তর্কবাগীশের জন্মদিন আজ
মহান জাতীয় নেতা, ঋণসালিশী বোর্ড প্রবতর্নের পথিকৃৎ, বর্গা আন্দোলনের অবিসংবাদিত কান্ডারী, মহান ভাষা আন্দোলনের প্রাণপুরুষ, ভাষাসৈনিক ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, বৃটিশবিরোধী আন্দোলনের বীরযোদ্ধা এবং আজীবন গণমানুষের নেতা মাওলানা আব্দুর রশিদ তর্কবাগীশের ১১৫তম জন্মদিন আজ।
মাওলানা আব্দুর রশিদ তর্কবাগিশের জন্ম ১৯০০ সালের ২৭ নভেম্বর চলনবিল অঞ্চলের উল্লাপাড়ার সলঙ্গা থানার তারুটিয়া গ্রামে এক পীর বংশে। মাওলানা আব্দুর রশীদ তর্কবাগীশ ছিলেন গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা আন্দোলনের পুরোধা ব্যক্তিত্ব। তিনি ছিলেন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও ১৪ দলীয় জোটের অন্যতম শরিকসহ বাংলাদেশ গণ-আজাদী লীগের প্রতিষ্ঠাতা।
দিবসটি উপলক্ষে সকাল সাড়ে ৯টায় বনানী সামরিক কবরস্থানে (নৌবাহিনীর সদর দফতর সংলগ্ন) শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করা হবে। এ অনুষ্ঠানে ১৪ দলীয় জোটের কেন্দ্রীয় নেত্রীবৃন্দ ও গণ-আজাদী লীগের নেতাসহ সর্বস্তরের মানুষ অংশগ্রহণ করবে।
১৯২২ সাল ২৭ জানুয়ারি বৃটিশবিরোধী অহিংস-অসহযোগ ও খেলাফত আন্দোলন-উত্তালকালে উত্তরবঙ্গের সুবিখ্যাত বাণিজ্য কেন্দ্র সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা হাটে বৃটিশবাহিনী ইতিহাসের এক বর্বরতম হামলায় হত্যা করে হাজার-হাজার মানুষ। স্বাধিকার চেতনায় উজ্জীবিত হবার দায়ে একসঙ্গে এত মানুষ হত্যার ঘটনা ইতিহাসে বিরল।
সেদিন সলঙ্গার হাটে মুক্তিকামী মানুষের নেতৃত্বে ছিলেন দশম শ্রেণীর ছাত্র আব্দুর রশিদ। সেদিনের সেই কিশোর নেতাই পরে জাতীয় নেতা মাওলানা আব্দুর রশিদ তর্কবাগিশ উপাধিতে ভূষিত হন। সেদিন তিনি সলঙ্গা হাটে বিদেশি পণ্য বর্জন-এর আন্দোলনে নেতৃত্বের জন্য বৃটিশবাহিনীর চরম নির্যাতনের শিকার হয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় বন্দী হন।
বৃটিশদের এই হত্যাযজ্ঞ সেই সময়ের সবচেয়ে নিষ্ঠুরতম বলেই চিহ্নিত আজও। কথিত যে, তৎকালীন জালানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডেও এত মানুষের মৃত্যু হয়নি। যদিও কাগজে-কলমে চার হাজার মানুষের আনুমানিক হিসেব পাওয়া যায়, কিন্তু, আদতে নাকি সলঙ্গা হাটে সেদিন দশ হাজার মানুষকে হত্যা করেছিলো বৃটিশবাহিনী। সেদিন অগণিত লাশের গণকবর দেয়া হয় সিরাজগঞ্জের রহমতগঞ্জে। সেদিন প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন তিনি।
আজীবন সংগ্রামী এ নেতা ১৯৮৬ সালের ২০ আগস্ট পরলোকগমন করেন।
এসকেডি/পিআর