আমতলীতে সমাপনী পরীক্ষার ৩১ হাজার উত্তরপত্র বাতিল
বরগুনার আমতলীতে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা (পিএসসি) ও ইবতেদায়ী শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার জন্য নিম্নমানের কাগজ দিয়ে প্রস্তুত করা ৩১ হাজার উত্তরপত্র ও ৩০ হাজার অতিরিক্ত উত্তরপত্র বাতিল করেছে পরীক্ষা কমিটি।
মঙ্গলবার রাতে পরীক্ষা কমিটির সভাপতি ও আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান এ নির্দেশ দেন। এ সময় তিনি নতুন করে বরিশালের একটি প্রেসকে উত্তরপত্র ও অতিরিক্ত উত্তরপত্র সরবরাহের জন্য কার্যাদেশ দেন।
আমতলী প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর আমতলী উপজেলায় চার হাজার ৪১৫ জন পিএসসি ও ৬৪৮ জন ইবতেদায়ী সমাপনী পরীক্ষার্থীর নির্ধারিত ছয়টি বিষয়ের জন্য ৩০ হাজার ৯৭৮টি উত্তরপত্র ও ৩০ হাজার অতিরিক্ত উত্তরপত্র প্রস্তুত করার জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে পরীক্ষা কমিটি।
পরীক্ষা কমিটির সভাপতির নির্দেশক্রমে এগুলো স্থানীয়ভাবে স্পট কোটেশনের মাধ্যমে সংগ্রহ করার কথা থাকলেও আমতলী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা য্যোতিশ চন্দ্র শীল বিষয়টি কাউকে না জানিয়ে, তিনি পটুয়াখালীর আজাদ প্রিন্টার্স নামক একটি প্রতিষ্ঠানের কাছে এ উত্তরপত্র প্রস্তুত করার জন্য কার্যাদেশ দেন।
গত মঙ্গলবার বিকেলে ওই প্রতিষ্ঠানটি পিএসসি ও ইবতেদায়ী পরীক্ষার জন্য ৩০ হাজার ৯৭৮টি উত্তরপত্র ও ৩০ অতিরিক্ত উপত্তরপত্র আমতলী উপজেলা প্রাথমিত কর্মকর্তার কর্যালয়ে সরবরাহ করেন। সরবরাহকৃত উত্তরপত্র ও অতিরিক্ত উপত্তরপত্রগুলোর কাগজ অত্যন্ত নিম্নমানের হওয়ায় পরীক্ষা কমিটির সভাপতি আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান তা বাতিলের নির্দেশ প্রদান করেন।
মঙ্গলবার রাতে পরীক্ষা কমিটির এক জরুরি সভার মাধ্যমে নতুন করে কোটেশন সংগ্রহ করে বরিশালের মায়ের দোয়া অপসেট প্রেস নামে একটি প্রতিষ্ঠানকে ৩০ হাজার ৯৭৮টি উত্তরপত্র ও ৩০ হাজার অতিরিক্ত উপত্তরপত্র সরবরাহের জন্য কার্যাদেন দেন।
আমতলী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা য্যোতিশ চন্দ্র শীল অসুস্থতার কারণে ছুটিতে থাকায় তার সঙ্গে এ বিষয়ে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
তবে বর্তমানে আমতলী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মো. জাহিদ উদ্দিন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, পরীক্ষার উত্তরপত্র ও অতিরিক্ত উত্তরপত্রগুলোর কাগজের মান খুবই নিম্নমানের ছিল।
এ বিষয়ে আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান জানান, প্রাইমারি স্কুল সার্টিফিকেট (পিএসসি) ও ইবতেদায়ী সমাপনী পরীক্ষার জন্য উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা য্যোতিশ চন্দ্র শীল কাউকে কিছু না জানিয়ে নিজে পটুয়াখালীর একটি প্রতিষ্ঠানকে উত্তরপত্র ও অতিরিক্ত উপত্তরপত্র সরবরাহের জন্য কার্যাদেশ দেন।
তিনি আরো বলেন, ওই প্রতিষ্ঠানের সরবরাহকৃত উত্তরপত্র ও অতিরিক্ত উপত্তরপত্রে কাগজের মান খুবই নিম্নমানের। ছোট ছোট কোমলমতি শিশুদের ওই উত্তরপত্রে লিখতে অসুবিধা হবে। তাই নিম্নমানের কাগজের ওই উত্তরপত্র ও অতিরিক্ত উত্তরপত্রগুলো বাতিল করে নিয়ম অনুযায়ী অন্য একটি একটি প্রতিষ্ঠানকে উত্তরপত্র ও অতিরিক্ত উপত্তরপত্র সরবরাহের আদেশ দেয়া হয়েছে।
সাইফুল ইসলাম মিরাজ/এআরএ/পিআর