বিদেশিদের নিয়ে বলীয়ান কুমিল্লা ভিক্টরিয়ান্স
মাশরাফি বিন মুর্তজা। বলা হয়ে থাকে তার হাতে রয়েছে পরশ পাথরের ছোঁয়া। একের পর এক হারের সঙ্গে যখন দুর্বল আফগানিস্তানও বাংলাদেশকে চোখ রাঙিয়ে কথা বলছিলো, তখন খাদের কিনারায় থাকা বাংলাদেশকে দলকে তুলে দেয়া হলো মাশরাফির হাতে। দেশসেরা এই পেসারের হাতের ছোঁয়ায় যেন বদলে গেল বাংলাদেশ। প্রথমবারের মত বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনালে তুললেন দেশকে। এরপর একে একে পাকিস্তান, ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা বধ। বিশ্বক্রিকেটে এঁকেছেন এক নতুন ইতিহাস। বিপিএলের আগের দুই আসরেও ঢাকা গ্লাডিয়েটর্স তার নেতৃত্বেই হয়েছে চ্যাম্পিয়ন। সেই সুদক্ষ নেতা মাশরাফি বিন মুর্তজার হাতেই থাকছে কুমিল্লা ভিক্টরিয়ান্সের দায়িত্ব।
`প্লেয়ার্স বাই চয়েস` লটারিতে নবাগত দলটির ভাগ্য একেবারে খারাপ ছিল না। তবে লটারির বাইরে থেকে নিজ উদ্যোগে কেনা বিদেশিদের নিয়ে বলীয়ান ভিক্টোরিয়ান্স কিন্তু মাঠের লড়াইয়ে বড় চমক দেখাতে তৈরি।
পাকিস্তানের শোয়েব মালিক আর বিধ্বংসী ওপেনার আহমেদ শেহজাদের সঙ্গে ক্যারিবীয় স্পিন বিস্ময় সুনীল নারাইন-মারলন স্যামুয়েলস-ক্রিসমার সান্তোকিদের দলে ভিড়িয়েছে ভিক্টোরিয়ান্স। প্লেয়ার বাই চয়েসের মাধ্যমে তারা দলে টেনেছে অলরাউন্ডার আন্দ্রে রাসেল, ড্যারেন স্টিভেন্স এবং শ্রীলংকার দুই তারকা নুয়ান কুলাসেকারা ও লাহিরু থিরিমান্নেকে। এছাড়া ঘরের ছেলে লিটন কুমার দাস, ইমরুল কায়েস এবং শুভাগত হোম চৌধুরীর উপস্থিতি রীতিমতো দুর্ধর্ষ এক দলে পরিণত করেছে ভিক্টোরিয়ান্সকে। সেই দলটির নেতৃত্বে যদি থাকেন মাশরাফি বিন মর্তুজা, তখন তো আর কোনো কথাই নেই।
দেশি-বিদেশির সমন্বয়ে ভিক্টোরিয়ান্স দারুণ ভারসাম্যপূর্ণ একটি দল। টপ অর্ডারে শুরুতেই বোলারদের উপর ঝড় তোলার জন্য দলে আছে পাকিস্তানের শেহজাদ। তাকে সমর্থন দিয়ে দলকে এগিয়ে নিতে আছেন টাইগার ব্যাটসম্যান ইমরুল এবং লিটন। মিডল অর্ডারে থিরিমান্নের সঙ্গে স্যামুয়েলস এবং শোয়েব মালিক। আছেন দেশের উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান ধীমান ঘোষ এবং শুভাগত। তার অফস্পিনটাও দারুণ কার্যকর হতে পারে। ব্যাটিংয়ের সঙ্গে অফস্পিনে ব্যবধান গড়ে দিতে পারেন শোয়েব মালিকও। পেস বোলিং অলরাউন্ডার হিসেবে আছেন ড্যারেন স্টিভেন্স এবং আরিফুল হক। আন্দ্রে রাসেলকে হয়তো বেশি সময় পাবে না ভিক্টোরিয়ান্স। তবে যেসব ম্যাচে খেলবেন, তার সবগুলোতেই ক্যারিবীয় সিমিং অলরাউন্ডার ব্যবধান গড়ে দেয়ার ক্ষমতা রাখেন।
মালিক-শুভাগতরা নন, ভিক্টোরিয়ান্সের স্পিন আক্রমণের নেতৃত্বে দেখা যাবে সুনীল নারাইনকে। সঙ্গে দুই বাঁহাতি স্পিনার সানজামুল ইসলাম এবং নাঈম ইসলাম জুনিয়র। মাশরাফি ছাড়া পেস আক্রমণে বড় নাম নেই। তবে নুয়ান কুলাসেকারা আর ক্রিসমার সান্তোকি টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট দারুণ কার্যকর পেসার। গতিঝড় তুলতে প্রয়োজনে আছেন দেশের তরুণ উদীয়মান পেসার আবু হায়দার রনি। এই বাঁহাতির উপস্থিতি পেস আক্রমণের বৈচিত্র্যও বাড়াবে ভিক্টোরিয়ান্সের।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স দল
দেশি : মাশরাফি বিন মর্তুজা (আইকন), লিটন কুমার দাস, ইমরুল কায়েস, শুভাগত হোম, সানজামুল ইসলাম, কামরুল ইসলাম, আরিফুল হক, মাহমুদুল হাসান, নাঈম ইসলাম জুনিয়র, আবু হায়দার, ধীমান ঘোষ।
বিদেশি : শোয়েব মালিক, সুনীল নারাইন, মারলন স্যামুয়েলস, ক্রিসমার সান্তোকি, আহমেদ শেহজাদ, ড্যারেন স্টিভেন্স, নুয়ান কুলাসেকারা, আন্দ্রে রাসেল, লাহিরু থিরিমান্নে।
আরটি/এমআর/পিআর