জব্বার আল নাঈম- এর কবিতা
সন্ধ্যার কুয়াশা
সন্ধ্যার কুয়াশা স্টেশন চামড়ায় চাদর প্যাঁচিয়ে বসে আছি আলিফ লাম মীম অনুসন্ধান; কর্কশ কাক ভোরের বিষয় আশয় না বুঝেই ঠোকরে খেতে চাইল মানুষের মজ্জা মাংস মগজ। শেষ রাতের প্লাটফর্ম বলাখাল বাজারকে বাজনা ভেবে বেদম পিটিয়ে মিহি সুর তুলছে একদল তবলা বাদক। তুমুল প্রতিযোগিতায় শব্দগুলো আকাশের আল্লার কাছে দৌড়ে অভিযোগ বাক্সে চিঠি ফেলছে।
মদের মোড়ক খুলে ট্রেন সিডিউল রুম আলোর প্রতিসরণ প্রতিযোগিতা উগড়ে পড়ছে প্রতিবেশী সিট। রাতের গর্দান ধরে নিয়ে আসি সকালবেলার বিচারঘরে; যেখানে প্রভু মদের কারফিউ মিছিল থামানোর মহাআয়োজন নকশা আঁকায় ব্যস্ত। সঙ্গী সাথী হাসছে- ভগবান ভাগ্যবানের কাতারে দাঁড়িয়ে একগ্লাস সাদা জল আর গোলাপ ঘ্রাণ নিয়ে।
ঋণ
তোমার উদ্দেশ্যে পৃথিবীর প্রথম হিম এবং নিখুঁত ভালোবাসার ফায়দা; অস্তিত্ব ইতিহাসের পঞ্জিকা নিয়মে। হাতে হাত রাখা; চোখে চোখ রেখে মনবই মুখস্থ করা। এলোকেশী বাতাসে নাম লিখা; পাতার অক্ষর কেটে কেটে সে সব মুছে ফেলার ভুবন আয়োজন। গেরস্থালির বুকে হাত রেখে পাহাড় আবিষ্কার তুমিই শিখিয়েছ আদিকালে। এরপর মাইলের পর মাইল দীর্ঘ ভ্রমণক্লান্ত আমাকে উরুর পাশে ছোট্ট এক মায়াবী নদীতে জলমুখে সান্ত্বনা দিলে তুমিই প্রথম। সেই উন্মাদনায় মানুষ খাল, নদী, সাগর সন্ধানে ঘরের বাইরে বের হয়।
আমার খুব হাসি পায় নব্য পাগলের প্রলাপ দেখলে। যারা বলে কাশবন দেখে এলোকেশ! এলোকেশের গভীরে লুকানো প্রথম মহাদেশ। ইতিহাস প্রমাণ করে আমার প্রথম প্রিয়তমার বুক থেকে খুঁজে পাওয়া তোমাদের আপেল পৃথিবী।
সঞ্চিত সময়
(পলিয়ার ওয়াহিদকে, আত্মানুসন্ধানী একজন)
মানুষের ইচ্ছা অনিচ্ছা বাতাসের ফাঁক গলে অলিখিত খাতায় পরিমার্জিত নয় স্বভাব সুলভ নিয়মে; ব্যাখ্যার পাঁয়তারা খতিয়ানের ঘরে চূড়ান্ত জাবেদা উস্কানি দেয়; কৃষকের দো’পাটি দাত আর সবজি বিক্রেতার ফেরি জীবন। কাঠমিস্ত্রী হাতুড়ি বাটাল দিয়ে জীবন ঘঁষা-মাজা করতে করতে একটা দারুণ চিত্রকর্ম দাঁড় করায়। শেষতক অন্ধকার পেরিয়ে স্ত্রীর চুমুদৃশ্য ভেবে হো হো হো হেসে ওঠে মন। মনের ভেতর রকমারি জল জমা। জল জমা করতে করতে বাতাসের সাতে তুমুল সংঘর্ষ সূর্য ও সমুদ্রের। অথচ তাঁরপিনে আটক জোয়ার ফিল্টার করে পেয়েছি ধ্রুপদীজগৎ। মহাজগৎ মহাখারাপ লাগে যখন মলাটবন্দী সময় প্রিন্ট মেশিন আউট হওয়ার পর মাল্টিকালার উপকরণ ঘিরে ওঠে তপস্যা সময়। যার গ্যাড়াকলে বৈচিত্র্যময় প্রহর জমা করে নেতিয়ে পড়া প্যাঁচানো লতাগাছ ধরে রাখে দ্রুতগামী অশ্বখুর। যেখানে আটকে যায় মানবিক বোধকল্প সঞ্চিত সময় সংকলন।
এসইউ/এইচআর/এমএস