পদ আছে কিন্তু দায়িত্ব নেই এরশাদের
প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূতের দায়িত্ব পাওয়ার পর এখন পর্যন্ত কোনো দায়িত্ব পালন করতে পারেননি সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। প্রায় দুই বছরের কিছু সময় কম হলেও এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি দেশ সফর করেছেন তিনি। তবে সবকটি সফরই ছিলো ব্যক্তিগত। এমনটাই জাগো নিউজকে জানিয়েছেন এরশাদের একান্ত সচিব মেজর (অব.) খালেদ আক্তার।
এরশাদের অভিযোগ, সরকারের পক্ষ থেকে এই পদের কোনও কার্যকারিতা তাকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি আজ পর্যন্ত। ২০১৪ সালে ১২ জানুয়ারি আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট সরকারের মন্ত্রিসভার সদস্যদের শপথের দিনই বিশেষ দূতের দায়িত্বপ্রাপ্ত হন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।
শুধু পদ নয়, জাতীয় সংসদ ভবনে একটি আধুনিক অফিসও বরাদ্দ পান তিনি। বিশেষ দূত হিসেবে অফিসের সামনে বসানো হয় তার নামফলক। আধুনিক সুবিধা, একান্ত সচিব, সহকারী একান্ত সচিব এবং দু’জন অফিস স্টাফও নিয়োগ দেওয়া হয়। বিশেষ দূত হিসেবে বেতন-ভাতাসহ সরকারি সুবিধাও পাচ্ছেন।
৫ জানুয়ারির নির্বাচন পরবর্তী প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত নিযুক্ত হবার পর এরশাদ তার কার্যালয়ে বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্যসহ ইসলামি দেশগুলোর সাথে তার বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে। আর এ সম্পর্ককে কাজে লাগাতেই প্রধানমন্ত্রী তাকে এ পদে নিযুক্ত করেছেন। তিনি এ দেশগুলোর সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক পুনঃস্থাপনে কাজ করারও ঘোষণা দিয়েছিলেন।
যদিও প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ হয়ে বিদেশে সফর কিংবা বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কন্নোয়নের ক্ষেত্রেও তাকে কোনো ভূমিকা নিতে দেখা যায়নি।
দায়িত্ব পাওয়ার পর চীন, ভারত, মালয়েশিয়া সফর করলেও কোনোটিই এ দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট ছিল না। সূত্রমতে, এরশাদের দ্বিমুখী অবস্থানে নারাজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ দিলেও দায়িত্ব দেননি। যদিও এরশাদ বিভিন্ন সভা-সমাবেশে বলেছেন পদ নয় তিনি দায়িত্ব চান।
এদিকে এরশাদ মন্ত্রীর মর্যাদায় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত এবং ‘বিরোধী দল’ হওয়ার কারণে আত্মপরিচয় সংকটে ভুগছে জাতীয় পার্টি। যদিও তিনি প্রতিনিয়ত সরকারের বিরুদ্ধে কঠোর সমালোচনা করছেন তারপরও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হওয়ায় বিরোধী দলের প্রধান হিসেবে তা আমলে নিচ্ছেন না খোদ দলের নেতা-কর্মীরাই।
এ ব্যাপারে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের কাছে জানতে চাইলে তাকে ঠিক কী কারণে দায়িত্ববঞ্চিত রাখা হয়েছে সে বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে চাননি তিনি।
দলীয় নেতাদের মতে, রওশন এরশাদ বিরোধীদলীয় নেতা হওয়ার পরে এরশাদের প্রধানমন্ত্রী বিশেষ দূত ছাড়া আর কোনো পদই বাকি ছিলো না। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী এরশাদকে তার সঙ্গে ভিড়িয়ে রাখতেই এমন কৌশল অবলম্বন করেছেন।
এরশাদের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বিশেষ দূত হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ার পরে এরশাদ কয়েকটি দেশে সফর করার জন্য আবেদন করলে সেগুলো নাকচ করে দেওয়া হয় সরকারের পক্ষ থেকে।
এইচ এম এরশাদ প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত এবং তিনজন প্রেসিডিয়াম সদস্য মন্ত্রিপরিষদে থাকায় পার্টি আত্মপরিচয় সংকটে আছে কি না এমন প্রশ্নে দলটির মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহম্মেদ বাবলু বলেন, ‘বিরোধী দল থেকে মন্ত্রিপরিষদে শুধু বাংলাদেশে নয়, এটা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বর্তমানে আছে, অতীতেও ছিল। এ নিয়ে দলে কোনো বিভ্রান্তি নেই।
এএম/এসএইচএস/এআরএস/পিআর