কামরুলকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ
শিশু শেখ সামিউল আলম রাজনকে পিটিয়ে হত্যার প্রধান আসামি কামরুল ইসলামকে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টায় কড়া নিরাপত্তায় সিলেট মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হলে বিচারক আনোয়ারুল হক তাকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
দুপুর পৌনে ১২টায় পুলিশ তাকে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যায় বলে জানান, সিলেট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সিনিয়র সহকারী কমিশনার (এসি-প্রসিকিউশন) আব্দুল আহাদ চৌধুরী। আগামী রোববার মামলার ধার্য তারিখে সাক্ষ্য দেবেন এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক (ওসি) সুরঞ্জিত তালুকদার। ওই তারিখে কামরুলকেও আদালতে হাজির করা হবে বলেও জানান তিনি।
এর আগে বৃস্পতিবার দুপুর ২টা ৫৭ মিনিটে রাজন হত্যার প্রধান আসামি কামরুলকে ঢাকায় ফিরিয়ে আনা হয়। পরে ঢাকা থেকে ওইদিন রাত সাড়ে ৯টার দিকে তাকে সিলেট মহানগর পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ে আনা হয়। পরে তাকে রাতে এসএমপির কোতোয়ালী মডেল থানায় রাখা হয়। শুক্রবার সেখান থেকে তাকে আদালতে তোলা হয়।
সৌদি আরবে পুলিশের হেফাজতে থাকা কামরুলকে আনতে গত সোমবার সকালে রিয়াদে যান পুলিশ সদর দফতরের অতিরিক্ত সুপার মাহাবুবুল করিম, সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ এবং সহকারী পুলিশ কমিশনার এএফএফ নিজাম উদ্দিন।
গত ৮ জুলাই সিলেটের কুমারগাঁওয়ে চুরির অভিযোগ তুলে খুঁটিতে বেঁধে ১৩ বছরের শিশু রাজনকে পিটিয়ে হত্যার পর সৌদি আরবে পালিয়ে যান কামরুল। তিনি মধ্যপ্রাচ্যের ওই দেশটিতে থাকেন। রাজনকে নির্যাতনের ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ার পর সারাদেশে ক্ষোভের সঞ্চার হয়।
তখন প্রবাসীদের সহায়তায় কামরুলকে আটক করে সৌদি পুলিশের হাতে তুলে দেন বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা। এরপর কামরুলকে ফেরাতে ইন্টারপোলের মাধ্যমে উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশ পুলিশ, জারি করা হয় রেড নোটিস। ওইদিন শিশু রাজনকে পেটানোয় কামরুলই বেশি সক্রিয় ছিল বলে ওই ঘটনার ধারণ করা ভিডিওতে দেখা যায়।
রাজন হত্যাকাণ্ডের বিচার ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে সিলেটের আদালতে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এই মামলায় ৩৫ জনের জবানবন্দি গ্রহণ করেছেন আদালত।
ঘটনার দেড় মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করে গত ১৬ অগাস্ট ১৩ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিলেট মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক সুরঞ্জিত তালুকদার। এরপর ২২ সেপ্টেম্বর আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মধ্যে দিয়ে আলোচিত এই হত্যা মামলার বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়। ১ অক্টোবর থেকে শুরু হয় সাক্ষ্যগ্রহণ।
কামরুলকে নিয়ে এই মামলার আসামিদের মধ্যে ১১ জনকে গ্রেফতার করলো পুলিশ। এখনো পলাতক রয়েছেন কামরুলের ভাই সদর উপজেলার শেখপাড়ার বাসিন্দা শামীম আহমদ এবং তার বন্ধু সুনামগঞ্জের পাভেল আহমদ। কামরুলের আরও দুই ভাই মুহিত আলম ও আলী হায়দার এই মামলায় গ্রেফতার হয়ে কারাগারে রয়েছেন।
ছামির মাহমুদ/এআরএস/এমজেড/পিআর