নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির হালনাগাদ নেই গোপালগঞ্জ জেলা তথ্য বাতায়নে
তথ্যের দ্বার খুলে দিয়েছে গোপালগঞ্জ জেলা তথ্য বাতায়ন। তবে দ্বার খুলে দিলেও তথ্য বাতায়নটি হালনাগাদ না থাকায় বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে জনসাধারণকে।
জেলার পটভূমি, ভৌগোলিক অবস্থা, শিল্প ও বাণিজ্য, ইতিহাস ও ঐতিহ্য, ভাষা ও সংস্কৃতি, মুক্তিযুদ্ধ, প্রখ্যাত ব্যক্তিত্ব, খেলাধুলা ও বিনোদন, জনপ্রতিনিধি, উপজেলা, ইউনিয়ন ও পৌরসভার গুরুত্বপূর্ণ তথ্য রয়েছে এ তথ্য ভাণ্ডারে।
জেলা প্রশাসন, স্থানীয় সরকার ও অন্যান্য সরকারি অফিসসমূহের কর্মকর্তা ও কার্যক্রম সর্ম্পকে বিভিন্ন ভথ্য পাওয়া যায় এ তথ্য ভাণ্ডারে। এছাড়া, কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পর্যটন বিষয়ে নানা তথ্যের পাশাপাশি রয়েছে নোটিশ বোর্ড, ই-বুক ও জেলা ই-সেবা কেন্দ্র। এছাড়া নাগরিক ও দাফতরিক আবেদন এবং নকলের জন্য আবেদনের ফরম ও ই-মেইলে আবেদন করার সুযোগ রয়েছে তথ্য ভাণ্ডারে।
গোপালগঞ্জ শহরের আইসিটি ব্যবসায়ী ইলিয়াস হক বলেন, `জেলা তথ্য বাতায়ন’ হলো জেলার তথ্য ভাণ্ডার। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে ওয়েব পোর্টালটির মাধ্যমে জনগণ জেলার যাবতীয় তথ্য উপাত্ত জানতে পারেন। জেলা প্রশাসনের এ প্রয়াস শুরুতে ব্যাপক সাড়া জাগালেও এখন তাতে ভাটা পড়েছে। সময়মত পোর্টালটি হালনাগাদ না করায় বিভ্রান্তিতে পড়তে হয় অনেককে।
কবি রবীন্দ্রনাথ অধিকারী বলেন, তথ্য বাতায়নে কবি সাহিত্যিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বদের যথাযথভাবে উপস্থাপন করা হয়নি। প্রখ্যাত উপন্যাসিক রমেশ সেনের বাড়ি গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার কুরপালা গ্রামে হলেও তার সর্ম্পকে পরিপূর্ণ তথ্য পাওয়া যায়নি। আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন চিত্রশিল্পী যোগেন চৌধুরী ও বিজন চৌধুরীর মতো ব্যক্তিত্বদের সম্পর্কে মিলছে না কোনো ভাল তথ্য।
রঘুনাথপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক দুলাল বিশ্বাস বলেন, ওয়েবসাইটে প্রবেশ করলে হালনাগাদ তথ্যের ঘাটতি পাওয়া যায়। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. মোতাহার হোসেনের নাম দেখা য়ায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের পদের স্থানে। বর্তমানে গোপালগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোজাম্মেল হক। ফলে জনসাধারণকে বিভ্রান্তির ধুম্রজালে আটকে পড়তে হয়।
স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মী বাদল সাহা বলেন, তথ্য প্রদানের জন্য জেলার বিভিন্ন দফতরে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের তালিকা হালনাগাদ নেই এ তথ্য বাতায়নে। ফলে সাংবাদিকদের তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়।
সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজের দর্শন দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শর্মী বিশ্বাস বলেন, নোটিশ বোর্ড নিয়মিত হালনাগাদ করা হয় না। আমরা চাকরির বিজ্ঞাপনসহ গুরুত্বপূর্ণ অনেক সার্কুলার পেতে নোটিশ বোর্ড দেখি। কিন্তু তথ্য বাতায়নের নোটিশ বোডর্টি সর্বশেষ ২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল হালনাগাদ করা হয়েছে বলে তিনি ভিজিট করে দেখতে পেয়েছেন। চাকরির সুযোগ সুবিধাসহ নিয়োগ সংক্রান্ত তথ্যাবলি নোটিশ বোর্ডে সন্নিবেশ করার দাবি জানান তিনি।
এদিকে অনলাইনে জন্ম মৃত্যু ও আয়কর নিবন্ধন, পাসপোর্ট ফরম ও জমির পর্চা প্রাপ্তির আবেদনের সুযোগ থাকায় জেলার বাইরের কর্মরতরা উপকৃত হচ্ছেন বলে অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।
গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. খলিলুর রহমান বলেন, জেলা তথ্য বাতয়নে সব ধরনের তথ্য সন্নিবেশ করার চেষ্টা করা হয়েছে। অনেকেই ওয়েবসাইটটি ভিজিট করে প্রয়োজনীয় তথ্য পাচ্ছেন। প্রবাসীরাও তথ্য পেতে ওয়েবসাইটটি ভিজিট করেন। হালনাগাদ করা হয় না কথাটি ঢালাওভাবে বলা যাবে না। তবে কোনো ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকলেও থাকতে পারে যা ইতোমধ্যে আমরা সমাধানের উদ্যোগ নিয়েছি।
এসএস/পিআর