রাতভর সালাহ উদ্দিনকে থেমে থেমে নির্যাতন
লক্ষ্মীপুরে চোর সন্দেহে সুপারি গাছের সঙ্গে বেঁধে রাতভর থেমে থেমে সালাহ উদ্দিন (৩৫) নামে এক প্রতিবন্ধীকে নির্যাতন করা হয়েছে। এ সময় আগুনে প্লাস্টিক পুড়িয়ে তার শরীরে গরম ছ্যাকাও দেয়া হয়েছে।
সোমবার সকালে তাকে উদ্ধার করে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সালাহ উদ্দিন সদর উপজেলার চররুহিতা ইউনিয়নের নবীগঞ্জ গ্রামের সফিক উল্লাহর ছেলে।
নির্যাতিত যুবকের পরিবার জানায়, রোববার রাত ২টার দিকে লক্ষ্মীপুর পৌর বাস টার্মিনাল এলাকার জবেদ উল্লাহ মুন্সি বাড়ির সামনে থেকে সালাহ উদ্দিনকে আটক করা হয়। এরপর সুপারি বাগানে নিয়ে রশি দিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে তার ওপর চালানো হয় অমানুষিক নির্যাতন।
এলাকাবাসী জানায়, গত ১০ দিন আগে জবেদ উল্লাহ মুন্সি বাড়ির একটি ঘরে চুরি হয়। রোববার রাতে প্রতিবন্ধী সালাহ উদ্দিন ওই এলাকায় ঘোরাফেরা করছিলো। এ সময় স্থানীয় আলমগীর হোসেনসহ কয়েক ব্যক্তি তাকে চোর সন্দেহ করে আটক করে। এরপর তাকে সুপারি বাগানে নিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাতভর থেমে থেমে মারধর করা হয়। এক পর্যায়ে আগুনে প্লাস্টিক পুড়িয়ে তার শরীরের বিভিন্ন অংশে ছ্যাকা দেয়া হয়। এতে তার শরীরের পিঠ ও দুই পায়ের কিছু অংশ সামান্য ঝলসে যায়।
এ ব্যাপারে জানতে আলমগীর হোসেনের বাড়িতে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। এ সময় তার স্ত্রী নিপু বেগম জানান, চোর ধরে এক যুবককে জিজ্ঞাসাবাদ করতে মারধর করা হয়েছে। সেখানে আলমগীর একা নয়, অনেকেই ছিলো।
নির্যাতিত যুবকের ভাই মাইন উদ্দিন জানান, নিরাপরাধ প্রতিবন্ধী ছেলেটিকে নির্দয়ভাবে পেটানো হয়েছে। শরীরে আগুনের গরম ছ্যাঁকাও দেয়া হয়েছে। এ সময় তিনি দোষীদের বিচার দাবি করেন।
সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক আব্দুর রহমান খালেদ জানান, নির্যাতনে প্রতিবন্ধী যুবকের শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এছাড়া তার দুই পায়ের গোড়ালিতে ছ্যাকার চিহ্নও দেখা গেছে। তাকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল্লাহ আল মামুন ভূঁইয়া বলেন, নির্যাতিত পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ করা হয়েছে। এ ঘটনায় এখনো কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
কাজল কায়েস/এআরএ/পিআর