চাই সামাজিক ঐক্য ও সংহতি


প্রকাশিত: ০৪:১৬ এএম, ১৬ নভেম্বর ২০১৫

ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে দ্বিতীয় দফা জঙ্গি হামলার পর গোটা বিশ্বের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে নতুন করে ভাবনা দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। এর আগে চলতি বছরের জানুয়ারিতে ফ্রান্সের ব্যাঙ্গাত্মক ম্যাগাজিন শার্লি হেবদোর অফিসে হামলা করে ১২ জন সাংবাদিককে হত্যা করে উগ্রপন্থীরা। সর্বশেষ গত শুক্রবার প্যারিসের ছয়টি স্থানে ভয়াবহ হামলা হয়েছে। হামলায় প্রায় দেড় শতাধিক নিরীহ মানুষ নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে দুই শতাধিক।

এই হামলার পর গোটা বিশ্বই নড়েচড়ে বসছে। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এটাকে একটা যুদ্ধ হিসেবে অভিহিত করেছেন। বাংলাদেশসহ গোটা বিশ্বই ফ্রান্সের পাশে থাকার ঘোষণা দিয়েছে। হামলার পর ফ্রান্সে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। অন্যান্য দেশেও সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। বিশেষ স্থাপনা এবং ঐতিহাসিক স্থানগুলোর নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। বড় বড় শহরে জারি করা হয়েছে বিশেষ সতর্কতা।

বিশ্বব্যাপী আইএস এখন এক আতঙ্কের নাম। তালেবান, আলকায়েদা তো রয়েছেই। যুক্তরাষ্ট্রের টুইনটাওয়ারে হামলার পর নিরাপত্তা ব্যবস্থার সংজ্ঞাই যেন পাল্টে গেল। বিশ্বের যে কোনো জায়গায় যে কোনো মুহূর্তে যে কোনো ধরনের অঘটন ঘটতে পারে সেটি যেন বলে দিল এই নারকীয় হামলা। তা যতোই নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকুক না কেন। পরবর্তীতে মুম্বাই হামলা, পাকিস্তানের  পেশোয়ারে স্কুলে হামলা এরপর ফ্রান্সে দুইবার হামলা যেন একই ধারাবাহিকতায়।

উগ্রপন্থীদের হাত থেকে বাংলাদেশও মুক্ত নয়। একের পর এক হচ্ছে ব্লগার হত্যা। বিদেশি নাগরিক হত্যা। সর্বশেষ লেখক-প্রকাশকদের ওপরও হামলা করা হয়েছে। হুমকি দেয়াও অব্যাহত আছে। অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, লেখক, অধ্যাপক হাসান আজিজুল হকের মতো মানুষদেরও মোবাইল ফোনে ক্ষুদে বার্তায় হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছে।

দেখা যাচ্ছে তারা শুধু হুমকি দিয়েই ক্ষান্ত থাকছে না, একের পর এক হত্যাকাণ্ড চালিয়েই যাচ্ছে। এই অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়ার একটি উপায় অবশ্যই খুঁজে বের করতে হবে। সন্ত্রাসের বিশ্বায়নের এই সময়ে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে লড়তে হলে আমাদের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকেও সেই অনুযায়ী সক্ষমতা অর্জন করতে হবে। উগ্রবাদীরা যেভাবে যুদ্ধে নামছে সেই রণ কৌশল আমাদের বাহিনীগুলোরও জানা থাকতে হবে। বাড়াতে হবে গোয়েন্দা তৎপরতাও।বাংলাদেশের বিশেষ বিশেষ স্থাপনায় হামলা হতে পারে-এমন খবর গণমাধ্যমে এসেছে। কাজেই সব ধরনের সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে যাতে জানমালের কোনো রকম ক্ষয়ক্ষতি না হয়। পাশাপাশি এ ব্যাপারে রাজনৈতিক, সামাজিক ঐক্য এবং সংহতি গড়ে তুলতে হবে। সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি করা সম্ভব হলে উগ্রপন্থীদের প্রতিরোধ করা কঠিন হবে না। সেই লক্ষে সবাইকে একসঙ্গে এগিয়ে আসতে হবে।

এইচআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।