প্রিমিয়ার হকি লিগ অক্টোবর-নভেম্বরে শুরুর পরিকল্পনা
ঘরোয়া হকির চাকা ফের সচল করতে উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ হকি ফেডারেশন। রোববার ফেডারেশনের সভাপতি বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল মাশিহুজ্জামান সেরনিয়াবাত ৫ সহসভাপতি এবং ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে আলোচনা করেছেন ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক হকি নিয়ে। সেখানে আগামী অক্টোবর-নভেম্বরের দিকে প্রিমিয়ার লিগ হকি শুরু করা যায় তা নিয়ে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন ফেডারেশনের সভাপতি।
৫ সহসভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদককে লিগ কমিটির সঙ্গে বসে খেলা শুরুর উদ্যোগ নিতে বলেছেন বিমানবাহিনী প্রধান। সভাপতির নির্দেশনা পাওয়ার পরই আগামী বৃহস্পতিবার নিজেদের মধ্যে আলোচনা করবেন ফেডারেশন কর্মকর্তারা। ‘যারা ঢাকায় আছেন এবং ফেডারেশনে আসতে পারবেন তাদের নিয়ে আমরা বসবো কিভাবে লিগটা শুরু করা যায় তা নিয়ে আলোচনা করতে। আমাদের অনেক কিছুই বিবেচনায় রাখতে হবে। বিশেষ করে করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে। সভাপতি আমাদের লিগ শুরুর বিষয়ে উদ্যোগ নিতে বলেছেন। যে কারণে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করবো’- বলছিলেন বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের সহসভাপতি আবদুর রশিদ শিকদার।
প্রিমিয়ার লিগ সর্বশেষ হয়েছে ২০১৮ সালে। মাঝে একটি বছর হারিয়ে গেছে হকির সূচি থেকে। গত বছর জমজমাট ও আলোচিত নির্বাচনের পর বিজয়ী হয়েছিলেন রশিদ শিকদার-মমিনুল হক সাঈদ পরিষদ। ঝিমিয়ে পড়া হকিতে হঠাৎ দিয়েছিল আলোর ঝলকানি।
কিন্তু মতিঝিল ক্লাব পাড়ায় ক্যাসিনো বিরোধী অভিযানের পর আত্মগোপনে চলে যান সাধারণ সম্পাদক মমিনুল হক সাঈদ। দীর্ঘদিন ফেডারেশনের কার্যক্রমে এবং নির্বাহী কমিটির চারটি সভায় অনুপস্থিত থাকায় গত রোববার সাধারণ সম্পাদককে অব্যহিত দেয়া হয়েছে।
নতুন কমিটি আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে বাংলাদেশের অবস্থান শক্ত করলেও ঘরোয়া হকি নিয়ে আশাব্যাঞ্জক কিছু করতে পারেনি। এর প্রথম ও প্রধান কারণ ছিল নির্বাচনকে ঘিরে তৈরি হওয়া ক্লাবগুলোর দ্বন্দ্ব। ক্যাসিনো কান্ডে সাধারণ সম্পাদকের আত্মগোপনের পর হকির আকাশে কালো মেঘ হয়ে আসে করোনাভাইরাস। যার কারণে, ঘরোয়া সব খেলা বন্ধ করে দেয় সরকার।
কোভিড-১৯ পরিস্থিতি একটু ভালো হওয়ার পর সরকার সীমিত আকারে খেলাধুলা ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালানোর অনুমতি দিয়েছে। যে কারণে, হকি ফেডারেশন অক্টোবর-নভেম্বরে লিগ শুরুর টার্গেট নিয়ে কাজ করছে। তবে কাজটা সহজ হবে না ফেডারেশনের জন্য।
এমনিতেই হকিতে নির্বাচনে পরাজিত জোট খেলা শুরু নিয়ে গড়িমসি করে। এবার তো আবার করোনার বড় ধাক্কা গেছে ক্লাবের পৃষ্ঠপোষকদের ওপর দিয়ে। এমন অবস্থায় ফেডারেশন ও লিগ কমিটি চাইলেই সব ক্লাব ‘খেলবো’ বলে হাত উঁচু করবে- তাও নিশ্চিত নয়।
মতিঝিল থানার ডিসিকে চেয়ারম্যান ও নির্বাহী কমিটির সদস্য খাজা তাহের লতিফ মুন্নাকে সম্পাদক করে লিগ কমিটি গঠন করেছে ফেডারেশন। দায়িত্ব নিয়ে লিগ কমিটির সম্পাদক প্রিমিয়ারের ক্লাবগুলোকে চিঠি দিয়েছিলেন কমিটিতে প্রতিনিধির নাম প্রেরণ করতে। কিন্তু চিঠি দেয়ার সপ্তাহ দুইয়ের মধ্যে দেশে করোনাভাইরাস হানা দেয়। তারপর থেকে তো সবকিছু বন্ধ।
‘গত মার্চে প্রিমিয়ার লিগের ক্লাবগুলোকে চিঠি দিয়েছিলাম। তার কয়েকদিন পর থেকেই শুরু হয় করোনাভাইরাস। সবকিছু বন্ধ হয়ে যায়। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবার চিঠি দেবো। আমাদের সভাপতি মহোদয় সহসভাপতিদের এবং ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদককে দায়িত্ব দিয়েছেন লিগ কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে লিগ শুরুর উদ্যোগ নিতে। তারা আমাকে ডাকলে অবশ্যই যাবো আলেচনার জন্য’- বলছিলেন খাজা তাহের লতিফ মুন্না।
ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, ‘লিগ কমিটি ক্লাবগুলোকে চিঠি দিয়েছিল প্রতিনিধির নাম চেয়ে। কিন্তু করোনার কারণে সবকিছু ওটল-পালট হয়ে যাওয়া প্রতিনিধির নাম পাঠাতে পারেনি ক্লাবগুলো। লিগ কমিটিও পূর্ণাঙ্গ হয়নি। যাদের পাওয়া যাবে তাদের নিয়ে আমরা বৃহস্পতিবার বসবো আলোচনার জন্য।’
আরআই/আইএইচএস/জেআইএম