কক্সবাজারে কাউন্সিলরসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি মামলা


প্রকাশিত: ০৬:৫৭ পিএম, ১৮ নভেম্বর ২০১৫

কক্সবাজারে চাঁদাদাবি, হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনার আলোচিত দুষ্কৃতকারী দীপক দাশ ও পৌর কাউন্সিলর নোবেলসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি মামলা হয়েছে। কক্সবাজার সদর মডেল থানায় বুধবার সন্ধ্যায় মামলাটি রুজু হয়। অভিযোগ উঠেছে, মামলা রেকর্ডের পর থেকে ঘটনার মূলহোতা দীপক দাশের হুমকিতে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে ভূক্তভোগি পরিবার। এদিকে মামলার প্রধান আসামিসহ হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করা না হলে আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন বৌদ্ধধর্মীয় নেতারা।

এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ৫ নভেম্বর সকালে মহাজেরপাড়া এলাকার সন্তোষ কুমার বড়ুয়ার জমিতে স্থাপনা নির্মাণের কাজ করে কয়েকজন শ্রমিক। এ সময় শহরের আলোচিত দখলবাজ দীপক দাশের নেতৃত্বে ৫-৬ জনের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। সন্তোষ বড়ুয়ার পরিবার চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয় এবং সন্তোষ বডুয়ার পরিবারের লোকজনকে বেধড়ক মারধর করে।

এক পর্যায়ে বৌদ্ধ মন্দিরের বিহারস্থ জায়গায় গিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুঠপাট চালিয়ে লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়-ক্ষতি করে। এছাড়াও হামলার এক পর্যায়ে বাধা দিতে আসলে শিল্পী বড়ুয়া ও সুলেখা বড়ুয়াকে মারধরের পাশাপাশি শ্লীলতাহানিরও অভিযোগ করা হয় এজাহারে।

এ ঘটনা নিয়ে কোনো প্রকার বাড়াবাড়ি বা মামলা না করার জন্য শাসিয়ে যায় হামলাকারীরা। এ ঘটনায় গত ১৭ নভেম্বর শিল্পী বড়ুয়া বাদী হয়ে হামলার মূলহোতা শহরের হাসপাতাল সড়ক এলাকার মৃত সাগর দাশের ছেলে দীপক দাশকে (৩৬) প্রধান আসামি করে এজাহার দায়ের করে।

মামলার অন্যান্য এজাহারভুক্ত আসামিরা হলেন মোহাজেরপাড়ার মৃত জহির আহমদের ছেলে পৌরসভার ১০ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জাবেদ মো. কায়সার নোবেল (৩০), আবুল কাশেমের ছেলে মো. মোর্শেদ (৩২), মৃত আলী আকবরের ছেলে ইমাম হোসেন (২৮), আব্দুল জলিলের ছেলে মো. নাছির (২৭)। এছাড়াও এজাহারে অজ্ঞাত হিসেবে আরো ৭-৮ জনকে আসামি রাখা হয়েছে।

মামলার তদন্তকারূ কর্মকর্তা এসআই মানস বড়ুয়া জানান, আসামিরা প্রভাবশালী। তারপরও তাদের ছাড় দেয়া হবে না। দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের গ্রেফতার করা হবে।

বৌদ্ধধর্মীয় নেতা প্রজ্ঞানন্দ ভিক্ষু জানান, মামলা রুজু হলেও আমাদের উদ্বেগ ও আতঙ্ক কাটেনি। কারণ মামলা নেয়ার সঙ্গে সঙ্গেই মামলা তুলে নেয়ার হুমকি আসছে। পাশাপাশি পৌর এলাকার সরকারদলীয় এক নেতা মামলার বাদীসহ তাদের পরিবারের লোকজনদের ডেকে নানাভাবে চাপ সৃষ্টি করছে। আমাদের দাবি, প্রশাসন যদি নিরপেক্ষ হয় তাহলে চাঁদাবাজ ও হামলাকারীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হউক।

কক্সবাজার সদর মডেল থানার অফিসার ইনর্চাজ মো. আসলাম হোসেন জানান, বাদীপক্ষের এজাহার পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে মামলা রুজু হয়েছে এবং অপরাধীদের ধরার জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

এদিকে, শহরের বাসটার্মিনাল এলাকার ব্যবসায়ীী আবুল কালাম, মোহাম্মদ আলী, রহমত উল­াহ জানান, হিন্দু সম্প্রদায়ের ব্যানার ব্যবহার করে দীপক দাশ শহরের বিভিন্ন এলাকায় জমি দখল, চাঁদাবাজি, হামলা ও লুটপাট করে যাচ্ছেন। তার বেপরোয়া কর্মকাণ্ডের কারণে এলাকার লোকজন অতিষ্ট ছিল।

দীর্ঘদিন পরে হলেও তার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেয়ায় কক্সবাজার পুলিশকে ধন্যবাদ জানান তারা। দ্রুত সময়ের মধ্যে দীপক দাশসহ অন্যান্যদের গ্রেফতার পূর্বক আইনের আওতায় আনার দাবিও জানান নির্যাতিত স্থানীয় অসহায় লোকজন। তবে অভিযোগের বিষয়ে জানতে পৌর কাউন্সিলর জাবেদ মো. নোবেলের মুঠোফোনে রাতে (রাত ১০ টার দিকে) বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করা হলেও তা বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

অপরদিকে, প্রধান অভিযুক্ত দীপক দাশের মুঠোফোনে যোগাযোগ করার পর সংযোগ পাওয়া গেলেও রিসিভ না করায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

সায়ীদ আলমগীর/বিএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।