বাজারে শচীনের আত্মজীবনী
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার ঠিক এক বছরের মাথায় এসে ভারতের ক্রিকেট কিংবদন্তী শচীন টেন্ডুলকার বুধবার সন্ধ্যায় তাঁর আত্মজীবনী প্রকাশ করছেন।
‘প্লেয়িং ইট মাই ওয়ে’ নামে এই বইটি ভারতে তোলপাড় ফেলে দিয়েছে, অনলাইনে ও বইয়ের দোকানে অগ্রিম অর্ডার আগের সব রেকর্ড ছাপিয়ে গেছে এই বইতে শচীন তাঁর ক্রিকেট জীবনের নানা অজানা ও বিস্ফোরক কথাবার্তা এতদিনে মন খুলে বলবেন, তৈরি হয়েছে এই তুমুল প্রত্যাশাও।
প্রকাশের আগে বইয়ের নির্দিষ্ট কিছু বিষয়বস্তু যাতে ফাঁস না হয়, তার জন্য যে পরিমাণ গোপনীয়তা অবলম্বন করা হয়েছে সেটাও ভারতে নজিরবিহীন।
শচীন টেন্ডুলকারের আত্মজীবনীর বিজ্ঞাপনী প্রোমোতেও তিনি নিজের মুখে আভাস দিয়েছেন, ক্রিকেট কেরিয়ারে কারা তাঁর পাশে ছিলেন, কারা ছিলেন না সেই রহস্য এবার উদ্ঘাটিত হবে।
মাঠের বাইরে সারা জীবন বিতর্ক এড়িয়ে চলেছেন, ম্যাচ-ফিক্সিং বা ড্রেসিংরুমের রাজনীতি নিয়ে কোনও দিন মুখ ফসকেও কোনও মন্তব্য করেননি, অথচ সারা ভারতে এমনই একটা ধারণা তৈরি হয়েছে যে তাঁর আত্মজীবনী সব অজানা বিতর্ক ফাঁস করে দেবে।
ক্রিকেট-গবেষক বোরিয়া মজুমদারকে সহযোগী লেখক হিসেবে সঙ্গে নিয়েই টেন্ডুলকার লিখেছেন প্রায় পাঁচশো পাতার এই বই। মাসতিনেক আগে থেকেই অনলাইনে শুরু হয়েছে অগ্রিম অর্ডার দেওয়ার সুযোগ, আর এতদিনে তা অ্যামাজন-ফ্লিপকার্টে সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে।
এর আগে ভারত ক্রিকেট লেজেন্ড সুনীল গাভাস্কারের আত্মজীবনী ‘সানি ডেজে’র প্রকাশও দেখেছে, তবে ‘প্লেয়িং ইট মাই ওয়ে’ যেভাবে প্রকাশিত হচ্ছে তা এককথায় তুলনাবিহীন, বলছিলেন গৌতম ভট্টাচার্য। তিনি জানাচ্ছেন, বইয়ের বিষয়বস্তু বা শচীন তাদের কী বলেছেন তা প্রকাশের ব্যাপারে এমন গোপনীয়তা রক্ষা বা স্ট্রিক্ট এমবার্গো ভারতে কোনওদিন কোনও বই নিয়ে হয়নি।
শচীনকে ঘিরে থাকা দক্ষ পেশাদারদের একটি দল ও সেই সঙ্গে তার প্রকাশনা সংস্থার টিম পুরো ব্যাপারটিকে এমন উচ্চতায় নিয়ে গেছেন, যে এই বইয়ের অ্যাডভান্স বুকিং হ্যারি পটারের স্রষ্টা জে কে রোলিং বা অ্যাপলের প্রয়াত কর্ণধার স্টিভ জোবসের রেকর্ডও ভেঙে দিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এদিন সন্ধ্যায় মুম্বইয়ে বইটির প্রকাশ-অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত ছিলেন গাভাস্কার, রাহুল দ্রাবিড়, সৌরভ গাঙ্গুলি, ভিভিএস লক্ষ্মণের মতো বহু তারকা। কিন্তু অতিথিদের মধ্যে দেখা যায়নি কপিলদেব, আজহারউদ্দিন বা এমন কী এম এস ধোনিকেও। আর তা থেকে এই সন্দেহই আরও জোরদার হয়েছে, এখন আর স্টেপ-আউট করতে টেন্ডুলকারের কোনও দ্বিধা নেই।