হাজতখানায় নারী আসামিকে কু-প্রস্তাব দেয়ায় ফেঁসে গেলেন ওসি
থানা হাজতখানা থেকে রাতে নারী আসামিকে বের করে কু-প্রস্তাব ও শ্লীলতাহানীর চেষ্টার অভিযোগে পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের হয়েছে পিরোজপুরে।
গতকাল সোমবার পিরোজপুর সদর থানা পুলিশের পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) মাসুমুর রহমান বিশ্বাসের বিরুদ্ধে এ মামলা হওয়ার পর আদালত মামলাটির বিচার বিভাগীয় তদন্তের আদেশ দিয়েছেন।
মামলার বাদী পিরোজপুর সদর থানার চড় লখাকাঠি গ্রামের আব্দুল ছালামের মেয়ে শিমু আক্তার (২৬)।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, সদর থানা পুলিশের ওসি তদন্ত মাসুমুর রহমার বিশ্বাস বাদী শিমু আক্তার ও তার মা মাহামুদা বেগমকে গত ১৭ অক্টোবর দুপুরে দুটি মামলার আসামি হিসেবে গ্রেফতার করে থানায় এনে নারী হাজত খানায় আটক রাখেন। রাতে শিমুকে হাজত খানা থেকে বের করে পুলিশ অফিসার মাসুমুর রহমান তাকে কু-প্রস্তাব দেন এবং তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে হাত দিয়ে শ্লীলতাহানীর চেষ্টা করেন। পরের দিন মা ও মেয়েকে আদালতে সোর্পদ করলে বিচারক তাদের জেল হাজতে পাঠান।
২৫ অক্টোবর জামিন পেয়ে শিমু আক্তার গত সোমবার আদালতে বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন।
অভিযোগের ব্যাপারে পুলিশ পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) মাসুমুর রহমানের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, শুনেছি আমার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। বর্তমানে সরকারি কাজে আমি পিরোজপুরের বাইরে আছি। আমার বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগকারী শিমু ও তার মায়ের বিরুদ্ধে সদর থানায় দুটি মামলা রয়েছে। ওই মামলা দুটির তদন্ত কর্মকর্তা আমি। তাদেরকে গ্রেফতার করে আদালতে সোর্পদ করাই হয়তো আমার অপরাধ ! তাদেরকে গ্রেফতার করা থেকে শুরু করে আদালতে সোর্পদ করা পর্যন্ত দুজন নারী পুলিশ নিয়োজিত ছিল। আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ মিথ্যা।
এ ঘটনায় সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এনায়েত হোসেন সাংবাদিকদের জানান, আসামিদের থানায় রাখা অবস্থায় এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। তাদেরকে আদালতে সোর্পদ করার আগ পর্যন্ত থানার ডিউটি অফিসার, সেন্ট্রি, দায়িত্বরত নারী পুলিশ কিংবা আমার কাছেও এ ধরনের কোনো ঘটনার কথা তারা জানায়নি। গ্রেফতার করায় ক্ষিপ্ত হয়ে এ মামলা শিমু করেছে বলে তিনি দাবি করেন।
মামলার বাদী শিমু আক্তার উপস্থিত সাংবাদিকদের জানান, ঘটনার পরের দিন ভোরে থানার ওসি ও অন্যান্যদের কাছে ঘটনার ব্যাপারে অভিযোগ করেন তিনি।
তিনি বলেন, জেল হাজত থেকে জামিন পেয়ে পুনরায় ওসির কাছে এ ঘটনার নালিশ করে কোনো প্রতিকার না পেয়ে বাধ্য হয়ে আদালতে মামলা করেছি।
এদিকে ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. গোলাম কিবরিয়া মামলা দায়েরের দিন সোমবার বিকেলে পিরোজপুরের অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে মামলাটির বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
হাসান মামুন/এমএএস/আরআইপি