০ রান করে রান আউট হয়ে যান তিনি। তবুও নাসির আর রায়ান টেন ডেসকাট মিলে ঢাকার লাগাম টেনে নিয়ে যাচ্ছিলেন।
কিন্তু কুমিল্লার দুই পেসার আবু হায়দার রনি আর মাশরাফি বিন মর্তুজা মিলে দারুনভাবে জমিয়ে তোলেন বিপিএলে চট্টগ্রাম পর্বের এই ম্যাচটি। ১৬তম ওভারের তৃতীয় বলেই আবু হায়দারের অফ কাটার তুলে খেলতে গিয়ে কাভার অঞ্চলে ক্যাচ তুলে দেন। দৌড়ে এসে দারুন ক্ষিপ্রতায় ক্যাচটা লুফে নেন মাশরাফি।
৯৯ রানের মাথায় নাসির ফিরে যাওয়ার পরই দারুন বিপর্যয়ে পড়ে যায় ঢাকা। তবুও ডাচ ক্রিকেটার রায়ান টেন ডেসকাটকে নিয়ে আশায় বুক বাধছে ঢাকার সমর্থকরা; কিন্তু পরের ওভারে বল করতে এসেই সেই ডেসকাটকে ফিরিয়ে দিলেন মাশরাফি। তার স্লোয়ার বল বুঝতেই পারেননি এই ডাচম্যান। সুতরাং, ডিপ স্কয়ার লেগে দাঁড়িয়ে ক্যাচটি লুফে নিতে মোটেও কষ্ট করতে হয়নি ডলার মাহমুদের।
বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে সিরিজের সময় ২০ বলে হাফ সেঞ্চুরি করে হইচই ফেলে দিয়েছিলেন ম্যালকম ওয়ালার। সেই ওয়ালারই শেষ পর্যন্ত ভরসা ছিলেন ঢাকার জন্য। তিনিও ব্যার্থ হলেন। তরুণ উদীয়মান পেসার আবু হায়দার রনির তোপের মুখে শুভাগত হোমকে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান। ১০ বল খেলে করলেন মাত্র ১১ রান। ১১ বল খেলে ১২ রান করলেও আবুল হাসান কিংবা অলরাউন্ডারের তকমা পরা ফরহাদ রেজারা শেষ ওভারে জয়ের জন্য ১৭ রান তুলতে ব্যর্থ হলেন। নিলেন মাত্র ৯ রান। ফলে ১০ রানেই পরাজয়ের স্বাদ নিয়ে মাঠ ছাড়তে হলো ঢাকাকে।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বোলার আবু হায়দার রনি ৩০ রান দিলেও নেন ২টি উইকেট। তবে তার এই দুই উইকেটই ছিল ম্যাচের গতি পরিবর্তণকারী। মাশরাফি এবং শুভাগত হোম নেন ১টি করে উইকেট।
আইএইচএস/আরআইপি