পলিথিন নিয়ন্ত্রণ আইন কঠোরভাবে প্রয়োগের দাবি


প্রকাশিত: ০৯:৫৭ এএম, ১৩ অক্টোবর ২০১৫

জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ রক্ষায় পলিথিন নিয়ন্ত্রণ আইন কঠোরভাবে প্রয়োগ করার দাবি জানিয়েছে পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো। মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা), ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট, আইনের পাঠশালা, পরিবেশ উন্নয়ন সোসাইটি, পল্লীমা গ্রীন, ইয়থ সান, বিসিএইসআরডি, ইউনাইটেড পিস ফাউন্ডেশন (ইউপিএফ) এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এক মানববন্ধনে এ দাবি জানানো হয়।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে পলিথিন ও পলিথিনজাত দ্রব্যসামগ্রীর ব্যাপক ও অপ্রয়োজনীয় ব্যবহারে জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশে মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে। তারা বলেন, পরিবেশ সংরক্ষণ আইনানুসারে যেকোনো প্রকার পলিথিন শপিং ব্যাগ বা পলিইথাইলিন বা প্রপাইলিনের তৈরি অন্য কোন সামগ্রী পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর হলে এরূপ সামগ্রীর উৎপাদন, আমদানি, বাজারজাতকরণ, বিক্রয়, বিক্রয়ের জন্য প্রদর্শন, মজুদ বিতরণ, বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে পরিবহন ও বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ রয়েছে।  

বক্তারা বলেন, পলিথিনে মোড়ানো গরম খাবার গ্রহণ করলে ক্যান্সার ও চর্মরোগের সংক্রমণ ঘটতে পারে। পলিথিনে মাছ ও মাংস প্যাকিং করা হলে অবায়বীয় ব্যাকটেরিয়ার সৃষ্টি হয়, যা মাছ ও মাংস দ্রুত পঁচনে সহায়তা করে।

পিভিসি এবং অন্যান্য প্লাস্টিক জাতীয় আবর্জনা ৭০০ সে. তাপমাত্রার নিচে পোড়ালে ডাইঅক্সিন জাতীয় বিষাক্ত গ্যাস সৃষ্টি হয় যা জন্মগত ত্রুটি, চর্মরোগ, ক্যান্সার ইত্যাদি মারাত্নক রোগের জন্য দায়ী; ওভেনপ্রফ প্লাস্টিক কনটেইনার খাবার গরম করলে রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে খাবারে ক্যাডমিয়াম, আর্সেনিক, সীসা মিশে যায় যার ফলে মরাত্মক রোগের সংক্রমণ ঘটতে পারে; পলিথিন থেকে সৃষ্ট ব্যাকটেরিয়া ত্বকের বিভিন্ন রোগের জন্ম দেয়, এমনকি ডায়রিয়া ও আমাশয় ছড়াতে পারে এ ব্যাকটেরিয়া থেকে বলে জানান বক্তারা।

তারা জানান, পলিথিন ব্যবহারের কারণে জনজীবন, জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের ক্ষতির পাশাপাশি পরিবেশবান্ধব পাটের কদর কমে যাচ্ছে, কমছে পাট চাষ। বন্ধ হচ্ছে পাট দিয়ে উৎপাদিত পণ্যের কারখানা। বেকার হচ্ছে কুটিরশিল্পের মালিক ও শ্রমিক-কর্মচারীরা। সারা বিশ্বে পাটের চাহিদা বাড়লেও আমাদের অবহেলা ও সচেনতার অভাবে সোনালি আঁশ পাট আজ বিলুপ্তির পথে। আমাদের এ শিল্পকে ফিরিয়ে আনতে সরকারকে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে হবে এবং জনগণকে সচেতন হতে হবে।

এসময় সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে কিছু দাবি জানানো হয় দাবিগুলো হলো :

পলিথিন নিষিদ্ধকরণ আইন বাস্তবায়ন করা, পলিথিন শপিং ব্যাগ ব্যবহার বন্ধ করা এবং পাটের ব্যাগ ব্যবহার করা। বিদ্যমান আইন কঠোরভাবে প্রয়োগ করা এবং অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করা। পলিথিনের বিকল্প হিসেবে পাটের ব্যাগ, কাপড়ের ব্যাগ, কাগজের ব্যাগ ও ঠোংগা  ইত্যাদি সহজলভ্য করা এবং এগুলো ব্যবহারে জনগণকে উদ্ভুদ্ধ করা। পলিথিন শপিং ব্যাগ তৈরীর কাঁচামাল আমদানি বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা।

পরিবেশ অধিদপ্তর, আইন শৃঙ্খলা বাহিনী, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, এফবিসিসিআই এর সমন্বয় সাধন করা। সিটি কর্পোরেশনের মাধ্যমে মার্কেটসমূহে পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার করা হচ্ছে কিনা তা নিয়মিত মনিটরিং করা। পবার নির্বাহী সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো. আবদুস সোবহানের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন আইনের পাঠশালার সভাপতি সুব্রত দাস খোকন, পল্লীমা গ্রীনের সদস্য সচিব আনিসুল হোসেন তারিক, পবার সমন্বয়কারী আতিক মোরশেদ, বিসিএইচআরডির নির্বাহী পরিচালক মো. মাহবুল হক, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের প্রোগ্রাম অফিসার মো. আতিকুর রহমান, ইয়থ সানের সভাপতি মাকিবুল হাসান বাপ্পী, পবার সহ-সম্পাদক মো. সেলিম, পরিবেশ উন্নয়ন সোসাইটির সমন্বয়কারী মোকাম্মেল হক মেনন প্রমুখ।

এএস/এসএইচএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।