শক্তিশালী স্থানীয় সরকার


প্রকাশিত: ০৪:১২ এএম, ২৩ নভেম্বর ২০১৫

সিটি কর্পোরেশন, উপজেলা পরিষদ ও ইউনিয়ন পরিষদ আইন সংশোধন বিল গতকাল রবিবার সংসদে পাস হওয়ার মধ্য দিয়ে স্থানীয় সরকারের তিনটি স্তরেই এখন থেকে দলীয়ভাবে নির্বাচন হবে। এ তিনটি স্তরেই পরিষদের প্রধান অর্থাৎ চেয়ারম্যান ও মেয়র পদে দলীয়ভাবে নির্বাচন হবে। উপজেলার ক্ষেত্রে ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচনও দলীয় ভিত্তিতে হবে। তবে সব পদেই স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নির্বাচন করতে পারবেন। এছাড়া নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেওয়ার ক্ষেত্রেও কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে।  

পৌরসভা আচরণ বিধিমালায় সরকারের সুবিধাভোগী অতি-গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের মধ্যে মন্ত্রী-এমপিরা পৌর নির্বাচনের প্রচারণায় অংশ নিতে পারবেন না। সংশ্লিষ্ট ভিআইপিরা নির্বাচনী এলাকার ভোটার হলে এখন শুধু ভোট দিতে যেতে পারবেন। এছাড়া কাউন্সিলর প্রার্থী নির্বাচন নির্দলীয় থাকায় এক্ষেত্রে আর স্বতন্ত্র প্রার্থীর বিধান রাখান প্রয়োজন না থাকায় তা তুলে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

সর্বশেষ পৌরসভা নির্বাচন হয়েছিল ২০১১ সালে। স্থানীয় সরকার আইন অনুযায়ী পরিষদের মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার আগের ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করতে হয়। সে হিসেবে নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

নতুন নিয়মে অর্থাৎ দলীয়ভাবে এই প্রথম স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আজ-কালের মধ্যেই নির্বাচন কমিশন ২৩৫ টি পৌরসভা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে। দলীয়ভাবে স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে  নানা রকম মত আছে। এরফলে স্থানীয় সরকারে দলীয় আধিপত্য প্রতিষ্ঠা হতে পারে। এছাড়া দলীয় মনোনয়ন নিয়েও হতে পারে নানা রকম ঝামেলা। যা সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের পথে অন্তরায় হতে পারে।অন্যদিকে বলা হচ্ছে, দলীয়ভাবে নির্বাচন হলে স্থানীয় সরকার একটি শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড়াবে। এতে তৃণমূল নেতা-কর্মীদেরও মূল্যায়নের একটি সুযোগ থাকবে।  তাছাড়া স্থানীয় সরকার নির্বাচন ইতিপূর্বে নির্দলীয়ভাবে অনুষ্ঠিত হলেও রাজনৈতিক দলগুলোর স্থানীয় নেতা-কর্মীরাই এতে অংশ নিয়ে থাকতো। ফলে দলীয় একটি প্রভাব থেকেই যেত। বর্তমানে দলীয়ভাবে হওয়ায় সেক্ষেত্রে দলীয় একটি শৃঙ্খলাও প্রতিষ্ঠিত হবে। তবে প্রার্থী মনোনয়ন দিতে এক্ষেত্রে দলের চেইন অব কমান্ড ধরে রাখা অত্যন্ত জরুরি।

আসলে সবকিছুর মূল লক্ষ্য হচ্ছে স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করা। একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে যাতে ভোটাররা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে বেছে নিতে পারে এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনকে জোরালো ভূমিকা রাখতে হবে। প্রচারণায় অংশ নেয়ার ক্ষেত্রে যেসব আচরণ বিধিমালা রয়েছে সেগুলোও কঠোরভাবে অনুসরণ করতে হবে।

একটি সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় মূলত প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী, ভোটার, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, প্রশাসন এবং নির্বাচন কমিশনের সম্মিলিত প্রচেষ্টায়। এ লক্ষ্যে সবাইকে দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে।

এইচআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।