ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে মিয়ানমারে


প্রকাশিত: ০৮:১৮ এএম, ১৬ নভেম্বর ২০১৫

১৯৯০ সালে নির্বাচনে মিয়ানমারের নির্বাচনে  ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) ব্যাপক ব্যবধানে জয়ী হলেও তৎকালীন সেনা সমর্থিত সরকার তা প্রত্যাখ্যান করে সু চিকে দীর্ঘদিন গৃহবন্দী করে রাখে। পরে দুই দশক ধরে দেশটিতে সেনা শাসন চলে। এবারেও সেনাবাহিনীর সে রকম আশঙ্কাকে একেবারেই উড়িয়ে দিচ্ছেন না এনএলডির মুখপাত্র উইন হতেইন। তিনি বলেন, এই সময় যদিও আমরা খুবই আনন্দিত তারপরও চিন্তিত কেননা ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে। খবর দ্য গার্ডিয়ান।

এদিকে মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী ও ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) প্রধান অং সান সু চি জাতীয় নির্বাচনে বিপুল ব্যবধানে জয়লাভের পর সোমবার দেশটির পার্লামেন্ট পরিদর্শন করেছেন। গত ৮ নভেম্বরের নির্বাচনে সেনা সমর্থিত ক্ষমতাসীন ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট পার্টিকে (ইউএসডিপি) ব্যাপক ব্যবধানে হারানোর পর এই প্রথম পার্লামেন্টে গেলেন সু চি।

su-chi

সোমবার পার্লামেন্ট পরিদর্শনে সু চির সঙ্গে এনএলডির কয়েক ডজন সংসদ সদস্য ছিলেন। তবে পার্লামেন্ট পরিদর্শনের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি। নির্বাচনে সু চির দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলেও দেশটির সংবিধান অনুযায়ী তিনি প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন না। তব তিনি ক্ষমতায় প্রেসিডেন্টের ওপরে থাকবেন বলে নির্বাচনের আগে জানিয়েছেন।

নির্বাচনে অংশ নেয়া দেশটির ক্ষমতাসীন সেনা সমর্থিত সরকারকে নাটকীয়ভাবে রাজনৈতিক অঙ্গনে একেবারেই ধুলোর সঙ্গে মিশিয়ে দিয়েছে সু চির এনএলডি। তবে সেনাশাসিত সরকারের মেয়াদ জানুয়ারির আগে শেষ না হওয়া পর্যন্ত দেশটিতে গণতেন্ত্রর যাত্রা নিয়ে এখনো শঙ্কা কাটছে না।

জান্তা সরকারের আমলে মিয়ানমারের সংবিধানে সংশোধনী আনা হয়। ওই সংশোধনীতে বলা হয়, কোনো বিদেশিকে বিয়ে করলে বা সন্তান বিদেশি নাগরিক হলে তিনি দেশটির প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন না। সু চির স্বামী ও দুই সন্তান বিদেশি নাগরিক হওয়ায় প্রেসিডেন্ট হওয়ার পথে অন্যতম কাটা হয়ে দেখা দিয়েছে সংবিধানের ওই সংশোধনী।

su-chi

তবে নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে বিজয়ী সু চির দল দেশটির সংবিধান সংশোধনের দাবি তুলতে পারে। সেক্ষেত্রে সেনাসদস্যদের জন্য পার্লামেন্টে ২৫ শতাংশ আসন সংরক্ষিত থাকায় সংবিধান সংশোধনে বড় ধাক্কা খেতে পারে সু চির দল। পর্যবেক্ষকরা বলছেন,সেনা শাসনের ছায়া থেকে বের হয়ে গণতন্ত্রের ধারায় ফিরে আসতে পারবে কিনা তা সেবিষয়ে এখনো কিছু বলা যাচ্ছে না। তারা বলছেন, দেশটিতে সামনের দিনগুলো আরো কঠিন হতে পারে।

নির্বাচনের পর দেশটির প্রেসিডেন্ট, সেনাপ্রধান ও জাতীয় সংসদের স্পিকারের কাছে একটি চিঠি লেখেন সু চি। ওই চিঠিতে তিনি জাতীয় সংহতি নিয়ে আলোচনায় বসার আহ্বান জানান। এর আগে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে চূড়ান্ত ফলাফলের পর এ ধরনের আলোচনায় বসা যেতে পারে বলে জানানো হয়। চূড়ান্ত ফলাফলের পর আগামী বৃহস্পতিবার এ আলোচনায় বসতে যাচ্ছে তারা।

নির্বাচনে ব্যাপকভাবে বিজয়ী এনএলডির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরে দেশটির দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়ার সমালোচনা করেছেন সু চি। সাংবিধানিক শাসনের পেছনে এটি খুবই হাস্যকর বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

এসআইএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।