‘হেলমেট ছাড়া ব্যাটিং : মারা গেলেও কিছু মনে করতাম না’
পেসারদের বল থেকে মাথা বাঁচানোর জন্য আবিস্কার হয়েছে হেলমেট। তবে এই হেলমেট আবিস্কারের কাহিনী খুব বেশি দিন আগের নয়। এখন তো আরও আধুনিক হয়েছে মাথার হেলমেট। ফলে বোলারের বল মাথায় আঘাত হানলেও ব্যাটসম্যানের ক্ষতি হয় হম।
তবুও অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যান ফিল হিউজসহ বেশ কয়েকজনের মৃত্যুবরণের ঘটনা ক্রিকেট ইতিহাসে ট্র্যাজেডির সৃষ্টি করে রেখেছে। অথচ, এক সময় ছিল যখন বিশ্বের বাঘা বাঘা পেসাররা বোলিং করলেও ব্যাটসম্যানরা দিব্যি খালি মাথায়, হেলমেট ছাড়াই ব্যাটিং করে যেতেন। ভয়-ডর তখন একেবারেই ছিল না বললে চলে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ গ্রেট স্যার ভিভ রিচার্ডসের আমলে সীমিত পরিসরে কিছু হেলমেট ব্যাটসম্যানরা ব্যবহার করতেন। তবে, সেগুলো এখনকার আধুনিক যুগের মত ছিল না। কিন্তু ভিভ রিচার্ডস বিখ্যাত ছিলে হেলমেট ব্যবহার না করার জন্যই।
ভিভ রিচার্ডসকে মোকাবেলা করতে হয়েছে ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম ভয়ঙ্কর সব পেস বোলারদের। যে সময়টায় বাউন্সারের কোনো সীমা ঠিক করা ছিল না। ইচ্ছেমত বাউন্সার ছুঁড়তে পারতো পেসাররা। ইয়ান বোথাম, ইমরান খান, রিচার্ড হ্যাডলি, ডেনিস লিলি, জেফ থমসন কিংবা গ্রেইগ ম্যাকডার্মটদের মুখোমুখি হতে হয়েছিল তাকে।
অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অলরাউন্ডার শেন ওয়াটসনের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে ৬৮ বছর বয়সী এই ওয়েস্ট ইন্ডিজ গ্রেট জানান, হেলমেটছাড়া ঝুঁকিপূর্ণ ব্যাটিংয়েই সবচেয়ে বেশি স্বাচ্ছন্দবোধ করতেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘ক্রিকেটের প্রতি আমার প্যাশন এতটাই ছিল যে, আমি অনেক সময় ভাবতাম, খেলতে খেলতে যদি মৃত্যুও বরণ করি, তাহলে আমি সেটাকেই ভালোবাসবো। আমি যেটা পছন্দ করতাম, আমি সেটাই করতাম। তাতে ভালো হলো কি মন্দ হলো, তা ভাবতাম না।’
ভিভা রিচার্ডস জানান, তিনি অন্য খেলার অ্যাথলেটদের দেখেও অনুপ্রেরণা নিতাম, যারা খেলতে খেলতেই জীবন দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘অন্য খেলার নারী-পুরুষ স্পোর্টসম্যানদের দেখে আমি অনুপ্রেরণা নিতাম। তাদেরকে আমি খুব ভয়ঙ্কর পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার জন্যও খুব সম্মান করতাম। আমি দেখলাম একজনকে, যে ফর্মুলা ওয়ানে খুব বিপজ্জনকভাবে ড্রাইভিং করছিল। খেলাধুলায় এর চেয়েও কি ভয়ঙ্কর কিছু আছে?’
এ সময় ওয়াটসন অনেকটা মজা করেই বললেন, ‘তাই বলে হেলমেট ছাড়া ১৫০ কিলোমিটার গতির বলও খেললেন?’ ভিভ রিচার্ডস এ সময় জানান, একবার তার এক ডেন্টিস্ট পরামর্শ দিয়েছিলেন, অন্তত মুখ বাঁচানোর জন্য হলেও মাউথ গার্ড ব্যবহার করার জন্য। কিন্তু তিনি সেটাও কখনো করেননি। কেন? কারণ, ব্যাটিং করার সময় তাহলে তিনি মুখে চুইয়গাম চিবাতে পারতেন না- এ জন্য।
রিচার্ডস বলেন, ‘আমার এক ডেন্টিস্ট একবার আমাকে একটা মাউথপিস দিয়েছিল ব্যাটিং করার সময় ব্যবহার করতে। কিন্তু আমার অভ্যাস ছিল, সব সময় চুইংগাম চিবানো। আপনি চিন্তা করুন, মাঠে ১১জন ক্রিকেটার, সঙ্গে দুইজন আম্পায়ার- তাদের মধ্যে আমি একটু ব্যতিক্রম। এ বিষয়টাই ছিল আমার জন্য ভিন্ন একটি বিষয়।’
আইএইচএস/