অবশেষে জয়ের দেখা পেলো জিম্বাবুয়ে


প্রকাশিত: ০২:৩০ পিএম, ১৫ নভেম্বর ২০১৫

শেষ ওভারের টান টান উত্তেজনা শেষে দারুণ জয় দিয়ে প্রাণ আপ টি-টোয়েন্টি সিরিজে সমতা ফিরিয়েছে জিম্বাবুয়ে। ম্যালকম ওয়ালারের দায়িত্বশীল ইনিংস এবং নেভিল মাদজিভার ঝড়ো ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশকে তিন উইকেটে হারায় সফরকারীরা। তবে জিম্বাবুয়েকে জয়ের ভিত করে দেন বোলাররা। দারুণ বোলিং করে ১৩৫ রানে বেধে ফেলে বাংলাদেশকে।

টান টান উত্তেজনার এই খেলার শেষ ওভারে জয়ের জন্য জিম্বাবুয়ের প্রয়োজন ছিল ১৮ রান। ব্যাটিংয়ে ছিলেন সেট ব্যাটসম্যান ম্যালকম ওয়ালার। তবে প্রথম বলেই সাব্বির রহমানের ক্যাচে পরিনত করেন বোলার নাসির হোসেন। দ্বিতীয় বলে ছক্কা মারেন মাদজিভা। তৃতীয় বলে ২ রান নিলে আবারো স্ট্রাইক পান মাদজিভা। চতুর্থ বলে থার্ডম্যান দিয়ে চার মারেন তিনি। পঞ্চম বলে লংঅফের উপর দিয়ে দারুণ এক ছয় মেরে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন মাদজিভা।

এর আগে বাংলাদেশের দেয়া ১৩৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই আল-আমিন হোসেনের বোলিং তোপে পরে জিম্বাবুয়ে। প্রায় আট ম্যাস পর দলে ফেরার পর থেকেই দারুণ ছন্দে রয়েছেন এই বোলার। প্রথম দুই বলে সাজঘরে ফেরান সিকান্দার রাজা এবং শেন উইলিউয়ামসকে। রাজা উইকেটরক্ষক মুশফিকের হাতে ক্যাচ দিয়ে এবং উইলিয়ামস বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরে যান।

ইনিংসের পঞ্চম ওভারে নিজের প্রথম ওভারে বল করতে এসে উইকেট তুলে নেন মুস্তাফিজুর রহমান। সাব্বির রহমানের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন রেগিস চাকাভা। তিন ওভার পর শর্ট মিড অফে ঠেলে দিয়ে দ্রুততার সঙ্গে রান নিতে চেয়েছিলেন ক্রেইগ আরভিন। কিন্তু বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফির কাছ থেকে বল পেয়ে স্ট্যাম্প ভেঙ্গে আরভিনকে ফেরান নাসির। আউট হবার আগে ১৭ বলে ১৫ রান করেন এই ব্যাটসম্যান।

এরপর সফরকারি দলের সবচেয়ে বিপদজনক ব্যাটসম্যান অধিনায়ক এল্টন চিগুম্বুরাকে ফেরান আফারাত সানি। মিড অফে মাহমুদউল্লাহর হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান জিম্বাবুইয়ান অধিনায়ক। ৩৯ রানে ৫ উইকেট হারাবার পর ম্যালকম ওয়ালারকে সঙ্গে নিয়ে জিম্বাবুয়ে দলের হাল ধরেন লুক জংউই। বাংলাদেশ দলের জন্য ক্রমেই হুমকি হয়ে উঠছিল ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে ৫৫ রান যোগ করেন এই দুই ব্যাটসম্যান।

তবে দ্বিতীয় স্পেলে বোলিং করতে এসে ইমরুল কায়েসের ক্যাচে পরিনত করেন বাংলাদেশের হয়ে বিপদজনক হয়ে ওঠা জংউইকে ফেরান আল-আমিন। ৩৮ বলে ১টি চারের সাহায্যে ৩৪ রান করেন এই জিম্বাবুইয়ান। মুস্তাফিজুরের করা ১৯তম ওভারে চতুর্থ বলে মুশফিকের হাতে ক্যাচ দিয়েছিলেন নেভিল মাদজিভা। তবে তৃতীয় আম্পায়ার বলটি নো-বল ডাকায় সে যাত্রা বেঁচে যান সফরকারি দলের এ ব্যাটসম্যান।

সোমবার মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রাণ আপ সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। ব্যাটিংয়ে নেমে বাংলাদেশ দলকে দারুণ সূচনা এনে দুই ওপেনার তামিম ইকবাল এবং ইমরুল কায়েস।

দলীয় ২৯ রানের মাথায় প্রথম উইকেট পতন ঘটে বাংলাদেশের। মাদজিভার বল লং অনের উপর দিয়ে খেলতে চেয়েছিলেন তামিম। ব্যাটে বলে ঠিক ভাবে সংযোগ না হওয়ায় লং অনে চিগুম্বুরার হাতে ধরা পরে সাজঘরে ফেরেন এই দেশ সেরা ওপেনার। আউট হবার আগে ১৫ বলে ১টি চার এবং ২টি ছক্কার সাহায্যে করেছেন ২১ রান।

তামিমের বিদায়ের পর বেশিক্ষণ উইকেটে থাকতে পারেননি আরেক ওপেনার ইমরুল। প্রায় চার বছর পর টি-টোয়ান্টি দলে ফেরা এই ওপেনারকে ফেরান তেনদাই চিসোরো। তবে এই আউটে দারুণ ভূমিকা ছিল শেন উইলিয়ামসের। ঝাপিয়ে পরে দারুণ এক ক্যাচ ধরে ইমরুলকে সাজঘরমুখি করেন তিনি।

এরপর বোলিংয়ে এসে নিজের প্রথম বলেই ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিমকে ফেরান ক্রেমার। সুইপ করতে গিয়ে ডিপ মিড উইকেটে উইলিয়ামসের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন মুশফিক। মুশফিকের বিদায়ের পর দলের হাল ধরেন সাব্বির রহামান এবং এনামুল হক। ৩৭ রানের জুটি গড়ে ক্রেমারের দ্বিতীয় শিকারে পরিনত হন সাব্বির। এলবিডব্লিউর ফাঁদে পরে সাজঘরে ফেরার আগে ১৮ বলে ১৭ রান করেন তিনি। ১৭তম ওভারে দলীয় ১১৩ রানে পানিয়াঙ্গারার বলে বোল্ড হয়ে ফিরে যান নাসির। এরপর দলের ৯ রান যোগ করতে বিদায় নেন মাহমুদউল্লাহ এবং মাশরাফি।

শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৩৫ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪৭ রান করেন এনামুল হক। ধীর গতিতে ব্যাটিং করে এই রান করতে ৫১ বল মোকাবেলা করেন তিনি। জিম্বাবুয়ের পক্ষে তিনাশে পানিয়াঙ্গারা ৩টি উইকেটে নেন ৩০ রানে। এছাড়া মাদজিভা এবং ক্রেমার ২টি করে উইকেট পান।

আরটি/এমআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।