হাজীগঞ্জে প্রেমিক-প্রেমিকার আত্মহত্যা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি চাঁদপুর
প্রকাশিত: ০৫:৫৬ পিএম, ২৫ নভেম্বর ২০১৫

চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলায় প্রেমিক নবির হোসেন (২০) ও প্রেমিকা রেহানা আক্তার (১৪) বিষপানে আত্মহত্যা করেছে। মঙ্গলবার গভীর রাতে উপজেলার ৫নং সদর ইউনিয়নের বাউড়া গ্রামের একটি পুকুর পাড়ে দু’জনে একসঙ্গে বিষপান করে।

পরে তাদের দু’জনকে হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। অবস্থা বেগতিক দেখে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে তারা মারা যায় বলে পারিবারিক সূত্র জাগো নিউজকে জানায়। বুধবার হাজীগঞ্জ থানা পুলিশ সুরতহাল রিপোর্ট করে দু’জনের মৃতদেহ ময়নাতদন্তের পর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে।

প্রেমিক নবির হোসেন উপজেলার বাউড়া গ্রামের ছৈয়াল বাড়ির আবদুল হাকিমের ছোট ছেলে। সে নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করে দিনমজুরের কাজ করছিল। আর প্রেমিকা রেহানা আক্তার হাজীবাড়ির আজিজুল্লাহর ছোট মেয়ে। সে হাজীগঞ্জ পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।

নবীর হোসেনের ভাই কবির হোসেন জাগো নিউজকে জানান, সোমবার সন্ধ্যায় এলাকায় একটি মাহফিল হয়। ওই মাহফিল থেকে প্রেমিকা রেহানা আক্তার জনৈক এক ব্যক্তিকে দিয়ে ফুসকা এনেছিল। ওই ফুসকা তার ভাই নবীর হোসেন দিয়েছে- এ অজুহাতে রেহানা আক্তারকে তার মা, ভাই মাঈনুদ্দিন ও রাহিম বেদম মারধর করে। ওইসময় রেহানা পায়ে গুরুতর আঘাত পায়। তখন রেহানা তার মা-বাবাকে আত্মহত্যা করবে বলে হুমকি দিয়েছিল। বিষয়টি মঙ্গলবার সকালে নবীর হোসেন আমাকে খুলে বলেছে। তখন ভাইকে আমি ধৈর্য ও শান্ত থাকার অনুরোধ করি। কিন্তু মেয়েটির প্ররোচনায় দু’জনে একসঙ্গে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়।

কবির হোসেন আরও জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিষপান করা অবস্থায় নবীর আমাকে ফোন দিয়ে বলেছে, ‘ভাই আমি আর রেহানা একসঙ্গে বিষ খেয়েছি। মরে যাচ্ছি, মাফ করেদিস। দোয়া করিস।’

এ বিষয়ে মেয়ের ভাই রাহিম জাগো নিউজকে জানান, এসব বানোয়াট কথা। সোমবার এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। ছেলে নবীর হোসেন বিষ কিনে এনে আমার বোনকে খবর দিয়ে নিয়ে গেছে। তাদের সম্পর্কের বিষয়টি ছয় মাস পূর্ব থেকে দুই পরিবার জানতে পারে বলেও তিনি জানান।

প্রেমিক নবীর হোসেনের মা পারুল বেগম জাগো নিউজকে জানান, আমার ছেলেকে মেয়ের ভাইয়েরা একাধিকবার মারধর করেছে। তারা সামান্য অজুহাতে মেয়েকেও একাধিকবার মেরেছিল। গ্রাম্য শালিশে দুই বছর পর তাদের বিবাহ হবে বলে একটি স্ট্যাম্প করা হয়। অথচ শালিশিগণ ওই স্ট্যাম্পে কারো স্বাক্ষর রাখেনি।

এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহআলম জাগো নিউজকে জানান, মেয়েটি দুইবার ছেলের বাড়িতে পালিয়ে গিয়েছিল। শেষবার মেয়ের বাবা ও ভাই পুলিশের শরণাপন্ন হয়। তখন মেয়েকে ছেলের বাড়ি থেকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসি। সেমসয় উভয় পক্ষের সম্মতিতে সিদ্ধান্ত হয়, পূর্ণ বয়স হবার পর অর্থাৎ দুই বছর পর পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে দেয়া হবে।

ওসি আরও বলেন, মেয়ের ভগ্নিপতি মো. সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করেছেন। তবে দু’জনের আত্মহত্যার পেছনে কারো প্ররোচণা রয়েছে কি-না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

ইকরাম চৌধুরী/বিএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।