৩৬ ঘণ্টা পর মরদেহ ফেরত দিল বিএসএফ
যশোরের বেনাপোল পোর্ট থানার পুটখালী সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত বাংলাদেশি রাখাল মনিরুলের (২৮) মরদেহ ৩৬ ঘণ্টা পর ফেরত দিয়েছে বিএসএফ। বুধবার রাত পৌনে ১০টার দিকে বেনাপোলের পুটখালী সীমান্তের বিপরীতে ভারতের গাইঘাটা পুলিশ আংরাইল ক্যাম্পের বিএসএফ সদস্যদের সহযোগিতায় নদী পথে তার মরদেহ ফেরত দেয়া হয়।
পুটখালি বিজিবি ক্যাম্পের সুবেদার ফরিদ উদ্দিন জানান, মনিরুলের পরিবারের কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়ার পর তারা বিএসএফের কাছে নিহতের ছবি পাঠানোর জন্য বলেন। পরবর্তীতে বিএসএফ গুলিবিদ্ধ যুবকের ছবি বিজিবির কাছে পাঠালে মনিরুলের পরিবারের সদস্যরা ছবি দেখে নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত হন। পরে বিজিবি সদস্যরা গুলি করে হত্যার প্রতিবাদ জানায় এবং মনিরুলের মরদেহ ফেরত চেয়ে বিএসএফের কাছে চিঠি দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বেনাপোল চেকপোস্টে মরদেহ ফেরত দেয়ার কথা জানালে রাত ১০টা পর্যন্ত অপেক্ষা করা হয়। কিন্তু বিএসএফ মরদেহ ফেরত দেয়নি।
বুধবার দুপুরে পুটখালি চরের মাঠ সীমান্তে দুই দেশের শুন্যরেখায় অনুষ্ঠিত পতাকা বৈঠকে বিএসএফ এই ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে। ওইদিন রাত পৌনে ১০টার দিকে পুলিশ ও বিএসএফ সদস্যরা বিজিবির কাছে মরদেহ হস্তান্তর করে। পরে কাগজ পত্রের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে মনিরুলের মরদেহ পরিবারের সদস্যদের কাছে তুলে দেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে পারিবারিক কবরস্থানে তার মরদেহ দাফন করা হয়।
এদিকে গুলি করে বাংলাদেশিকে হত্যার দায় স্বীকার করে দুঃখ প্রকাশ করে বিএসএফ। বুধবার দুপুরে বিএসএফ ও বিজিবির মধ্যে পতাকা বৈঠকে বিএসএফ এই ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে।
বৈঠক শেষে খুলনা ২৩ বিজিবির ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল আবদুর রহিম জাগো নিউজকে জানান, পতাকা বৈঠকে বিএসএফের কোম্পানি কমান্ডার বলেছেন, তাদের সদস্যদের আত্মরক্ষার্থে চালানো গুলিতে মনিরুল নিহত হতে পারেন। এজন্য তিনি অনুতপ্ত।
আবদুর রহিম আরও বলেন, এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে আমরা বলেছি, সীমান্তে গুলি করে মানুষ হত্যা করা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। এ ধরনের ঘটনা তারা যেন আর না ঘটায়।
গত মঙ্গলবার ভোরে মনিরুলসহ কয়েকজন গরু ব্যবসায়ী ও রাখাল গরু আনার জন্য পুটখালী সীমান্তের ইছামতী নদীর পারে অপেক্ষা করছিলেন। এসময় বিএসএফের সদস্যরা তাদের ধাওয়া করলে অন্যরা পালিয়ে যান। মনিরুল বিএসএফের হাতে আটক হন। এসময় বিএসএফের সদস্যরা তাকে পিটিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে মরদেহ ইছামতি নদীতে ফেলে দেয়। পরে খবর পেয়ে ভারতীয় পুলিশ নদী থেকে মরদেহ উদ্ধার করে।
মো. জামাল হোসেন/এমজেড/এমএস